দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেছেন, সমাজের সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সুস্থতার জন্য সামাজিক আন্দোলনকে আরও জোরদার করে ডেঙ্গুকে মোকাবেলা করতে হবে। তিনি বলেন, সবাই মিলে নিজেদের ঘরবাড়ি ও আশেপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমে এডিস মশার বংশবিস্তার রোধ করতে হবে।
আজ বুধবার (১৮ আগস্ট) বুধবার সকালে গুলশানের নগর ভবনে “সুস্থ্যতার জন্য সামাজিক আন্দোলন” বিষয়ক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় ডিএনসিসি মেয়র একথা বলেন।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, নিজেদের সুস্থতার জন্যই সবাই মিলে “দশটায় ১০ মিনিট প্রতি শনিবার, নিজ নিজ বাসাবাড়ি করি পরিষ্কার” স্লোগানটিকে বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, নিজেদের বাসাবাড়িতে ফুলের টব, অব্যবহৃত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের খোলা প্যাকেট, বিভিন্ন ধরনের খোলা পাত্র, ছাদ কিংবা অন্য কোথাও যাতে তিন দিনের বেশি পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, “সবার ঢাকা” মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করেও যে কোন নাগরিক অতি সহজেই সরাসরি তার মতামত কিংবা অভিযোগ তুলে ধরতে পারছেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যেই উক্ত সমস্যার সমাধান পাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালগুলোতে কোন জায়গা নাই, মাস্ক ছাড়া কোন গতি নাই। তাই আমাদের প্রত্যেককেই সঠিকভাবে মাস্ক পরিধানসহ সরকারী নির্দেশনা এবং স্বাস্থ্যবিধিসমূহ যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।
মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করতে শিক্ষকমন্ডলীর প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও কাউন্সিলরবৃন্দকে সাথে নিয়ে তাঁর নেতৃত্বে ডিএনসিসির ১০টি অঞ্চলের ৫৪টি ওয়ার্ডেই জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ডিএনসিসি এলাকায় এডিস মশা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধকল্পে মশক নিধনে কীটতত্ববিদ দ্বারা পরীক্ষিত ও কার্যকর লার্ভিসাইড ছিটানো অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, এডিস মশা ও ডেঙ্গু নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয় কাউন্সিলরসহ ডিএনসিসির সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে মাঠে সক্রিয় থাকার জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ডিএনসিসির সুযোগ্য মেয়রের নেতৃত্বে এডিস মশা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ডিএনসিসি এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কম রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ডিএনসিসি মেয়রের নেতৃত্বে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে নগরীতে ডেঙ্গু মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী নির্মাণাধীন বাসাবাড়িতে এডিস মশার প্রজনন বেশি হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাসাবাড়ির ছাদে, বেজমেন্টে অথবা ফুলের টবে জমানো স্বচ্ছ পানি নিয়মিত পরিস্কার করতে বা ফেলে দিতে না পারলে সেখানে লার্ভিসাইড অথবা কেরোসিন তেল ঢেলে বা স্প্রে করে নগরবাসীকে এডিস মশার লার্ভা নষ্ট করার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন,বিশ্বের অনেক দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব রয়েছে এবং প্রতিবছর প্রায় একশো থেকে চার শো মিলিয়ন মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়। মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ফিলিফাইন, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশের ডেঙ্গুর পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর মশার প্রভাব বেশি একথা সত্য। কিন্তু আমরা কেউ বসে নেই, সবাই সর্বাত্মকভাবে যার যার অবস্থান থেকে নিরলসভাবে কাজ করছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সেখানে প্রচুর এডিসের লার্ভা প্রজনন হচ্ছে। এছাড়া, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও এডিস মশার প্রজনন হচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট সকলকে নিজ উদ্যোগে এসব স্থাপনায় মশক নিধন অভিযান চালানোর নির্দেশনা দেন। মশা মারতে গিয়ে এমন কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না যার জন্য পরিবেশ ও মানুষের ক্ষতি হয়। সেদিকেও নজর রাখতে হবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, ধর্মীয় প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সোসাইটির নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান এবং ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা উপস্থিত ছিলেন।
#