দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
আফগানিস্তানের একটি প্রাদেশিক রাজধানী তালেবানের দখলে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। দু’টি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, বিদ্রোহীরা শুক্রবার বিকেলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় নিমরোজ প্রদেশের রাজধানী যারানজ দখল করে নেয়।
আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহারের পর থেকে তালেবান দেশটিতে বেশ দ্রুতগতিতে বিভিন্ন এলাকা দখল করতে শুরু করে। এর মধ্যেই তারা প্রথম কোনো প্রাদেশিক রাজধানী দখল করল।
এর আগে তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তানের বিস্তীর্ন গ্রামীণ এলাকা দখল করে নিয়েছে। এখন তারা বড় বড় শহর টার্গেট করছে। আরো দু’টি প্রাদেশিক রাজধানী তালেবানের হামলার মুখে খুবই নাজুক অবস্থায় আছে। এর একটি পশ্চিমের হেরাত ও অপরটি দক্ষিণের লস্কর গাহ।
যারানজ হচ্ছে ইরান সীমান্তের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক বাণিজ্য কেন্দ্র। ওই শহরের চারিদিকের এলাকা দখল করে নেয়ার পর তালেবান যারানজ দখলের জন্য অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল।
এর আগে শুক্রবার কাবুলে আফগান সরকারের মিডিয়া ও তথ্য কেন্দ্রের প্রধান বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। দাওয়া খান মেনাপালের আততায়ীর হাতে নিহত হওয়ার খবর আফগান পুলিশ স্বীকার করেছে। তিনি প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির মুখপাত্র হিসেবেও কাজ করেছেন।
তালেবান বলেছে, তারা এই হামলা চালিয়েছে। সাম্প্রতিক কয়েক মাসে গুরুত্বপূর্ণ যেসব ব্যক্তি আততায়ীর হাতে প্রাণ হারিয়েছেন, তিনি তাদের একজন। তিনি নিয়মিত আফগান সরকারের অবস্থান জানিয়ে টুইট করতেন ও টুইটারে তার অনুসারী ছিল এক লাখ ৪২ হাজার।
মাত্র দু’দিন আগে বুধবার তালেবান কাবুলে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল, যেটি ছিল প্রায় এক বছরের মধ্যে কাবুলে তালেবানের চালানো বড়ধরনের আক্রমণ। তালেবান তখন সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর আরো হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছিল।
তালেবানের মুখপাত্র যাবিহউল্লাহ মুজাহিদ এক টুইট বার্তায় বলেছেন, তারা দাওয়া খান মেনাপালকে হত্যা করেছে। মেনাপাল ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সরকারি পদে যোগ দেয়ার আগে তিনি রেডিও আযাদিতে সাংবাদিক হিসেবেও কাজ করতেন।
এর আগে আফগান সামরিক সূত্র থেকে বলা হয়েছিল, দক্ষিণে লস্কর গাহ শহরে চলমান লড়াইয়ে তালেবানের একজন ঊর্ধ্বতন কমান্ডার মলাওউয়ি মুবারক ও বেশ কিছু বিদ্রোহীকে হত্যা করা হয়েছে।
তালেবান এই দাবি অস্বীকার করে বলেছে, ওই কমান্ডার জীবিত আছেন। তালেবান লস্কর গাহ, হেরাত ও কান্দাহার দখলের জন্য তুমুল লড়াই চালাচ্ছে। সরকারি বাহিনীও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে তাদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে লড়াই চালাচ্ছে।
আফগানিস্তানে লড়াইয়ের তীব্রতা ও সহিংসতা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনার জন্য জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবার একটি বৈঠক ডেকেছে।
# সূত্র : বিবিসি