দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ভারতের আসাম ও মিজোরাম সীমান্তে ছয় পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১২ জন পুলিশকর্মী এবং সাধারণ মানুষ। তবে নাম গোপন রাখার শর্তে শিলচর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৩৬ জন ভর্তি আছেন। এয়ারগানের এবং পাথর ছোড়ার জেরে তারা আহত হয়েছেন। তবে কারো অবস্থা গুরুতর নয়।
আজ সোমবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় টুইটারে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, ‘আমি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে সংবিধান স্বীকৃত আসাম-মিজোরাম সীমান্ত রক্ষার সময় আসাম পুলিশের ছ’জন বীর জওয়ান নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীরভাবে সমবেদনা জানাচ্ছি।’
দিনকয়েক ধরেই আসাম-মিজোরাম সীমান্তের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে আছে। এর মধ্যে কাছার জেলার লায়লাপুরের কাছে সীমান্ত পুরোদস্তুর যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে ওঠে। ছোড়া হতে থাকে পাথর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়া হয়। এয়ারগান থেকে ছোড়া হয় গুলি।
স্থানীয়দের দাবি, সকালে নিজেদের রাজ্যের ভূখণ্ডের মধ্যে একটি ছাউনি তৈরি করছিল আসাম পুলিশ। সেই ঘটনাকে ঘিরে স্থানীয় সময় ১১টা ৩০ মিনিটে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। জড়ো হয়ে যান হাজার-হাজার মানুষ। আসাম এবং মিজোরাম পুলিশের মধ্যে আলোচনার সময় মিজোরামের একদল লোক পাথর ছুড়তে শুরু করে।
পালটা পাথর ছোড়েন আসামের একদল ব্যক্তিও। রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান প্রশাসন এবং পুলিশের শীর্ষকর্তারা। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসা তো দূর অস্ত, একেবারে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। অভিযোগ, স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিট নাগাদ মিজোরামের দিক থেকে টিয়ার গ্যাসর শেল এবং এয়ারগানের গুলি ছোড়া হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, দু’পক্ষেরই একাধিক গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। কমপক্ষে ২৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা এবং ২০ জন সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন।
এইমধ্যে মিজোরামের তরফে বিবৃতি জারি করে আসাম পুলিশের বিরুদ্ধে দায় চাপানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালছামলিয়ানার দাবি, স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টা ৩০ মিনিট নাগাদ মিজোরামের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েছিলেন আসাম পুলিশের ২০০ জন কর্মকর্তা। জোর করে সিআরপিএফের পোস্ট টপকে যান।
জাতীয় সড়ক দিয়ে যাওয়া গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। ওই ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যেতে শুরু করেন কোলাসিব জেলার ভাইরেংতে টাউনের বাসিন্দারা। তাঁদের উপর লাঠি চালায় আসাম পুলিশ। ছোড়া হয় টিয়ার গ্যাস। তার জেরে আহত হন অনেক সাধারণ মানুষ।
বিবৃতিতে আরো অভিযোগ করা হয়েছে, মিজোরাম পুলিশকে লক্ষ্য করে মুহুর্মূহূ টিয়ার গ্যাসের শেল এবং গ্রেনেড ছোড়া হয়। বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট নাগাদ গুলিও চালায় আসাম পুলিশ। পালটা মিজোরাম পুলিশও গুলি চালায় বলে দাবি করা হয়েছে। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস