সর্বশেষঃ
র‌্যাক স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল ফুটবলে ৪-০ গোলে বিজয়ী বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন ‘শেখ বশিরের’ বিরুদ্ধে হত্যা মামলা: বাদী নিশ্চিত নয়, উপদেষ্টা সেখ বশির আসামি বিমানবন্দরে অতিথির সম্মান পাবেন প্রবাসীরা: ড. মুহাম্মদ ইউনূস গুলশানে রাস্তা ও ফুটপাতের ২৫০টি অবৈধ দোকান উচ্ছেদ ফরিদপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে ৫ জন আটক বন্যায় ক্ষতবিক্ষত রায়পুর-লক্ষ্মীপুর-ঢাকা মহাসড়ক , জনভোগান্তি ১২০ টাকায় পুলিশের টিআরসি নিয়োগ: পুলিশ সুপার ফরিদপুর পদ্মাসেতু থেকে শরীয়তপুর  সড়কের কাজ দ্রুত সম্পন্নের দাবীতে মানববন্ধন ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে ১,৩১,৩৭৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে ‘সরকারি প্রকল্পে অপচয় রোধে সচেষ্ট থাকতে হবে’
শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৭ পূর্বাহ্ন

‘করোনা ‘টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় মৃত্যুর সম্ভাবনা নেই , ফলে টিকা নেয়াই উত্তম’

ডাঃ মোঃ তৌহিদ হোসাইন:

প্রত্যেক টিকারই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে। যার কারণে মানুষের অনীহা। কিন্তু টিকা না দিলে যে করোনায় মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে তার চাইতে কি টিকা নেয়া উত্তম নয়। অথচ টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে মৃত্যুর সম্ভাবনাও নেই।

টিকার ওপর ভুয়া খবর প্রচার করা যে এটা অমুক দেশের টিকা, তমুক কোম্পানীর টিকা, এটার মধ্যে অন্য কিছু আছে বা পানি ছাড়া কিছুই নাই ইত্যাদি। একটা কথা মনে রাখতে টিকা উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারে আসার অনুমতি সবই সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার করে থাকে। কোন খারাপ সরকারও চাইবে না মানুষের জীবন-মরণ নিয়ে তার দেশের ভাবমর্যাদা নষ্ট হোক।

আধুনিক বিশ্বে টিকা গ্রহণের ব্যাপারে মানুষ কতটা অসচেতন তা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার একটি প্রতিবেদনে তা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এই প্রবণতা সম্পর্কে এতটাই উদ্বিগ্ন যে তারা ‘টিকা অসচেতনাকে’ ২০১৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্যের জন্য ১০টি চরম হুমকির মধ্যে অন্যতম একটি হিসেবে ঘোষণা করেছে।

প্রশ্ন হতে পারে টিকা বা ভ্যাকসিন ব্যবহারে কিছু মানুষের অনীহা কেন? প্রকৃতপক্ষে টিকা অসচেতনতায় ভরা টিকার ইতিহাস। টিকা যাত্রার শুরুটা মোটেই সুখকর ছিল না। ছিল না টিকা যুদ্ধে নামার প্রয়োজনীয় অর্থবল, জনবল ও সমাজসচেতন বাহুবল।
রোগ প্রতিরোধের নতুন এ ধারণা নিয়ে প্রথম থেকেই মানুষ ছিল যথেষ্ট সন্দেহপ্রবণ। সপ্তদশ শতাব্দীতে এমনকি সারা ব্রিটেনে টিকাবিরোধী সংগঠনও গড়ে উঠেছিল। তারা টিকা নিয়ে মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে না ফেলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে রোগীকে আইসোলেশনে নিয়ে চিকিৎসা করার পরামর্শ দিত।

ব্রিটিশ টিকাবিরোধী ব্যক্তিত্ব উইলিয়াম টেব রাজনৈতিক দল গঠনের মতো দেশ থেকে দেশে ঘুরে বেড়াতেন এবং টিকাবিরোধী সংগঠন গড়ে তুলতেন। সে সময়কার যুক্তরাষ্ট্রও এ অবস্থা থেকে রেহাই পায়নি। টিকাবিরোধী ব্যক্তিত্বদের আরেকজন হলেন অ্যান্ড্রু ওয়েকফিল্ড।

তিনি ১৯৯৮ সালে এক ভুল রিপোর্ট প্রকাশ করে দাবি করেন যে এমএমআর (মাম্পস, মিসিলস ও রোবেলা) ভ্যাকসিনের সাথে অটিজম ও পেটের অসুখের সম্পর্ক রয়েছে। ফলে শুধু ব্রিটেনেই ২০০৪ সালে এক লাখ শিশু কম টিকা নেয়। সে দেশে হামের প্রকোপ বেড়ে যায়। পরে তার ওই গবেষণা ভুয়া প্রমাণিত হয় এবং শাস্তিস্বরূপ তার মেডিক্যাল ডিগ্রিটি বাতিল করা হয়।

গত বছর নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে অতি-কট্টর ইহুদি মহল্লায় কিছু উগ্রবাদি লিফলেট বিতরণ করে প্রচার করে ছিল যে টিকার সাথে অটিজমের সম্পর্ক রয়েছে।

এর পর যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক দশকের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হামের প্রাদুর্ভাবের জন্য ঐ গোষ্ঠীকেই দায়ী করা হয়েছিল।
গত বছর ইংল্যান্ডের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ডাক্তার হুঁশিয়ার করেছিলেন এই বলে যে সাধারণ মানুষ যেন সোশাল মিডিয়ায় টিকার ওপর ভুয়া খবর পড়ে প্রতারিত না হন।

মার্কিন গবেষকরা দেখিয়েছেন রাশিয়ায় তৈরি কম্পিউটার প্রোগ্রাম ব্যবহার করে অনলাইনে টিকার ওপর মিথ্যে তথ্য প্রচার করা হচ্ছে যা সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।

সারা বিশ্বে ৮৫% শিশুকে টিকা দেয়ার হার গত কয়েক বছর ধরে অপরিবর্তিতই রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, টিকার কারণে প্রতি বছর বিশ্বে ২০ থেকে ৩০ লক্ষ শিশুর প্রাণরক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে।

যেসব দেশে যুদ্ধবিগ্রহ চলেছে বা যেখানে স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা খুবই দুর্বল সেখানে টিকা দেয়ার চ্যালেঞ্জ সবচেয়ে বেশি। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, অ্যাঙ্গোলা এবং গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, উন্নত দেশগুলিতেও এই বিষয়ে একটা ঢিলেমি এসেছে। কারণ এসব রোগ যে কত ভয়াবহ হতে পারে সেটা তারা ভুলেই গেছে।

পৃথিবীতে শেষবার স্মল পক্স বা গুটি বসন্তের বড় মাপের মহামারি হয়েছিল ১৯৭৪ সালে ভারতে। উত্তর প্রদেশ এবং বিহারে এক লাখ দশ হাজার মানুষ গুটি বসন্তে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিল ২০ হাজারের মত মানুষ।

১৯৭৪ সালে ভারতের সেই মহামারী ঠেকাতে এক কোটি গুটি বসন্তের টিকা দেওয়া হয়েছিল। ছয় লক্ষ গ্রামের ১২ কোটি বাড়িতে গিয়ে গিয়ে গুটি বসন্তের রোগীর সন্ধান করা হয়েছিল। এ কাজে লাগানো হয়েছিল ১৩৫,০০০ স্বাস্থ্যকর্মী।

এ প্রসংগে বলে রাখা ভাল রোগ শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা আগে নাকি টিকা আগে। উত্তর হবে যখন রোগ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে তখন অবশ্যই রোগ শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা আগে, কিন্তু পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচীও চালিয়ে যেতে হবে।

১৯৭৪ সালের সেই মহামারি দেখা দেওয়ার আগে থেকেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পৃথিবী থেকে গুটি বসন্ত নির্মূলের কর্মসূচি নিয়েছিল। ৫০ এবং ৬০-এর দশক জুড়ে ভারতে এই টীকার ব্যাপক ব্যবহার হয়েছিল। তারপরও ১৯৭৪ সালের মহামারী ঠেকাতে পারেনাই।

তখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা টিকাগ্রহণের ক্ষেত্রে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর বড় ধরণের অসচেতনতাকেই মূল কারণ হিসেবে বর্ণনা করেছিল। এছাড়াও কারণ ছিল ভারতের বিশাল জনসংখ্যা এবং আর্ত-সামাজিক বাস্তবতা, দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, ও পুষ্টিহীনতা।

টিকা দেওয়া নিয়ে বিস্তর প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল ভারতের এক শ্রেনীর জনতা।
অনেক সময় কাঁটাতার দিয়ে ছয় সপ্তাহের জন্য পুরো গ্রাম ঘিরে ফেলতে হত। তারপর একেক করে সবাইকে টীকা দেওয়া হতো।

এভাবেই শক্ত কার্যক্রম হাতে নেওয়ার কারণে ১৯৭৫ এর মে মাসের ২৩ ও ২৪ তারিখে ভারতের সর্বশেষ দেখা গুটি বসন্তের পর আর দেখা দেয় নাই।

১৯৮০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য ঘোষণা করে পৃথিবী থেকে গুটি বসন্ত নির্মূল হয়েছে। বিশ্বে সেই প্রথম কোনো রোগ এভাবে টিকার মাধ্যমেই নির্মূল করা সম্ভব হয়েছিল।

মহামারী রোগ ও টিকা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণার অভাব টিকা অসচেতনতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মহামারী রোগ এমন একটি রোগ যা নির্দিষ্ট জনপদের বিশাল অংশের জনগোষ্ঠীকে একবার আক্রান্ত করা শুরু করলে সাধারণত (৭০-৮০)% লোক অসুস্থ না করে ক্ষ্যান্ত হবে না।
মহামারীর চরিত্রই হলো, আমরা যদি টিকা নাও নেই সমাজে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত প্রাকৃতিক নিয়মেই করোনার মতো মহামারী এ রোগটির একটার পর একটা ঢেউ এসে মানবসমাজকে ধ্বংস করতে থাকবে। তত দিনে অনেক মূল্যবান জীবনসম্পদ দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে।

‘হার্ড ইমিউনিটি’ দুইভাবে তৈরি হয়। তার একটি হলো ন্যাচারাল ইনফেকশন এবং অপরটি হলো কৃত্রিমভাবে ব্যাপক টিকা দিয়ে সমাজকে হার্ড ইমিউনিটির আওতায় নিয়ে আসা। তাই টিকার মাধ্যমেই কেবল সমাজকে জীবন-সম্পদের অপূরণীয় ক্ষতি থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়।

টিকা হলো একটি নির্দিষ্ট রোগজীবাণুর এমন একটি দুর্বল জীবিত সামান্য অংশ বা মৃত পুরো অংশ অথবা ভাইরাসের জেনেটিক কোড, যা মানব শরীরে প্রবেশ করিয়ে তার ইমিউন সিস্টেমকে এই ভাবে শিখিয়ে রাখা হয় যেন ইমিউন সিসটেম সেই রোগজীবাণুকে অ্যান্টিজেন বা শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে এবং আগাম তার বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি ও মেমরি সেল তৈরি করে রাখে যেন ভবিষ্যতে একই প্রকৃত জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলে তৈরিকৃত এই অ্যান্টিবডি ও মেমরি সেল ব্যবহার করে রোগজীবাণুটিকে মেরে ফেলতে পারে। অথচ এক শ্রেণীর মানুষের ধারণা টিকায় কোনো লাভ হবে না।

টিকার কার্যকারিতা নিয়েও অনেক সময় প্রশ্ন সৃষ্টি হয়। এ কথা ঠিক যে, কোনো টিকাই রোগাক্রান্ত না হওয়ার শতভাগ নিশ্চয়তা দেয় না। আর টিকা নিলেই ১০০% নিরাপত্তা আর কোনো সময় করোনা হবে না এমন ধারণা ভুল। টিকার কার্যকারিতা বলতে কী বুঝায় এ সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার।

যেমন, কোনো টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান যখন বলে যে তাদের টিকা ৯০% কার্যকর, তার মানে কী? তার মানে হলো যে তারা যে নির্দিষ্ট টিকাটি বাজারে ছড়েছে সেটি ১০০ জনকে প্রয়োগ করলে ৯০ জনের করোনা হবে না বলে তাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে প্রমাণ পেয়েছে। বাকি ১০ জন করোনাক্রান্ত হবে না এই নিশ্চয়তা নেই, কিন্তু এই নিশ্চয়তা অবশ্যই আছে যে, যদিওবা করোনা দ্বারা আক্রান্ত হয় তবে তা মারাত্মক হবে না।

আমাদের মনে রাখতে হবে, টিকা কখনো রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে পারে না, কিন্তু সংক্রমিত হলে আগেই টিকা গ্রহীতার শরীরে তৈরিকৃত অ্যান্টিবডি তাকে সুরক্ষা দেয়।

       ভ্যাকসিন বা টিকার কার্যকারিতা নির্ভর করে তিনটি ফ্যাক্টরের ওপর :
১. রোগজীবাণু ফ্যাক্টর, ২. রোগী বা হোস্ট ফ্যাক্টর, ৩. ভ্যাকসিন ফ্যাক্টর।

১) রোগ জীবানু ফ্যাক্টর
(ক)সব সংক্রামক রোগের উপর সব ভ্যাকসিন সমানভাবে কার্যকর হয় না। তার কারণ একেক সংক্রামক রোগের সংক্রমণ ও রোগগ্রস্ত করার ক্ষমতা, মিউটেশন পারংগমতা ইত্যাদি একেক রকম। একেক জীবানু শরীরের একেক সিস্টেমকে আক্রমণ করে। যেমন, করোনা ভাইরাসের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হলো মানুষের ফুসফুস তন্ত্র এবং HIV এর আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু খোদ ইমিউন সিস্টেম।

আমরা সবাই জানি, আমাদের ইমিউন সিস্টেমের দায়িত্ব হল এন্টিবডি তৈরী করা কিন্তু যে এই এন্টিবডি তৈরী করবে তাকেই তো HIV আক্রান্ত করে ফেলেছে।

(খ) যে ভাইরাসের যত ঘন ঘন এবং যত প্রতিকুল পরিবেশে মিউটেশন করে যত বেশী ভ্যারিয়েন্টে রূপান্তর হবে তার বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন কার্যকারিতা তত চ্যালেঞ্জিং হবে।

করোনা ভাইরাস আমাদের ভ্যাকসিনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে তার ঘন ঘন ভ্যারিয়েন্ট পরিবর্তনের কারণে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস বছরের প্রতি মৌসুমে তাদের ভারিয়েন্ট পরিবর্তন করে ফলে প্রতি বছরই ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস বিরোধী নতুন ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হয়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এক HIV ভাইরাস একজন মানুষের শরীরে যত মিউটেশন ভিন্নতা দেখায় গোটা পৃথিবীর সব ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস মিলেও এত মিউটেশন ভিন্নতা দেখায় না যার কারণে AIDS এর বিপরীতে এখনো পর্যন্ত কোন কার্যকর ভ্যাকসিন আবিস্কার করা সম্ভব হয় নাই।

(গ)কোন কোন ভাইরাস মানুষকে একবার আক্রান্ত করলে সারা জীবন আর আক্রান্ত করে না, কারন আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে সারা জীবনের জন্য ন্যাচারাল এন্টিবডি তৈরী হয়ে যায়। ফলে জীবনে একবার ভ্যাকসিন দিলেও তা সারা জীবন কার্যকর থাকে। তবে বুস্টার ডোজ দিলে আরো শক্তিশালী হয়। যেমন, Herpes and Measles ভাইরাস।

কিন্তু করোনা এমনই এক মরণঘাতি রোগ একবার আক্রান্ত হবার পর সেরে উঠার পর তৈরীকৃত এন্টিবডি ৬-৮ মাসের বেশী স্থায়িত্ব হয়না। ফলে সম্ভবত করোনার হাত থেকে বাচতে হলে প্রতি বছরই টিকা নিতে হবে।

পৃথিবী বাসীর দূর্ভাগ্য এখানেই যে ভাইরাস বিশেষ করে অন্য ছয়টি করোনা ভাইরাসের তুলনায় মরটালিটি রেট, মিউটেশন ক্ষমতা, ইনকিউব্যাশন পিরিয়ড ইত্যাদি ক্ষেত্রে খুব সুবিধাজনক অবস্থায় না থেকেও কয়েকটা অনন্য বৈশিষ্টের কারণে মানব জাতীকে এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।

এই ভাইরাসের অন্যান্য সমগোত্রীয় যেমন, SARS ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মর্টালিটি ৯.৫%, MERS এর ৩৫%। এছাড়াও অন্যান্য ভাইরাস যেমন, হামের ৩৩%, ইবুলা ভাইরাসের ৫০% মর্টালিটি রেট। অথচ করোনা ভাইরাসের মর্টালিটি রেট মাত্র ২.৩%। SARS-COV2 ভাইরাস কেন্দ্রের RNA, তার চারিদিকে নিউক্লিউক্যাপসিড প্রোটিন, বাইরের মেমব্রেনে থাকা স্পাইক প্রোটিন খুবই এন্টিজেনিক বা টক্সিক। সহজ সংক্রমণ সক্ষমতা, দ্রুতই উচ্চ মাত্রার রোগ সৃষ্টির ক্ষমতা, সহজ মিউটেশণ এবং সর্বোপরি এন্টিবডির অস্থায়ীত্ব- এই ভাইরাসের অনন্য বৈশিষ্ট্য যা বিশ্ববাসীর জন্য দুঃসংবাদ বয়ে এনেছে।

উদাহরণ স্বরূপ, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও হাম ভাইরাসের ইনকিউব্যাশন পিরিয়ড করোনার ভাইরাসের চেয়ে কম, সংক্রমণ ক্ষমতা বেশী কিন্তু এদের এন্টিবডি যা এদের বিরুদ্ধে তৈরী হয় তা করোনাভাইরাসের এন্টিবডির চেয়ে অনেক স্থায়ী। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে তৈরী হওয়া এন্টিবডির স্থায়ীত্ব কম হওয়ার কারণে আজ বিশ্ববাসী এতটা হুমকির মধ্যে।

অথচ AIDS রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরী না করতে পারলেও শুধুমাত্র এই রোগের ধীরগতির কারণে আলোচনায় করোনার চেয়ে পিছিয়ে।
      নীচে করোনা ভাইরাসের সাথে অন্য আরো কয়েকটি ভাইরাসের কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলোঃ

রোবেলাঃ প্রতি একজন আক্রান্ত রোগী গড়ে ৬-৭ জনকে ইনফেকশন ছড়ায় এবং এর হার্ড ইমিউনিটি থ্রেসোল্ড হল- ৮০-৮৫%
ডিপথেরিয়াঃপ্রতি একজন আক্রান্ত রোগী গড়ে ৬-৭ জনকে ইনফেকশন ছড়ায় এবং এর হার্ড ইমিউনিটি থ্রেসোল্ড হল- ৮৫%

পলিওঃ প্রতি একজন আক্রান্ত রোগী গড়ে ৫-৭ জনকে ইনফেকশন ছড়ায় এবং এর হার্ড ইমিউনিটি থ্রেসোল্ড হল- ৮০-৮৫%

স্মল পক্সঃ প্রতি একজন আক্রান্ত রোগী গড়ে ৫ জনকে ইনফেকশন ছড়াত এবং এর হার্ড ইমিউনিটি থ্রেসোল্ড ছিল- ৮০-৮৫%
অথচ করোনা ভাইরাসের প্রতি একজন আক্রান্ত রোগী গড়ে মাত্র ২-৩ জনকে ইনফেকশন ছড়ায় এবং এর হার্ড ইমিউনিটি থ্রেসোল্ড এখনো পর্যন্ত জানা যায় নাই।

(ঘ) ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট পরিবর্তনের ফলে ব্রেকথ্রু ইনফেকশন (ফুল ডোজ টিকা নেয়ার ১৪ দিন পর আবারও COVID19 দ্বারা আক্রান্ত হওয়া) ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষত্রেই সিংহভাগ ঘটছে। ভারতে ৬৭৭ জন ব্রেকথ্রু COVID19 রোগীর উপর গবেষণায় দেখা গেছে যে আক্রান্তদের মধ্যে ৮৬% ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের রোগী। রোগীদের মধ্যে ৭১% উপসর্গযুক্ত ছিল। ৮.৬% হাসপাতালে ভর্তি করানো লেগেছে এবং 0.৪% মারা গেছেন।

এরকম ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের পৃথিবীতে আগমণ মানব জাতীর জন্য আরেকটি দুঃসংবাদ। (ঙ) এই করোনা ভাইরাসকে যত বেশী সংক্রমণের সুযোগ দেয়া হবে, সে তত বেশী ভ্যারিয়েন্ট পরিবর্তনের সুযোগ পাবে। যত বেশী ভ্যারিয়েন্ট পরিবর্তনের সুযোগ পাবে তত ব্রেকথ্রু ইনফেকশনের হার বাড়বে। যত ব্রেকথ্রু ইনফেকশন বাড়বে তত ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কমবে এবং বাড়বে মৃত্যুর সংখা, কমবে মানুষের আস্থা।

     হোস্ট ফ্যাক্টর :

১. বয়স : সব বয়সে সব টিকা সমানভাবে কার্যকর নয়। জন্মের পরপরই ভেরি লো বার্থওয়েট বেবির অ্যান্টিবডি রেসপন্স লো বার্থওয়েট বেবির চেয়ে কম। যেমন, ১ থেকে ৩০ দিন বয়সী শিশুদের অ্যান্টিবডি তৈরির ক্ষমতা কম থাকে। এ সময় শিশুরা সাধারণত মায়েদের দিক থেকে জন্মগতভাবেই পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি পেয়ে থাকে। ফলে এ সময়ে সংশ্লষ্ট টিকা দিলে টিকার কার্যক্রমে বাধাগ্রস্ত হয়। এ জন্য হামের টিকা ০৯ মাস বয়স থেকে দেয়া উত্তম। অতিশয় বৃদ্ধ বয়সেও ইমিউন সিস্টেম দুর্বল থাকার কারণে অ্যান্টিবডি রেসপন্স কম।

২. লিঙ্গ : কোনো কোনো টিকায় মেয়েরা, কোনো কোনো টিকায় ছেলেরা বেশি রেসপন্স করে। যেমন, ডেঙ্গু, হেপাটাইটিস-এ ও হেপাটাইটিস-বি তে মহিলাদের অ্যান্টিবডি প্রোডাকশন রেসপন্স ভালো কিন্তু টিটেনাস ও হামের টিকার ক্ষেত্রে পুরুষদের অ্যান্টিবডি রেসপন্স ভালো।
৩. জেনেটিক ম্যাকআপ : বিভিন্ন জেনেটিক ম্যাকআপের কারণে বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক গ্রুপ অ্যান্টিবডি তৈরিতে ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করে।
৪. কো-মর্বিডিটি : ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, ক্রনিক কিডনি ডিজিজ, এইচআইবি ইত্যাদি ধরনের রোগে কম অ্যান্টিবডি তৈরি হয় অথবা হয়েই না। ফলে টিকা দিলেও আক্রান্ত হতে পারে।

৫. কো-ইনফেক্টিভিটি : অন্য রোগজীবাণু দ্বারা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হলে যেমন, ডায়রিয়া, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি এবং অনেক বেশি অ্যান্টিবায়োটিক ও ইমিউনো সাপ্রেসিভ ড্রাগ ব্যবহাররত অবস্থায় থাকলে অ্যান্টিবডি রেসপন্স কমে যেতে পারে।
৬. যার ইমিউন সিস্টেম যত শক্তিশালী, অথবা স্বাভাবিক ইমিউন সিস্টেমের অধিকারী একজন যত মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হবে, সংশ্লিষ্ট টিকায় তার তত অ্যান্টিবডি তৈরি হবে।

৭. ইতঃপূর্বে আক্রান্ত হয়ে একটি সংক্রামক রোগ থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তির ওই একই রোগের টিকা তার জন্য অনেক বেশি কার্যকরী ও স্থায়ী।

৮. অভ্যাসগত বিষয় : মাঝারি ধরনের শরীরচর্চা, পর্যাপ্ত ঘুম, দুশ্চিন্তা মুক্ত জীবন পরিচালনা, পুষ্টিকর খাবারে অভ্যস্ততা ইত্যাদিতে অ্যান্টিবডি রেসপন্স ভালো থাকে।
৯. গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপায়ীরা হেপাটাইটিস বি, মদ্যপ ব্যক্তিরা নিউমোকক্কাল টিকায় কম কার্যকারিতা দেখায়।

১০. নিউট্রিশনাল স্টেটাস ও এক্সপোজার এক্সপেরিয়েন্স ফ্যাক্টর : পুষ্টিহীন শিশুরা হাম, টিটেনাস, ওপিভি, হেপাটাইটিস বি টিকায় কম রেসপন্স দেখায়। তা ছাড়া পুষ্টিহীন শিশুদের সেলুলার ইমিউনিটি, ইন্ন্যাট ইমিউনিটি ও হিওমোরাল ইমিউনিটি রেসপন্স অনেক কম থাকে।

এজন্যই খুব বেশি পুষ্টিহীন শিশুদের যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়ে বিসিজি টিকা এমনকি ম্যান্টক্স টেস্ট করা হয় না।
গবেষণায় দেখা গেছে ‘এক্সপোজার এক্সপেরিয়েন্সের’ পরিবেশে বেড়ে ওঠা স্বাভাবিক শিশু ও বড়রা অন্য পরিবেশে বেড়ে ওঠা শিশু ও বড়দের চেয়ে অ্যান্টিবডি রেসপন্স ভালো দেখায়।

১১. জিওগ্রাফিকাল ফ্যাক্টর : উন্নয়নশীল বিশ্বের শিশুরা ডিপথেরিয়া, পারটোসিস টিকায় এবং উন্নত বিশ্বের শিশুরা হাম, যক্ষ্মার জন্য বিসিজি, পলিউর জন্য ওপিভি টিকায় ভালো রেসপন্স দেখায়।

          টিকা বা ভ্যাকসিন ফ্যাক্টর :

১. রোগ জীবাণুর কোনো অংশ দিয়ে টিকা তৈরি হবে এবং অ্যাডজুভ্যান্টের ব্যবহার টিকার কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে। ২. ভাইরাস ব্যাক্টেরিয়ার কোনো অবস্থার ওপর টিকা তৈরি হবে। যেমন এটা কি লাইভ এটেনিউয়েটেড ভ্যাক্সিন, কিল্ড ভ্যাক্সিন, প্রোটিন ভ্যাক্সিন, সাব ইউনিট ভ্যাক্সিন নাকি জেনেটিক কোড ভ্যাক্সিন ইত্যাদির ওপরও টিকা কার্যকারিতা নির্ভর করে।

৩. সাধারণত লাইভ ভ্যাক্সিন বেশি শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী এবং একটি ডোজেও কাজ হয়। কিন্তু কিল্ড ভ্যাক্সিন কম শক্তিশালী এবং স্বল্পস্থায়ী ও দুই ডোজ এমনকি বুস্টার ডোজও লাগে। ৪. একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত দুই ডোজের মাঝের গ্যাপ যত বেশি, ভাক্সিন কার্জ্যকারিতা তত বেশি।

৫. টিকার স্থান : কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঊরুতে ও ডেল্টয়েড মাংসে দেয়ার ওপর কার্যকারিতা নির্ভর করে। মাংসে দেয়া ভ্যাক্সিন টি-সেল মেডিয়েটেড, ইমিউন রেসপন্স করে, চামড়ার নিচে দেয়া ভ্যাক্সিন ডেন্ড্রাইটিক মেডিয়েটেড ইমিউন রেসপন্স করে।

৬. ইঞ্জেক্টেবল না ওরালÑ এটার ওপরও টিকা কার্যকারিতা নির্ভর করে। যেমন ওরাল পলিও টিকা ২৭ লাখ জনের মধ্য থেকে একজনের মধ্যে হলেও ভ্যাক্সিন অ্যাসোসিয়েটেড প্যারালাইটিক পলিও করতে পারে, কিন্তু ইঞ্জেক্টেবল পলিও ভ্যাক্সিন টিকা দিয়ে তা হয় না। তা ছাড়াও খুব কমসংখ্যক ক্ষেত্রে ওপিভি, জেনেটিক্যালি এর পরিবর্তন এনে সারকুলেটিং ভ্যাক্সিন ডেরাইভড পলিওভাইরাসে রূপ নিতে পারে, কিন্তু আইপিভিতে তা হয় না।

৭. টিকার কার্যকারিতা অনেকটাই ডোজ নির্ভর। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মিনিমাম দুই ডোজ, এমনকি কার্যকারিতা সবসময় অক্ষুণœ রাখার স্বার্থে নির্দিষ্ট ব্যবধানে বুস্টার ডোজও দিতে হয়। করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে দুই ডোজ দেয়ার পরও বছর বছর বুস্টার ডোজ প্রয়োজন হতে পারে।

৮. সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ ও কোল্ড চেইন রক্ষিত না হলে অ্যান্টিবডি রেসপন্স কম হবে।
৯. টিকা উৎপাদনে ব্যবহৃত সক্রিয় ও অসক্রিয় ইনগ্রেডিয়েন্ট যেমন, অ্যান্টিজেন, অ্যাডজুভ্যান্ট, অ্যান্টিবায়োটিক, স্টাবিলাইজার ও প্রিজারভেটিভস ইত্যাদি ব্যবহারে সঠিক মাত্রার ওপর অ্যান্টিবডি রেসপন্স নির্ভর করে। যেমন টিকা তৈরিতে অ্যাডজুব্যান্ট ব্যবহার ইমিউন রেসপন্স বাড়িয়ে দেয়।

১০. টিকা উৎপাদনে পদ্ধতিগত সমস্যা থাকলে রেসপন্স কম হবে।অনেকে মনে করেন করোনা ভ্যাকসিন নিলে এর উপসর্গ খুব মারাত্মক হতে পারে। এখানে বুঝতে হবে টিকার ভেতরে কী থাকে। করোনা টিকায় বা ভ্যাকসিনে থাকে মৃত করোনাভাইরাস, জীবিত কিন্তু দুর্বল করা করোনাভাইরাস, করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন, নিউক্লিউক্যাপ্সিড প্রোটিনের অংশ অথবা ভাইরাসের জেনেটিক মেটারিয়াল। এদের কোনো একটারও শরীরে ঢুকার পর রোগ সৃষ্টি করার ক্ষমতা নেই।

টিকার ওপর ভুয়া খবর প্রচার করা যে এটা অমুক দেশের টিকা, তমুক কোম্পানীর টিকা, এটার মধ্যে অন্য কিছু আছে বা পানি ছাড়া কিছুই নাই ইত্যাদি। একটা কথা মনে রাখতে টিকা উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারে আসার অনুমতি সবই সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার করে থাকে। কোন খারাপ সরকারও চাইবে না মানুষের জীবন-মরণ নিয়ে তার দেশের ভাবমর্যাদা নষ্ট হোক।

এখানেই শেষ না, সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার অনুমতি দিলেও ওই টিকা অন্য দেশে ব্যবহার করার আগে সেই দেশের সরকার দেখবে এটার কার্যকারিতা, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, উন্নত বিশ্ব তথা ইউরোপিও ইউনিয়ন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইত্যাদির অনুমোদন আছে কিনা।

তার চেয়ে বড় কথা হলো রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি ছাড়া কোনো বড় কোম্পানির পক্ষেও উৎপাদনে যাওয়ার মতো জটিল ও সময় সাপেক্ষ এমন প্রকল্পের চিন্তা করাও সম্ভব নয়। তবে অনেক সময়ে টিকা কেনাবেচার ক্ষেত্রে দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি, সেটা ভিন্ন ইস্যু কিন্তু ইতোমধ্যে মার্কেটে আসা কোনো টিকার মানের ব্যাপারে কথা বলার সুযোগ খুব কমই আছে।

এমএমআর হচ্ছে একের ভেতর তিন টিকা। এটা শিশু এবং মায়েদের ওপর ব্যবহার করা হয় হাম, মাম্পস, এবং রুবেলা (যাকে জার্মান মিসলস বলা হয়) প্রতিরোধের জন্য। এ টিকা ব্যবহারের কারণে লক্ষ লক্ষ মা-বোন ও বাচ্চাদের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। তারপরও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়াই বলেছিলেন যে, টিকার সাথে অটিজমের সম্পর্ক রয়েছে।

ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাত্তেও সালভিনি তো বলেই ফেলেছে যে তিনি টিকাবিরোধীদের দলে। তবে সম্প্রতি বোল পালটে তিনি সব শিশুকে টিকা দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন।

ভ্যাকসিন হলো এই গ্রহে সংক্রামক রোগ প্রতিহত করার সহজতম, সাশ্রয়ী এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। যদি জনসংখ্যার একটা বড় অংশ টিকা নেন তাহলে রোগের বিস্তার প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। এর ফলে যাদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, অতিশয় দুর্বল তারাও রোগের কবল থেকে রক্ষা পান। অথচ রোগজীবাণু দ্বারা সৃষ্ট ইমিউনিটি হতে গিয়ে নিরীহ দুর্বল মহামারীর শিকার হয় সবার আগে।

প্রত্যেক টিকারই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে। যার কারণে মানুষের অনীহা। কিন্তু টিকা না দিলে যে করোনায় মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে তার চাইতে কি টিকা নেয়া উত্তম নয়। অথচ টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে মৃত্যুর সম্ভাবনাও নেই।

প্রতিবেদক, সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ডিপার্টমেন্ট অব হিস্টোপ্যাথলজি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস এন্ড ইউরোলজী, শের-ই-বাংলা নগর, ঢাকা। # একে


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.


অনুসন্ধান

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:০৫ পূর্বাহ্ণ
  • ১১:৪৯ পূর্বাহ্ণ
  • ৩:৩৫ অপরাহ্ণ
  • ৫:১৪ অপরাহ্ণ
  • ৬:৩১ অপরাহ্ণ
  • ৬:২০ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন জরিপ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন লিপসার্ভিসের দলে পরিণত হয়েছে।’ আপনিও কি তাই মনে করেন? Live

  • হ্যাঁ
    25% 3 / 12
  • না
    75% 9 / 12