দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
তালেবানরা আফগানিস্তানের শহরগুলোতে আর সরকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে তাদেরকে আত্মসমর্পণের আহবান জানিয়েছে। গত মঙ্গলবার তালেবানদের এক প্রবীণ বিদ্রোহী নেতা এই তথ্য জানিয়ে বলেন, তুরস্ককেও তাদের সেনা মোতায়েনের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
এদিকে, তালেবান আবার ক্ষমতায় গেলে তাদের সঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাজ্য। এই ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস।
ন্যাটো সেনা প্রত্যাহারের মধ্যেই কট্টরপন্থী ইসলামপন্থী গোষ্ঠীটি উত্তরাঞ্চলে অনেকাংশে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। এর ফলে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার সাথে সাথে মঙ্গলবার সর্বশেষ ন্যাটো সহযোগী হিসাবে ফ্রান্সও তার নাগরিকদের চলে যেতে বলেছে।
ফরাসী দূতাবাস বলেছে, ‘ফ্রান্স দূতাবাস সকল ফরাসী নাগরিককে বিশেষ সরকারী বিমানে বা অবিলম্বে নিজস্ব উপায়ে দেশ ত্যাগের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে সুপারিশ করেছে। গত ১ জুলাই, জার্মানিও তার নাগরিকদের দেশ ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছিল।
এর আগে, তালেবান কমিশনের প্রধান যিনি সরকারী বাহিনীর আত্মসমর্পণের বিষয়টি তদারকি করছেন। তিনি বলেন, ‘পর্বত ও মরুভূমি থেকে লড়াই করে এখন শহরগুলোর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে, মুজাহিদিনরা । শহরের অভ্যন্তরে তালেবানরা আর যুদ্ধ করতে চায় না। তারা সরকারী বাহিনীকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানাচ্ছেন। এটি শহরগুলোকে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া থেকে রোধ করার জন্যই এই আহবান।’
এদিকে, মঙ্গলবার ডেইলি টেলিগ্রাফকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেন, আফগানিস্তানের যেকোনো সরকার যদি আন্তর্জাতিক আইনকানুন মেনে চলে, তবে যুক্তরাজ্য সরকার তাদের সঙ্গে কাজ করবে। তিনি আরও বলেন, যদি তারা (তালেবান) মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে লিপ্ত হয়, তবে এ সম্পর্ক পর্যালোচনা করবে ব্রিটিশ সরকার।
বেন ওয়ালেস বলেন, তালেবান যেকোনো মূল্যে আন্তর্জাতিক মহলের স্বীকৃতি চাইছে। জাতি গঠনের জন্য তাদের অর্থ এবং সহায়তার পথ খুলতে চাইছে। ‘কিন্তু আপনি এই সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে এ কাজ করতে পারেন না। আপনাকে শান্তির সহযোগী হতে হবে, নয়তো একঘরে হয়ে যাওয়া ঝুঁকিতে পড়বেন। আর এই একঘরে পরিস্থিতি তাদের আগের অবস্থানে নিয়ে যাবে।’ যোগ করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘোষণার পর থেকেই তালেবান দেশের বিভিন্ন এলাকা দখলে নেয়া শুরু করে। সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার মধ্যে এলাকার পর এলাকা দখল আরও জোরদার করে সংগঠনটি। সম্প্রতি তালেবানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের প্রায় ৮৫ শতাংশ এলাকা সংগঠনটির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আফগানিস্তানে প্রতিদিন এলাকার পর এলাকা দখলে নিচ্ছে তালেবান। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিভিন্ন প্রদেশে হচ্ছে তীব্র লড়াই। এর মধ্যে মঙ্গলবার দেশটির বামিয়ান প্রদেশের সায়ঘান জেলা, গজনির মালিস্তান, ফারাহ প্রদেশের পুর চমন এবং খোস্ট প্রদেশের মুসা খেলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান। সংঘর্ষ চলছে ফারিয়াব প্রদেশেও।
# সূত্র : এশিয়াটাইমস, রয়টার্স।