দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
ইন্দোনেশিয়ায় চীনের সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের প্রধান বিজ্ঞানী নোভিলিয়া জাফরি বাচতায়ার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) ইন্দোনেশিয়ার গণমাধ্যমে ওই বিজ্ঞানীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২৪ লাখ ১৭ হাজার ৭৮৮ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬৩ হাজার ৭৬০ জনের।
বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেকের উদ্ভাবিত করোনা টিকা ব্যাপক হারে ব্যবহার করা হয়েছে ইন্দোনেশিয়া তাদের অন্যতম। দেশটিতে যখন করোনায় মৃত্যুর নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে, তখন টিকার ট্রায়ালে জড়িত শীর্ষস্থানীয় এই বিজ্ঞানীর মৃত্যুর খবর এলো।
বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, চলমান করোনা মহামারীতে ইন্দোনেশিয়া নতুন করে বৈশ্বিক ‘হটস্পটে’ পরিণত হয়েছে। মহামারীর প্রকোপ সামলাতে হিমশিম খাওয়া দেশটির হাসপাতালগুলো করোনা রোগীদের ফেরত পাঠাচ্ছে। বুধবারও দেশটিতে রেকর্ড এক হাজার ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম কুমপারান নিউজ সার্ভিস বলছে, বিজ্ঞানী নোভিলিয়া জাফরি করোনাভাইরাসে মারা গেছেন। ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি বায়োফার্মার একজন কর্মকর্তা দেশটির সংবাদমাধ্যম সিন্দোনিউজকে বলেছেন, বিজ্ঞানী জাফরিকে কোভিড-১৯ প্রোটোকল মেনে দাফন করা হয়েছে।
সরকারি উদ্যোগবিষয়ক মন্ত্রী এরিক থোহির ইনস্টাগ্রামে জাফরির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে পোস্ট দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জাফরির মৃত্যুতে বায়োফার্মার ‘বিশাল ক্ষতি’ হলো। তবে বিজ্ঞানী জাফরির মৃত্যুর কোনো কারণ উল্লেখ করেননি তিনি।
ইন্দোনেশিয়ায় সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে বায়োফার্মা। ইন্দোনেশীয় ওই মন্ত্রী বলেছেন, বায়োফার্মার কয়েক ডজন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রধান ছিলেন জাফরি। সিনোভ্যাকের সহায়তায় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালেরও প্রধান বিজ্ঞানী ছিলেন তিনি। এরিক থোহির বলেন, এই করোনাভাইরাস মহামারী থেকে মুক্তি লাভের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইন্দোনেশিয়ায় আমরা ভ্যাকসিন উৎপাদন করে কোটি কোটি মানুষকে প্রয়োগ করেছি।
৫০ বছর বয়সী ওই বিজ্ঞানীর মৃত্যুর বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ইন্দোনেশিয়ার সরকারি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি বায়োফার্মা। এর আগেও ইন্দোনেশিয়ায় সিনোভ্যাকের টিকা নেয়ার পর বেশ কয়েকজন নার্স ও চিকিৎসক করোনায় মারা গেছেন।
দেশটির স্বতন্ত্র ডেটা গ্রুপ ল্যাপর কোভিড-১৯ বলছে, ইন্দোনেশিয়ায় এ বছরের জুন পর্যন্ত ১৩১ জন স্বাস্থ্যসেবা কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এর মধ্যে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মারা গেছেন ৫০ জন। মৃত এই স্বাস্থ্য কর্মীদের সবাই সিনোভ্যাকের কোভিড টিকা নিয়েছিলেন।
সূত্র : রয়টার্স ও ওয়ার্ল্ডোমিটার