বিশেষ প্রতিনিধি, দূরবীন নিউজ:
আওয়ামী লীগ নয়, একটা পুতুল সরকার দেশ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, দেশে লুটপাটের রাজত্ব চলছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে, এই লুটপাট কারীদের বিচার হবে।
আজ মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুপুরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘‘ আমার বার বার একটা কথা মনে হয়, এদেশ সম্ভবত আওয়ামী লীগ চালাচ্ছে না। একটা পুতুল সরকার এদেশে বসা আছে। তারাই চালাচ্ছে।”
‘‘ কারো নির্দেশ মতো কোনো গোষ্ঠি, কোনো প্রতিষ্ঠান, কোনো সংস্থা কিংবা সবাই একত্রিতভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে নিজেদের গা বাঁচানোর জন্য এই আওয়ামী লীগ নামক পুতুলটিকে টিকিয়ে রেখেছে।”
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘এমন কোনো সংস্থা নাই, এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নাই, এমন কোনো ব্যক্তি নাই যারা চুরি-ডাকাতি-লুট করে নাই। হাজার হাজার কোটি টাকা তারা বিদেশে পাঁচার করে দিয়েছে। পি কে দত্তের মতো বহু বেসরকারি এবং সরকারি কর্মচারিরা বাংলাদেশের টাকা লুট করেছে। তারা দেশে অবস্থান করছে আর তাদের সন্তান-সন্তাতিরা বিদেশে অবস্থান করছে।”
‘‘আমি বলতে চাই ওদেরও বিচার হবে। এতো খুন, এতো লুট, এতো গুম –এরও বিচার হবে।যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকে তাদের(লুটপাটকারী) বিচার হবে। সেই সমস্ত বিচারের ভয় আজকে একটা গো্ষ্ঠি এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে।”
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘ আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তিন তিন বারের প্রধানমন্ত্রী, উনাকে কেউ প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে দেয় নাই, এদেশের লক্ষ কোটি মানুষের ভালোবাসায় শিক্ত হয়ে কোটি কোটি ভোটের ব্যবধানে তিনি এদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। আজকে সেই প্রধানমন্ত্রী অন্ধকার প্রকোষ্ঠে ধুকে ধুকে মরছেন।”
‘‘ উনার সুচিকিৎসা হচ্ছে না। আমরা উনার চিকিৎসার কথা বলেছি, আমরা বিদেশে নেওয়ার কথা বলেছি-আমরা অনুরোধ করেছি। কিন্তু চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তারা চিকিৎসা করতে দেবে না। আমরা আজকেও এসভা থেকে বলতে চাই যে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে আসার সুযোগ দিন এবং নিপুণ রায় চৌধুরীকে মুক্তি দিন।”
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘ অফিসের বাইরে আমি দেখে আসলাম- একদল পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। অর্থাৎ আমাদেরকে ঘরের বাইরে মিটিং করতে দেবে না। জানেন তো একটা সময় আসতে পারে এটা যদি বাস্ট করে সেই বোমার উত্তাপে আপনারা টিকে থাকতে পারবেন না। এদেশের মানুষ আজকে ক্ষুব্ধ হয়ে আছে, এদেশের মানুষ অত্যাচারিত হয়ে আছে, এদেশের মানুষ ঘুমরে ঘুমরে মরছে।”
‘‘ বাংলার মানুষ প্রমাণ করেছে বিভিন্ন সময়ে সেই আইয়ুব খানের সময়ে প্রমাণ, করেছে, এরশাদ শাহীর সময়ের প্রমাণ করেছে যে এদেশের মানুষ কখনোই দমে থাকবার জন্য জন্মগ্রহন করে নাই। এদেরকে আটকিয়ে রাখা যাবে না। একদিন এদেশের মানুষ রাস্তায় নামবে এবং এই সরকারের তখতে তৌউশ টুকরো টুকরেো হয়ে যাবে। নিপুণ রায় চৌধুরীর মতো হাজারো লক্ষ কর্মী মুক্তি পাবে।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ আমরা জানি যে, নিপুণ রায় চৌধুরীর একটা ছোট্ট মেয়ে আছে। সেই মেয়ের কাছ থেকে তার মাকে দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন করে রাখা-এটা খুব বিশাল অমানবিক রাজনীতি। তাকে অন্যায়ভাবে আটক করে রাখা হয়েছে।”
‘‘ আমি শুধু এইটুকু বলতে চাই, নিপুণ রায় চৌধুরীর মতো নেত্রীদেরকে গ্রেপ্তার করে, অসংখ্য নেতা-কর্মী গুম হওয়ার পরেও শহীদ জিয়ার আর্দশের সৈনিকেরা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কর্মীরা, তারেক রহমানের ভাই এবং বোনেরা ভয় পায় নাই, ভয় পায় না। বিএনপি ভাঙেও নাই, বিএনপির দূর্বলও হয় নাই। কাজেই নিপুণ রায়কে গ্রেপ্তার করে রেখে বিএনপিকে ক্ষতিগ্রস্থ করা যাবে-এটা ভাবার কোনো কারণ নাই।”
তিনি বলেন, ‘‘ নিপুণ রায়ের প্রতি যে অন্যায় তারা(সরকার)করেছে আমরা তার প্রতিবিধান চাই। আমি চাই যে, তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়া হোক।”
‘‘সরকার তার রাজনৈতিক স্বার্থে না হয় অপরাধ করেছে। আমরা আশা করবো, আদালত পবিত্র স্থান। সেখানে অন্তত সে সুবিচার পাবে।”
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় বাংলাদেশ নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে সংগঠনটির সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরীর মুক্তির দাবিতে এই প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।
সংগঠনের সদস্য মীর সরাফত আলী সপুর সভাপতিত্বে ও আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ‘র সঞ্চালনায় এই প্রতিবাদ সমাবেশে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শিরিন সুলতানা, আজিজুল বারী হেলাল, আফরোজা আব্বাস, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, খন্দকার আবু আশফাক, বিলকিস ইসলাম, ফরিদা ইয়াসমীন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
/এডিজেড /একে/দূরবীন নিউজ