দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল মান্নান তালুকদারের বিরুদ্ধে ১১০ কোটি টাকা পাচারের মামলায় তার আগের জামিন বাতিল করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
উচ্চ আদালত আবদুল মান্নান তালুকদারকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নিম্ম আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি একই কোম্পানির চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের জামিন স্থগিতের আদেশ বহাল রেখেছেন উচ্চ আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান এবং আসিফ হোসেন। আসামিপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং অ্যডিভোকেট আশরাফ আলী।
এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ মে বাগেরহাট সদর মডেল থানায় নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মান্নান তালুকদার ও চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১০ কোটি ৩১ লাখ নয় হাজার ১৩৫ টাকা ৫৮ পয়সা অবৈধ সম্পদ অর্জন, অপরাধলব্ধ আয় স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগে মামলা করে দুদক।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ১০ কোটি টাকা। কোম্পানির মোট এক হাজার শেয়ারের মধ্যে আবদুল মান্নান তালুকদারের ৮৫০টি, চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের ৫০টি, তার মা সালেহা বেগম ও স্ত্রী জেসমিন নাহার ৫০টি করে শেয়ারের মালিক।
প্রকৃতপক্ষে নিউ বসুন্ধরার চেয়ারম্যান হিসেবে মো. আনিসুর রহমানের নাম থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল মান্নান তালুকদার।
২০১০ সালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (এমএলএসএস) আবদুল মান্নান তালুকদার স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামে একটি জমি কেনাবেচার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলার পর তিনি গ্রাহকদের প্রতি লাখে মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাগেরহাট, খুলনাসহ বেশ কয়েকটি জেলার প্রায় ২০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে অন্তত ২৯৯ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেন, যা ব্যাংকিং আইনের পরিপন্থী।
এরপর গত কয়েক বছরে বাগেরহাটের ১৬টি ব্যাংকের ৩০টি (অ্যাকাউন্ট) হিসাবে ১১০ কোটি ৩১ লাখ নয় হাজার ১৩৫ টাকা ৫৮ পয়সা জমা করেন। গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তিনি ব্যাংক থেকে তুলে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ উঠে।
এ মামলায় গত বছরের শেষের দিকে তাদের জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে তারা কারামুক্ত হন। এর মধ্যে দুদক ওই জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে। গত ২৫ এপ্রিল আনিসুর রহমানকে আত্মসমর্পণ করতে বলেন আপিল বিভাগ। সে অনুসারে তিনি আত্মসমর্পণ করার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। #