আবুল কাশেম ,দূরবীণ নিউজ:
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম হাতিরঝিলের দুর্গন্ধযুক্ত বিবর্ণ পানির পরিস্থিতি দেখে মনে বড়ই আঘাত পেয়েছেন। দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে নগরবাসীর অসহনীয় দুর্ভোগ লাগবের জন্য এই হাতিরঝিলের রক্ষণাবক্ষেণের দায়িত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে হাতিরঝিলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
কিন্তু সহসা হাতিরঝিলের অসহনীয় দুর্গন্ধযুক্ত পানি শোধন ও নগরবাসী দুর্ভোগ নিরসনে শুভ লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।হাতিরঝিলের পানি শোধন প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। ফলে হাতিরঝিলের দুর্গন্ধযুক্ত বিবর্ণ পানির সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। হাতিরঝিলের দূষিত পানির দুর্গন্ধে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা ।ছবি সংগৃহিত
এদিকে জনবান্ধব ও কর্মঠ ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম গত ১৯ এপ্রিল হাতিরঝিল সংলগ্ন জলাবদ্ধতার সমস্যা দূরীকরণের লক্ষ্যে চলমান উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে গিয়ে হাতিরঝিলের দুর্গন্ধযুক্ত বিবর্ণ পানির পরিস্থিতি দেখে প্রচন্ড ক্ষোভের সঙ্গে রাজউককে বলেছেন, হাতিরঝিলকে সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে না পারলে পুরো দায়িত্ব ডিএনসিসির কাছে দায়িত্বছেড়ে দিন।
মেয়র বলেন, ডিএনসিসি বিভিন্ন জায়গায় ঢাকা ওয়াসার খাল উদ্ধার ও পরিষ্কার কার্যক্রমের মাধ্যমে জলাবদ্ধতার নিরসনসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। হাতিরঝিলের দায়িত্ব ডিএনসিসি পেলে এটাকে আরো সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সবধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই প্রাণ ফিরে পাবে হাতিরঝিল।ছবি সংগৃহিত
তিনি বলেন,ডিএনসিসির এলাকায় অবস্থিত হাতিরঝিল এবং লেকসহ সব জলাশয় রক্ষণাবেক্ষণে সমন্বিতভাবে কাজ করা হবে।
মেয়র বলেন, ডিএনসিসি বিভিন্ন জায়গায় ঢাকা ওয়াসার খাল উদ্ধার ও পরিষ্কার কার্যক্রমের মাধ্যমে জলাবদ্ধতার নিরসনসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। হাতিরঝিলের দায়িত্ব ডিএনসিসি পেলে এটাকে আরো সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সবধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই প্রাণ ফিরে পাবে হাতিরঝিল।
হাতিরঝিলের দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে অসহনীয়ম দুর্ভোগ:
এই প্রকল্প উদ্বোধনের পর থেকেই শুষ্ক মৌসুমে দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে অসহনীয়ম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শত শত দর্শনার্থী ও আশপাশের বাসিন্দাদের। কিন্তু দীর্ঘদিনের এ ভোগান্তি থেকে কবেনাগাদ মুক্তি মিলবে তার ঠিক নেই। হাতিরঝিল প্রকল্প বাস্তবায়নে রয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
অথচ প্রথম দিকে হাতিরঝিল এলাকাটি সাধারণ মানুষের বিনোদনের জন্য উল্লেখযোগ্য একটি স্থান ছিল। কিন্তু শোধনাগার না থাকায়, নোংরা ও দূষিত পানি হাতিরঝিলের পরিবেশ নষ্ট করে ফেলেছে । বিশেষ করে, শুষ্ক মৌসুমে দূষিত ও নোংরা পানির দুর্গন্ধে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় ঘুরতে আসা দর্শনার্থী ও আশপাশের বাসিন্দাদের।ছবি সংগৃহিত
এ অবস্থায় ঝিলের পানি শোধন করে দুর্গন্ধমুক্ত করতে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। ২০১৮ সালে ৪৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার ওই প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় একনেক। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় রাজউক। এরপর নানা জটিলতায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয় একাধিকবার।
সম্প্রতি এই প্রকল্পটির কাজের অগ্রগতি নিয়ে রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী এবং হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক এএসএম রায়হানুল ফেরদৌস গণমাধ্যমকে বলেন, হাতিরঝিলের পানি শোধন প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। তারমতে আগামী জুনের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে।
ঝিলের পানি শোধন ও দুর্গন্ধমুক্ত করতে এই প্রকল্পটির কাজ প্রায় শেষের দিকে আছে। গত বছর করোনা প্রাদুর্ভাবের পর দীর্ঘসময় প্রকল্পের কাজ বন্ধ ছিল। যে কারণে কাজের মেয়াদ কিছুটা বাড়ানো হয়েছিল। তবে আমাদের (রাজউক) কাজ এবার শেষ পর্যায়ে। জুন মাসের মধ্যেই এই কাজ শেষ করতে পারব। এই বিষয়ে রাজউকে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
হাতিরঝিলের আশপাশের বাসাবাড়ির বর্জ্য ঝিলে পড়ার কারণে এখানকার পানি দূষিত হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় লেকের বিভিন্ন স্থান থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাওয়া প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, হাতিরঝিলের পানি ‘অগ্রহণযোগ্য’ পর্যায়ে দূষিত। এ পানি জলজ প্রাণের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ পানি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য মারাত্মক হুমকি। এসব কিছু বিবেচনা করে প্রকল্পটি গ্রহণ করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
# কাশেম