দূরবীণ নিউজ ডেস্ক:
করোনা আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশ পুলিশের ৯০ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৮৪ জন পুলিশে এবং ৬জন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে (র্যাব) কর্মরত ছিলেন।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, সাধারণ মানুষকে বিধিনিষেধ পালন করানো, প্রবাসীদের
কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা, মৃত ব্যক্তিদের দাফনে সহযোগিতাসহ নানান মানবিক কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ।
শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) সকালে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মো. সোহেল রানা গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের মোট ২০ হাজার ২৯১ জন সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মাঝে নারী পুলিশ সদস্য ৮৪৩ জন এবং পুরুষ সদস্য ১৯ হাজার ৪৪৮ জন। এছাড়া আনসারে ৯৫ জন ও সিভিল স্টাফ আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭৬ জন। মৃত্যুর সংখ্যা বেশি ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি)।
তিনি বলেন, ‘গত বছরের ২৮ এপ্রিল পুলিশে প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর পর থেকে এ পর্যন্ত পুলিশে আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজার ২৯১ জন। বেশি আক্রান্ত হয়েছেন ডিএমপিতে, ৩ হাজার ৪১৩ জন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্ত র্যাবে, ২ হাজার ৬২৯ জন।’
তিনি আরও জানান, আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ১৯ হাজার ৩৯৬ জনই সুস্থ হয়েছেন।
গতবৃহস্পতিবার পুলিশ বাহিনীর ২৩৫ জন কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। তাদের মধ্যে ১৮ জন র্যাব সদস্য রয়েছেন।
পুলিশ সদর দফতর জানায়, করোনায় পুলিশে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গত বছরের ২৮ এপ্রিল। ওই দিন মারা যান কনস্টেবল জসিম উদ্দিন (৪০)। তিনি ডিএমপির ওয়ারী ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন।
সর্বশেষ মারা যান নরসিংদী পুলিশ লাইনসের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান (৫৬)। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর গত ২০ মার্চ তাকে রাজধানীর রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ এপ্রিল রাতে তার মৃত্যু হয়।
এআইজি সোহেল রানা বলেন, ‘দেশে করোনা বিস্তারের শুরু থেকে জনগণের সেবা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মানুষের জন্য সর্বোচ্চ ঝুঁকি নেয়ায় একক পেশা হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা সর্বোচ্চ সংখ্যায় করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন ও মৃত্যুবরণ করেছেন।’
করোনা পরিস্থিতিতে পুলিশের কাজ চালিয়ে নিতে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) তৈরি করেছে পুলিশ। এসওপি অনুযায়ী, কাজের সময় প্রত্যেক পুলিশ সদস্যের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
হাসপাতালে রোগী নেয়া বা লাশ দাফনের সময় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) পরতে হবে। জনসমাগমস্থলে দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। জীবাণুনাশক দিয়ে হাত পরিষ্কার রাখতে হবে। সুষম খাবার খেতে হবে এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।#