দূরবীণ নিউজ ডেস্ক:
করোনায় আক্রান্ত হয়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী মারা গেছেন।
বুধবার (৭ এপ্রিল) সকাল ১০টা ২০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
জানা যায়, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী গান লেখা, সুর করা ও গাওয়া ছাড়াও লোকগান সংগ্রহ করতেন। গত ৫০ বছরে এক হাজার কবির লেখা কয়েক লাখ গান সংগ্রহ করেছেন গানের রাজবংশী।
গত বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) বুকে ব্যথা অনুভব করলে মহাখালী মেট্রোপলিটন হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করান স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক ইন্দ্রমোহন রাজবংশী। পরীক্ষায় তার করোনা পজিটিভ আসে। সেই সঙ্গে ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়ে।
পরে গত ৩ এপ্রিল তাকে রাজধানীর মালিবাগের প্রশান্তি হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। পরবর্তীতে ৪ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এরপর অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানেই আজ মারা যান তিনি।
শিল্পীর ভাই অনঙ্গম রাজবংশী ও শ্যালিকা শিপ্রা ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে তিনি রেখে গেছেন স্ত্রী দীপ্তি রাজবংশী, পুত্র রবীন রাজবংশী ও মেয়ে প্রবাসীকে। তারা নিজেরাও লোকগানের সঙ্গে জড়িত।
ইন্দ্রমোহন রাজবংশী মূলত লোকগানের শিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা। তিনি শুরুর জীবনে ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী, জারি, সারি, মুর্শিদি ইত্যাদি গান গেয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন গ্রাম-বাংলায়। পরবর্তীতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান গেয়ে নিজেকে রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ২০১৮ সালে সংগীত বিভাগে একুশে পদক লাভ করেন ইন্দ্রমোহন।
শিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশীর পরিবারের পাঁচ পুরুষ ধরে গান লেখার সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি নিজে মূলত লোকগানের শিল্পী। সংগীত কলেজে লোকসংগীত বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন।
১৯৫৭ সালে ছোটদের আসরে গান করতে শুরু করেন তিনি। ১৯৭১ সালে সরাসরি অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানিদের হাতে ধরা পড়ে ভিন্ন নামে দোভাষীর কাজ করতে হয় ক’দিন। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা দিতে তিনি যুক্ত হন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে।#/