আবুল কাশেম, দূরবীণ নিউজ:
প্রাণঘাতি করোনা প্রতিরোধে রাজধানী সহ সারাদেশে সরকারের ঘোষিত সপ্তাহব্যাপী ‘লকডাউন’ নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানুষের জীবনকে ঝুঁকি মুক্ত রাখতে প্রশাসনকে মাঠে- ময়দানে সক্রিয় ভূমিকা পালনের নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এবং সরকারের সিদ্ধান্তে আজ সোমবার (৫ এপ্রিল) ভোর ৬ টা থেকে শুরু হয়েছে সারাদেশে লকডাউন। তবে এই লকডাউন কত টুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে,তা নিশ্চিত করার জন্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাঠে কাজ করছেন র্যাব, পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বাধীন বেশ কিছু মোবাইল কোর্ট।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায় লকডাউন উপেক্ষা করে লোকজন দোকান পাট খোলা রেখেছেন এবং ওইসব দোকান পাটে প্রচন্ড ভীড় দেখা গেছে। পুরান ঢাকায় ও নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়িরা দোকান পাট খোলা রাখার দাবীতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।
তবে লকডাউন বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সহায়ক শক্তি হিসেবে বিভিন্ন টেলিভিশন, পক্রিকা, সংবাদ সংস্থা এবং অনলাইন নিউজ পোটালের সাংবাদিকরাও জীবীনের ঝৃুঁকি নিয়ে মাঠে ময়দানে সচিত্র সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশন করে যাচ্ছন। কিন্তু কতিপয় মতলববাজ কর্মকর্তা লকডাউনকালে মাঠে- ময়দানে গণমাধমের উপস্থিতিকে স্বাভাবিকভাবে দেখেন না। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন, ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সালেহা বিনতে সিরাজ।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সালেহার বিরুদ্ধে সাংবাদিকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ:
এদিকে রাজধানীর মিরপুরে লকডাউনে নিয়ে ডিএনসিসির মোবাইল কোর্টের সচিত্র নিউজ সংগ্রহ করতে এসে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের রোসানলে পড়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় খ্যাতনামা ‘সংবাদ সংস্থা ইউএনবি’র” সিনিয়র সাংবাদিক এম. জাহাঙ্গীর আলম। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও তাকে ওই মোবাইল কোর্টের ছবি তোলা এবং ভিডিও চিত্র ধারন করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাকে রীতিমতো নাজেহাল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সাংবাদিক এম জাহাঙ্গীর আলেম এ প্রতিনিধিকে জানান, আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় মিরপুর থানার পিছনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের একটি মোবাইল কোড দেখতে পাওয়া যায়। সকাল থেকে দোকানপাট খোলা থাকলেও মোবাইল কোড দেখে একের পর এক দোকান বন্ধ করতে দেখা যায়। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সালেহা বিনতে সিরাজ।
ইউএনবি সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেন্ট এম জাহাঙ্গীর আলম মোবাইল কোর্ট কার্যক্রমের ভিডিও ধারণ করতে থাকলে ম্যাজিস্ট্রেট বাধা প্রদান করে। পরবর্তীতে পরিচয় জানতে চাইলে আইডি কার্ড দেখানোর পরেও ভিডিও ধারণ করতে দেয়নি।
পাশাপাশি মোবাইল কোর্টে দায়িত্বরত মিরপুর থানার এসআই সাদ্দাম প্রতিবেদক এর সাথে প্রচন্ড দুর্ব্যবহার করে।
তিনি আরো জানান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পাবলিক রিলেশন অফিসার এস এম মামুন ভাইকে টেলিফোনে বিষয়টি জানালে তিনি ম্যাজিস্ট্রেট সালেহা বিনতে সিরাজকে এ প্রতিবেদক এর পরিচয় নিশ্চিত করার পরেও ভিডিও ধারণ কিংবা ছবি তুলতে দেয়নি। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমার কর্তব্য কাজে বাধা সৃষ্টি করে।
এই অভিযোগ পাবার পর, দূরবীণ নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে একাধিকবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সালেহা বিনতে সিরাজকে মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি এই প্রতিবেদকের ফোনটি রিসিপ করেননি। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তার ‘ওয়ার্টঅ্যাপে’ খুদেবার্তা পাঠানোর পর আবার ফোন করা হয়। তিনি ফোনটি রিসিপ করেননি।
উক্ত ঘটনা নিয়ে ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মামুনের সাথে এই প্রতিবেদক কথা বলেন। তিনি জানান, মোবাইল কোর্টে ছবি এবং ভিডিও চিত্র ধারন করার জন্যই তো সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সালেহা বিনতে সিরাজের এই ধরনের অসৌজন্যমূলক আচরণে সত্যিই খারাপ লাগছে। তিনি এর বেশি আর কিছু বলতে চাননি।
সাংবাদিক বান্ধব মেয়রও অধিকাংশ কর্মকর্তা:
ডিএনসিসির মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সচিব, বিভাগীয় প্রধান, অতিরিক্ত প্রধান, উপ প্রধান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, আঞ্চলিক কর কর্মকর্তা ও নির্বাহী প্রকৌশলীদের অনেকেই ‘মিডিয়াবান্ধব /সাংবাদিক বান্ধব’। কিন্তু অনেক দিন থেকেই লক্ষ্য করা হচ্ছে ডিএনসিসির হাতেগোনা দুই একজন পদস্থ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের নাম শোনলেই আতকে উঠেন। মোবাইল কোর্ট কিংবা ডিএনসিসির অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত সাংবাদিকদের জন্য নির্ধারিত আসনটি পর্যন্ত তারা নিজেরা দখল করে রাখেন। #