দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলাস্থ নোয়াপাড়া ইউনিয়নে শাহ্পুরে “মার লি:” নামক কোম্পানীর অননুমোদিত, বিপজ্জনক ও পরিবেশ দূষণ কার্যক্রম প্রতিরোধে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি একাধিক রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এই কারখানার কার্যক্রমের ফলে প্রচুর পরিমাণে তরল বর্জ্য উৎপন্ন হয়ে ওই এলাকার পরিবেশ মারাত্নক ক্ষতি করছে।
সোমবার (১৫ মার্চ) বিচারপতি জনাব মোঃ মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি জনাব মোঃ কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দায়ের কার রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিবাদীদের প্রতি রুলসহ নিদের্শনা জারি করেন।
হাইকোর্ট আদেশ প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে বিাদীদেরকে রুলের জবাব দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উচ্চ আদালতের জারি করা রুলে উল্লেখ করা হয়, বিপজ্জনক “মার লি:” নামক কোম্পানীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতাকে কেন অবৈধ, আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভুত ঘোষণা করা হবে না, জবাব চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জনস্বার্থ বিরোধী ‘মার লি.” নামের প্রতিষ্ঠানটিকে শিল্প এলাকায় স্থানান্তরের নির্দেশ দেয়া হবে না এবং সরকারি খাল রক্ষার নির্দেশ কেন প্রদান করা হবেনা তারও চেয়েছেন।
আদালতে বেলা‘র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং তাকে সহায়তা করেন সাঈদ আহমেদ কবীর।
আদালতের আদেশে এই রিট মামলাটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব; ‘মার লি’. স্বত্তাধিকারী মেসার্স মার লিমিটেড। পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক, মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট), পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক, আলোচিত ‘মার লি’ কোম্পানীর সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখতে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ইটিপি কার্যকরকরণ ব্যতিরেকে দূষিত বর্জ্য পাশ্ববর্তী এক্তিয়ারপুর খালে নির্গমণ করায় খালের পানি সম্পূর্ণরূপে দূষিত হয়ে পড়ে। কারখানা সৃষ্ট দূষিত পানি ও অপরিশোধিত বর্জ্যরে দুর্গন্ধে ছাতিয়াইন ইউনিয়নের শ্রমিতপুর, দাসপাড়া, ছাতিয়াইন উত্তর, ছাতিয়াইন দক্ষিণ, সাকুচাইল, পিয়াইম, শিমুলঘর গ্রামসহ আশেপাশে অবস্থিত অন্যান্য উপজেলাধীন একাধিক গ্রামের বাসিন্দাগণ অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে।
অসহনীয় এ দূষণের প্রতিবাদে এলাকাবাসী বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন, রাস্তা অবরোধসহ নানা কর্মসূচী পালন করে। ইতোপূর্বে উল্লেখিত কোম্পানীর ক্রমাগত পরিবেশ দূষণ এবং এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার ক্ষতিসাধনের অভিযোগে পরিবেশ অধিদপ্তর ২০১৭ সালে ১৭ লাখ ১০ হাজার এবং পরবর্তীতে পূনরায় ২০১৮ সালে পয়ত্রিশ লাখ ৭ হাজার ৮ শত চল্লিশ টাকা জরিমানা ধার্য করে।/