দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
বহুল আলোচিত নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তাঁর স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনের বিরুদ্ধে ৬ কোটি ২৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় চার্জশিটের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন ( দুদক)।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুদকের নীতি নির্ধারনী কমিটির সভায় অত্যন্ত প্রভাবশালী আসামি শামীমা নূর পাপিয়া ও তাঁর স্বামী মফিজুর রহমান বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতে চার্জশিট দাখিলের জন্য তদন্ত প্রতিবেদনটি অনুমোদন দিয়েছেন।
দুদকের পরিচা্লক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ফলে যে কোনদিন আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় ফরোয়াডিংসহ চার্জশিট দাখিল করবে তদন্ত কর্মকর্তা।
তিনি আরো জানান, গত বছর ৪ আগস্ট দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে শামীমা নূর পাপিয়া এবং স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়,মামলার অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, গত বছরের ১২ অক্টোবর থেকে র্যা ব কর্তৃক গ্রেফতার হওয়ার দিন অর্থাৎ চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গুলশানের একটি বিলাসবহুল হোটেলের প্রেসিডেনশিয়াল স্যুট এবং চেয়ারম্যান স্যুটসহ ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্টুরেন্ট (খাবার), রেস্টুরেন্ট (মদ), স্পা, লন্ড্রি, মিনিবার ফুড, মিনিবার বাবদ মোট ৩ কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬০ টাকার বিল শামীমা নূর পাপিয়া নিজেই ক্যাশে পরিশোধ করেন।
তিনি বিলাসবহুল জীবনযাপন পছন্দ করতেন বিধায় ওই বিলাসবহুল হোটেলে থাকাবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিং করেছেন বলে জানান।
পাপিয়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছর মাসিক ৫০ হাজার টাকা হারে ৩০ লাখ টাকা বাসাভাড়া দিয়েছেন। গাড়ির ব্যবসায় ১ কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশনে ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। বিভিন্ন ব্যাংকে তার ও তার স্বামীর নামে ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকা জমা আছে।
র্যাব পাপিয়ার বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। মফিজুর রহমান সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের একটি গাড়ি আছে, যার দাম ২২ লাখ টাকা। এভাবে ৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৭১৮ টাকা জ্ঞাতসারে অপরাধলব্ধ আয়ের মাধ্যমে অর্জনপূর্বক তা খরচ করে পাপিয়া-সুমন দম্পতি। এসব টাকা অজর্নের পক্ষে কোনো বৈধ উৎস তারা দেখাতে পারেননি।
এসব সম্পদ অর্জনের আয়ের উৎসের সপক্ষে কোনো দালিলিক রেকর্ডপত্রাদি/প্রমাণাদি উপস্থাপন না করায় ৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৭১৮ টাকার সম্পদ তাদের জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদ বলে প্রতীয়মান হওয়ায় এবং জ্ঞাতসারে অপরাধলব্ধ আয়ের দ্বারা অর্জিত ওই পরিমাণ জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ তাদের ভোগদখলে রেখে অভিযুক্ত শামীমা নূর পাপিয়া এবং তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনের বিরুদ্ধে দুদক আইন-২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল।/