দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
রাজধানীর মিরপুরের কাজীপাড়ায় উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে ভবন নির্মাণের অপরাধে বিল্লাল হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট। আদালত একই সঙ্গে আগামী দুই মাসের মধ্যে জরিমানার এই অর্থ ঢাকার আহছানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালে দিতে বলেছেন।
হাইকোর্টের আদেশে আরো বলা হয়েছে, উচ্চ আদালতের অমান্যের ঘটনায় বিল্লাল হোসেন ও শহীদুল ইসলাম জুয়েল নামে দুই ব্যক্তির করা পৃথক দুটি রিট আবেদনও নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (রাজউক) চেয়ারম্যানকে বিল্লাল হোসেনের আবেদনটি নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন রাজউকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইমাম হোসেন।
আজ বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে ভবন মালিক বিল্লাল হোসেনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফিরোজ উদ্দিন আহমেদ। বিবাদীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ বি এম রফিক উল্লাহ ও হুমায়ুন কবির পল্লব। রাজউকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইমাম হোসেন।
এ বিষয়ে আইনজীবী হুমায়ুন কবির পল্লব বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনায় স্থিতাবস্থা (যেমন আছে তেমনি থাকবে) থাকার পরও ভবন নির্মাণের অপরাধে মিরপুরের কাজীপাড়ার বিল্লাল হোসেনকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন আদালত। বিল্লাল হোসেনকে আগামী দুই মাসের মধ্যে ঢাকার আহছানিয়া ক্যান্সার হাসপাতালে টাকা দিতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, রাজউকের বিধি অমান্য করে ভবন নির্মাণ শুরু করেন মিরপুরের কাজীপাড়ার বিল্লাল হোসেন নামে এক বাড়ির মালিক। তখন পাশের বাড়ির শহীদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে রাজউকের কাছে আবেদন করেন।
আবেদন পেয়ে রাজউক তদন্ত করে ভবনের মালিককে নোটিশ দেয়। একই সঙ্গে নির্মাণাধীন ভবনটি ভেঙে ফেলারও নির্দেশ দেয়। পরে রাজউকের ওই নোটিশের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেন ভবনের মালিক। সেখানে প্রতিকার না পেয়ে ভবন মালিক হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। কিন্তু বিল্লাল হোসেন হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা অমান্য করে ভবন নির্মাণ অব্যাহত রাখেন।
যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেশী শহীদুল ইসলাম জুয়েল আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে রিট করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মিরপুরের কাজীপাড়ায় বিল্লাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি নিজের জমিতে ২০১৮ সালে পাঁচতলা ভবন নির্মাণের জন্য রাজউকের অনুমোদন নেয়। কিন্তু রাজউকের নিয়ম অনুযায়ী ভবনের কাজ না করায় পাশের প্লটের মালিক শহীদুল ইসলাম জুয়েল রাজউকে অভিযোগ করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে রাজউক তদন্ত করে ওই বছরই বাড়ির মালিককে ভবন ভেঙে ফেলার নোটিশ দেয়।
কিন্তু বাড়ির মালিক বিষয়টিতে ভ্রূক্ষেপ না করলে রাজউক এ ব্যাপারে চূড়ান্ত নোটিশ দেয়। পরে বাড়ির মালিক রাজউকের নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন। পরে আদালত রাজউকের আদেশ অমান্য করায় ওই বাড়ি নির্মাণের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন।
হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা জারি থাকা অবস্থায়ই ওই ব্যক্তি ভবনের নির্মাণকাজ অব্যাহত রাখেন। স্থিতাবস্থার মধ্যেই ভবনটির তিনতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত নির্মিত হয়। পরে এ মামলার পক্ষভুক্ত আরেক ব্যক্তি হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় বাড়ির মালিক বিল্লাহ হোসেনের বিরুদ্ধে নতুন করে একটি আদালত অবমাননার পিটিশন দায়ের করেন।
আদালত বাড়ির মালিকের রিট ও আদালত অবমাননার বিষয়ে অপর রিটটি শুনানি হয়। আদালত দুটি রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেন।/