দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
দেশের অর্থ বিদেশে পাচারকারী ও সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের যাবজ্জীবন সাজার বিধান রাখার দরকার ছিল বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। কারণ বর্তমানে অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে সাজার পরিমাণ অনেক কম।
বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) অর্থপাচার মামলায় দণ্ডিত এক আসামির জামিন আবেদনের শুনানিকালে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।হাইকোর্ট একইসঙ্গে ওই আসামিকে জামিন না দিয়ে তার আবেদন নথিভুক্ত করার আদেশ দেন।
আজ বৃহস্পতিবার আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজিম। অপরদিকে আসামি পক্ষে ছিলেন মো. আনোয়ারুল ইসলাম।
হাইকোর্ট বলেন, ‘আইনে সাজার পরিমাণ অনেক কম। এ ধরনের গুরুতর অপরাধের জন্য আইনে যাবজ্জীবন সাজার বিধান রাখার দরকার ছিল। লঘুদণ্ড দিয়ে অর্থপাচারের মতো দুর্নীতির অপরাধ রোধ করা যাবে না। প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে সাজার পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে।’ কর্তমানে অর্থপাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে আইনে ১২ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
দুদকের আইনজীবী গণমাধ্যমকে জানান, ১৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগে ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর নিউমার্কেট থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। এ মামলায় ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নয় জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আতাবুল্লাহ।
বিচারিক আদালতের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বিসমিল্লাহ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাজা সোলেমান আনোয়ার চৌধুরী, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নওরিন হাসিব, খাজা সোলেমানের বাবা সফিকুলআনোয়ার চৌধুরী, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আকবর আজিজ মুতাক্কি, মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবুল হোসেন চৌধুরী, ব্যবস্থাপক রিয়াজউদ্দিন আহম্মেদ, নেটওয়ার্ক ফ্রেইট সিস্টেম লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন এবং জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা মোস্তাক আহমদ খান ও এস এম শোয়েব-উল-কবীর।
রায়ে আসামিদের ১৫ কোটি ৩৩ লাখ ৬১ হাজার ৬৮৬ টাকার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থ জরিমানাও করেছেন আদালত। ওই অর্থ ৬০ দিনের মধ্যে তাদের রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়েছে।
দণ্ডের সময় সবাই পলাতক থাকলেও ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর মোস্তাক আহমদ খান ও এস এম শোয়েব-উল-কবীর আত্মসমর্পণ করেন। এরপর শোয়েব-উল কবীর নিম্ন আদালতের সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন। এই আপিল এখন হাইকোর্টে বিচারাধীন। এরপর তিনি জামিন আবেদন করেন।/