দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
বহুল আলোচিত এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের আরো ১০টি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের ১৪ সহযোগীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বর্তমানে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অর্থ পাচারের অভিযোগে দুদকের মামলার প্রধান আসামি পিকে হালদার কানাডায় আত্মগোপন করে আছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের স্বাক্ষরিত তলবি নোটিশে আরো ১০টি ‘ভুয়া কোম্পানি’ সংশ্লিষ্ট ১৪ জনকে আগামী ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯ টায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়।
দুদকের পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তলবি নোটিশ প্রাপ্তদের মধ্যে ৭জনকে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি তলব করা হয়েছে। এই ৭ জন হলেন- আর বি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রতন কুমার বিশ্বাস, আর্থস্কোপ লিমিটেডের এমডি প্রশান্ত দেউরি, পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, নিউট্রিক্যাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান স্বপন কুমার মিস্ত্রি, ওয়াকামা লিমিটেডের চেয়ারম্যান সুব্রত দাস, পরিচালক সুভ্রা রাণী ঘোষ, পরিচালক তোফাজ্জ্বল হোসেন।
এছাড়া আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি তলবি নোটিশ প্রাপ্ত ৭ জন হলেন- কোলাসিন লিমিটেডের এমডি উত্তম কুমার মিস্ত্রি, চেয়ারম্যান অতশী মৃধা, হাল ইন্টারন্যাশল লিমিটেডের এমডি সুস্মিতা সাহা, জি অ্যান্ড জি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী গোপাল চন্দ্র গাঙ্গুলী, দ্রিনান অ্যাপারেলেসের এমডি মোহাম্মদ আবু রাজিন মারুফ, কণিকা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রাম প্রসাদ রায় ও ইমেক্সোর স্বত্বাধিকারী ইমাম হোসেন।
নোটিশ প্রাপ্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা পি কে হালদারের সহযোগিতায় ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ‘ঋণের নামে কোটি কোটি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন।
জানা যায়, গত ২৫ জানুয়ারি ‘ভুয়া ও কাগুজে’ পাঁচটি কোম্পানির নামে ৩৫১ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন ও আত্মসাতের অভিযোগে পি কে হালদারসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা দায়ের করেছে দুদক।
এর এক মামলায় পি কে হালদারের সহযোগী পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের চেয়াররম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসর সাবেক এমডি রাশেদুল হকে ওই দিনই গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের মধ্যে রাশেদুলকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা।
আরো অভিযোগ রয়েছে, পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।
এই চার কোম্পানি হল- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)।
এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য।এর মধ্যে আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে গত বছরের শুরুতে পি কে হালদারের বিদেশ পালানোর পর দুদক তার ২৭৫ কোটি টাকার ‘অবৈধ সম্পদের’ খবর দিয়ে মামলা করে। /