দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সাময়িক বরখাস্ত মিজানুর রহমান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতে সাক্ষ্যি হাজির করাতে ব্যর্থ হচ্ছেন রাষ্ট্র পক্ষ। ফলে দুদকের করা মামলায় ওই সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ২৬ জানুয়ারি পুনরায় তারিখ ধার্য করেছেন বিচারিক আদালত।
বুধবার (৬ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালত ওই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আদালতে কোনো সাক্ষী না আসায় সময়ের আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ।
পরে আদালত রাষ্ট্র পক্ষের সময়ের আবেদন মঞ্জুর করেন এবং পুনরায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ২৬ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।
জানা যায়, এই মামলায় ১৭ সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে আরো অনেক আগেই। তবে বাকী ৭ জন সাক্ষ্যিকে হাজির করতে বারবার ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে রাষ্ট্র পক্ষের বিরুদ্ধে।
এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য থাকলেও ওইদিন কোনো সাক্ষ্যি হাজির হয়নি। পরে বিচারিক আদালত ২১ ডিসেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নতুন দিন ধার্য করেন। কিন্তু এই ২১ ডিসেম্বরও আদালতে কোনো সাক্ষ্যি হাজির হয়নি। পরে আদালত ৬ জানুয়ারি পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন। তবে আজ ৬ জানুয়ারিও রাষ্ট্রপক্ষ কোনো সাক্ষ্যি বিচারিক আদালতে হাজির করতে পারেননি। এমনকি পুনরায় সময় চেয়ে বিচারিক আদালতে আবেদন জানান। পরে আদালত ২৬ জানুয়ারি নতুন তারিখ ধার্য করেন।
জানা যায়, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার থাকাকালে বিয়ে গোপন করতে মিজানুর রহমান ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুলিশকে ব্যবহার করে তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে গ্রেফতার করান। এছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) হয়।
নারী নির্যাতনের অভিযোগে ২০১৯ সালের জানুয়ারির শুরুর দিকে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়। এরপর ওই বছরের ২৪ জুন সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা অভিযোগ দায়ের করা দুদকের একটি মামলার তদন্ত ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা ছিলেন দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির।
এদিকে ডিআইজি মিজান অভিযোগ করেন, এই মামলার তদন্ত চলাকালে তাকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক এনামুল বাছির।
পরে এ অভিযোগ ওঠার পর দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা এনামূল বাছিরকে সরিয়ে দুদকের আরেক পরিচালক মো. মঞ্জুর মোরশেদকে অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়।
আর ৪০ লাখ টাকার ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুদকের পরিচালক ফানাফিল্যাকে প্রধান করে তিন সদস্যের দলকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয়।
এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই মিজান ও বাছিরের বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাটি করেন দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও তিনি।
২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েসের আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা।
৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস আসামিদের উপস্থিতিতে এ চার্জশিট গ্রহণ করেন। ১৮ মার্চ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।/