দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
দেশের বহুল আলোচিত বিডিআর বিদ্রোহ ও পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামির পক্ষ থেকে আপিলের (লিভ টু আপিল) অনুমোদন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করা হয়েছে।
বুধবার (৬ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় নথিপত্রসহ ৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪৫ পৃষ্ঠার আবেদনটি জমা দেয়া হয়েছে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গত ‘মঙ্গলবার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কামাল মোল্লা, মনিরুজ্জামান, ইউসুফ আলী, আবু সাঈদ আলম, সাঈদুর রহমান, আনিসুজ্জামান, ফজলুল করিম, বজলুর রশীদসহ ৯ জনের আবেদন আপিল বিভাগের দাখিলের জন্য নিয়ে আসেন।
তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায়ের আনুষঙ্গিক কাগজপত্রসহ মোট পৃষ্ঠাসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪৫টি।
তিনি আরো বলেন, সাজাপ্রাপ্ত অপর আসামিদের ক্ষেত্রে যেন এসব নথি না দিতে হয় সে ব্যাপারে প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করা হয়েছে।প্রধান বিচারপতি অনুমতি দিলে আগামী ১৩ জানুয়ারির মধ্যে ওই আসামিরা লিভ টু আপিল করতে পারবেন।’
জানা যায়, সম্প্রতি হাইকোর্টে খালাসপ্রাপ্ত এবং যাদের সাজা কমানো হয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও আপিল আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ১৫২ জন বিডিআর সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২৫৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ২৭৮ জনকে খালাস দিয়ে রায় দেন বিচারিক আদালত। ওই রায়ের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর হাইকোর্ট ২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন। ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার হাইকোর্টের রায় প্রকাশ হয়।
২০১৭ সালে হাইকোর্টের রায় প্রকাশের পর ওই বছর ৮ জানুয়ারি প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়ে ছিলেন, রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। এর মধ্যে একজন মারা গেছেন। বাকি ১২ জনের মধ্যে ৮ জনের সর্বোচ্চ সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও অন্য চারজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। যাবজ্জীবন দেয়া হয়েছে ১৮৫ জনকে। তার ভেতরে একজন মৃত্যুবরণ করেছেন।
এছাড়া ১৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন দু’জনকে। ১৫৭ জনকে ১০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন, এর ভেতর দু’জন মারা গেছেন। ১৩ জনকে সাত বছর, ১৪ জনকে ৩ বছর, ১ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে দু’জনকে। মোট ৫৫২ জনকে সাজা এবং ২৮৩ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে। মোট মারা গেছেন ১৪ জন।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। ওই বিদ্রোহের সময় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন।/