দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
হাইকোর্ট আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের নাম, ঠিকানাসহ সুনিদিষ্ট তথ্য উপাত্ত্ব দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন। হাইকোর্টের নির্দেশ প্রাপ্তরা হলেন,দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, এনবিআর চেয়ারম্যান।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।এরআগে হাইকোর্টে অর্থ পাচার বিষয়ে দুদকসহ ৬টি রাষ্ট্রীয় সংস্থার পক্ষ থেকে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
কিন্তু হাইকোর্ট দাখিলকৃত প্রতিবেদনের ওপর সন্তোষ্ট হতে পারেননি।বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন ধরনের তথ্য-উপাত্ত প্রতিবেদন আকারে জমা দেয় দুদক ও রাষ্ট্রের আরো ৫টি সংস্থা।
প্রতিবেদনে পুরোনো মামলার তথ্য থাকায় দুদকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন আদালত। তাই আরো বিস্তারিত তথ্য চাইলে রাষ্ট্রপক্ষ সময় চেয়ে আবেদন জানান। পরে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে অংশ নিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তাহমিনা পলি।
অপরদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। আরও শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
প্রতিবেদন দেখে হাইকোর্টের বিচারপতিদ্বয় বলেন, ‘এখানে ২২ অক্টোবর হাইকোর্টের দেয়া আদেশের পরের কোনো আপডেট তথ্য নেই। তাই আদালত বলেছেন, আমরা অর্থ পাচারকারীদের নাম জানতে চাই। আপনারা নতুন নাম বলুন। সম্রাট তো কারাগারেই আছেন, আর নতুন করে অন্যান্য কারা জড়িত তাদের নাম বলুন। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হলেও দুদক মাত্র ৪১ কোটি টাকা আদায় করতে পেরেছে। দেশের ১৮ কোটি মানুষ, তাদের মধ্যে গুটিকয়েক মানুষ অর্থ পাচার করে। তাদের সবার জানার অধিকার আছে। আমরা অর্থ পাচারকারীদের নাম-ঠিকানা জানতে চাই।’
এর আগে সম্রাটসহ অর্থ পাচারকারীদের একশ নামসহ প্রতিবেদন জমা দেয়া হয় হাইকোর্টে। এরপর এ বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানিতে এমন মন্তব্য করেন আদালত। পরে এ বিষয়ে অগ্রগতির প্রতিবেদন জানাতে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট। ওইদিন শুনানি হওয়ারও কথা রয়েছে।
এর আগে বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়ে পাঁচটি সংস্থা হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে। কানাডায় অর্থ পাচারের বিষয়ে সে দেশের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইএইউ)।
এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সব মিশন অর্থপাচারের রিপোর্ট দিলে সঙ্গে সঙ্গে তা আদালতে দাখিল করা হবে। অন্যদিকে এখন পর্যন্ত দুদকের মামলার হিসাবে ২৫০০ কোটি টাকা অর্থ পাচার হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে দুদক।
সিআইডি জানিয়েছে, ক্যাসিনো ব্যবসায়ী ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটসহ সাতজন হ্যাকারদের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কায় অর্থ পাচার করেছে। শুধু সম্রাট এবং এনামুল হক আরমানই ২৩২ কোটি ৩৭ লাখ ৫৩ হাজার ৬৯১ টাকা সিঙ্গাপুরে পাচার করেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।/