দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
আগামী ২৭ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাজির হতে হবে সরকারের বেতন ভুক্ত আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) জান্নাতুল ফেরদৌসী রুপাকে।
গত ৩ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ডিএজি রুপাকে ওই সময়ের মধ্যে দুদকে হাজরি হবার জন্য বলেছেন।
এরআগে দুদকের তলিবি নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ডিএজি জান্নাতুল ফেরদৌসী রুপার দায়ের করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ। এভন রিট খারিজের ফলে ডিএজি রুপাকে দুদকে উপস্থিত হতে হবে। হাইকোর্ট আগামী ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছেন তাকে।
ওইদিন আদালতে রিট আবেদনকারী রুপার পক্ষে ছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী ও সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, সালাহ উদ্দিন দোলন, সুরাইয়া বেগম, ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
এ বিষয়ে খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, দুদকে হাজিরের জন্য দেয়া নোটিশের বৈধতা নিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জান্নাতুল ফেরদৌসী রুপার করা রিট আবেদন আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। এখন তাকে দুদকে যেতে হবে। তবে তার আইনজীবী বলেছেন, তিনি অসুস্থ। এ কারণে ২৭ জানুয়ারি বা তার আগে তাকে দুদকে যেতে সময় দিয়েছেন আদালত।
ডিএজি রুপার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঘুষ নিয়ে জিকে শামীমসহ বিভিন্ন আসামির সঙ্গে আঁতাত করে জামিন করিয়ে বিপুল অর্থ লোপাটসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। ওই সব অভিযোগের অনুসন্ধানে ডিএজি রুপাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুদক। গত ২৯ অক্টোবর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম স্বাক্ষরিত নোটিশে এ তলবাদেশ দেওয়া হয়।
দুদকের তলবি নোটিশে বলা হয়, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জান্নাতুল ফেরদৌসী রুপার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ঘুষ নিয়ে জিকে শামীমসহ বিভিন্ন আসামির সঙ্গে আঁতাত করে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
এ অবস্থায় উল্লিখিত অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য দেয়ার জন্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রুপাকে গত ৪ নভেম্বর সকাল ১০টায় জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্টের কপি ও প্রয়োজনীয় নথি-পত্রসহ হাজির হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। যা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, সুপ্রিম কোর্ট, কক্ষ নং-২০৯ ঠিকানা বরাবর পাঠানো হয়। পরে গত ১ নভেম্বর ওই নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করেন জান্নাতুল ফেরদৌসী রুপা। আবেদনে নোটিশের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।
জানা যায়, রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশেনর চেয়ারম্যান, দুদকের মহাপরিচালক (বিশেষ অনুসন্ধান এবং তদন্ত-২) এবং উপ-পরিচালককে (বিশেষ অনুসন্ধান এবং তদন্ত-২) বিবাদী করা হয়।
পরে তার অসুস্থতার কারণে ৩ নভেম্বর শুনানি নিয়ে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিটটি মুলতবি করেছিলেন হাইকোর্ট। ওই দিন খুরশীদ আলম খান বলেছিলেন, আদালত ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিট শুনানি মুলতবি করেছেন। পিটিশনার অসুস্থ। এজন্য দুদকে হাজিরে সময় চাইলে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাকে সময় দিতে বলেছেন আদালত। আবেদনের পর দুদক তাকে সময় দেন।
এদিকে নির্ধারিত দিনে ৩ ডিসেম্বর আবেদনটি ফের কার্যতালিকায় ওঠে। শুনানি শেষে রিট আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেন আদালত।