দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক সৈয়দ নাসির উদ্দিন আহাম্মদের বিরুদ্ধে প্রায় ২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক ফেরদৌস রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
দুদক পরিচালক ও জনসংযোগকর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য গণমাধ্যমকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, আসামির নাসির উদ্দিন দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে এক কোটি ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৪০ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির তথ্য গোপন বা মিথ্যা দিয়েছেন। যা দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অন্যদিকে তার আয় ও ব্যয়ের হিসাব আমলে নিয়ে স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট ৮০ লাখ ২৯ হাজার টাকার সম্পত্তি মালিকানা অবৈধ উপায়ে অর্জন করেছেন।
যে কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারার অভিযোগ আনা হচ্ছে নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে সৈয়দ নাসির উদ্দিন এক কোটি ৯৭ লাখ টাকার বেশি স্থাবর– অস্থাবর অবৈধ সম্পদ গড়েছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।
দুদকের নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৬ মে নাসিরউদ্দিনের দাখিলকরা সম্পদ বিবরণীতে তিনি ১৭ লাখ ৫৫ হাজার ৬২৩ টাকার স্থাবর ও ৯ লাখ ৪০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পত্তি মিলিয়ে মোট ২৬ লাখ ৯৫ হাজার ৬২৩ টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন।
অবৈধ সম্পদের মধ্যে নাসির উদ্দিনের নামে আইএফআইসি ব্যাংকের মিরপুর শাখায় এফডিআর হিসাবে ১ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। যার হিসাব নম্বর -১০১০৩৮১০৬০২০১ ও ১০১৩৩৮১০৬০২০২। এছাড়া একই ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব ও তার প্রতিষ্ঠান সৈয়দ এন্টারপ্রাইজের হিসাবে ৮২ হাজার ৭৬৩ টাকা পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে এক কোটি ৮২ হাজার ৭৬৩ টাকার সন্ধান মিলেছে দুদকের অনুসন্ধানে। যা তিনি তার সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেননি বা গোপন করেছেন।
আসামি নাসির উদ্দিন ও তার ভাই সিবিএ নেতা সৈয়দ আয়েজ উদ্দিন যৌথভাবে ঢাকা জেলার রূপনগর থানার আরামবাগ হাউজিংয়ে (প্লট নং -১৬ , ব্লক- সি) ৩.৬৩ কাঠা জমির ওপর ২ তলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন।
দুদকের দাখিলকরা সম্পদ বিবরণীতে তিনি নির্মাণ বাবদ নাসির উদ্দিনের অংশে ১৪ লাখ ৬৮ হাজার ১২৩ টাকা বিনিয়োগ দেখিয়েছেন। কিন্তু গণপূর্তের বিশেষজ্ঞ কমিটি কর্তৃক যাচাইকালে দেখা যায় বাড়ি নির্মাণে মোট ৪৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ব্যয় হওয়ার কথা। সে হিসেবে নাসির উদ্দিনের ২২ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয় হওয়ার কথা।
অর্থ্যাৎ তিনি ৮ লাখ ১৮ হাজার ৩৭৭ টাকার খরচ কম দেখিয়েছেন। এছাড়া সম্পদ বিবরণী উল্লেখকরা ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও আসবাবপত্রের মূল্যে যথাক্রমে ৩ লাখ ৮৩ হাজার এবং ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকার তথ্য গোপন করেছেন বলে রেকর্ডপত্র ও বিশেষজ্ঞ মতামতে উঠে এসেছে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশনের সিবিএ’র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সহকারী ব্যবস্থাপক সৈয়দ নাসির উদ্দিন ও তার ভাই যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আয়াজ উদ্দিনকে ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে অবৈধ সম্পদের অভিযোগ অস্বীকার করেন নাসির উদ্দিন।
ওই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে অবৈধ গ্যাস-সংযোগ দেওয়া, বাইপাস লাইন দেওয়া, মিটার টেম্পারিংসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ছিল।#