দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
এবার করোনাভাইরাসের হিংস্র থাবায় তছনছ হয়ে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) স্বাভাবিক কার্যক্রম। কর্মকর্তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মহাআতঙ্ক আর গভীর উদ্ভেগের মধ্যে ডিএনসিসির গুলমান-২ নম্বরে নগরভবনসহ আঞ্চলিক অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মেয়র দম্পতি,প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা,প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেঃ জেনাঃ মোঃ জোবায়দুর রহমানসদ্য বিদায়ী প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ,প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ও একাধিক আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রায় দুই ডজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী। বর্তমানে মেয়র এবংপদস্থ কর্মকর্তারা নগর ভবনে না থাকায় নগরভবনে বাইরের লোকজনও আসছেন না, পুরো নগরভবন অফিস ফাঁকা হয়ে গেছে।
ডিএনসিসির বিভাগীয় প্রধান, আঞ্চলিক অফিসের বেশ কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঠান্ডা, কাশি এবং জ্বরে আক্রান্ত হবার খবর পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার আতঙ্কে অনেক কর্মকর্তা ডিএনসিসির গুলশানের নগরভবনে আসছেন না। তাদের অনেকেই এখন বাসায় থেকে মোবাইলে কিংবা ওয়ারল্যাস সেটের মাধমে অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলে জানান নগরভবনের সাধারণ কর্মচারীরা।
এদিকে আজ মঙ্গলবার ডিএনসিসির প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা এএস এম মামুন গণমাধ্যমে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছেন, তিনি (মামুন) গত সোমবার থেকে করোনা আক্রান্ত। বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। তার সুস্থতার পূর্ব পর্যন্ত ডিএনসিসির মিডিয়া সংক্রান্ত যে কোনো প্রয়োজনে মেয়র আতিকুল ইসলামের এপিএস-১ ফরিদ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েকজন বর্তমানে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন ,আবার অনেকে নগরীর অন্যান্য হাসপাতালে আবার কেই বাসায় অভিজ্ঞ চিকৎসকের পরামর্শ মোতাবেক চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা যায়।
ডিএনসিসির নগরভবনসহ আঞ্চলিক অফিসগুলোতে অনেকেই ঠান্ডা,জ্বর ও কাশিতে ভোগছেন, এ পরিস্থিতি করোনাভাইরাসের আতঙ্কে রয়েছেন টপ টু বটম কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডিএনসিসির মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম এবং তাঁর স্ত্রী ডা. শায়লা শগুফতা ইসলামের করোনাভাইরাসের পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে।তিনি গত রোববার (১১ অক্টোবর) সকালে কোভিড টেস্টের জন্য তাঁরা নমুনা দেন এবং রাতে টেস্টের ফল পাওয়া যায়।
মেয়রের এপিএস-২ রিশাদ মোর্শেদও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ডিএনসিসিতে করোনায় আক্রান্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে আরো রয়েছেন,প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোঃ মোজাম্মেল হক,প্রধান সমাজ কল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা তাজিনা সারোয়ার, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল-৪) সালেহা বিনতে্ সিরাজ,আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল-৫) মাসুদ হোসেন,আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল-৭) মোতাকাব্বীর আহমেদ,আঞ্চলিক নির্বহী কর্মকর্তা (অঞ্চল-৩) আবদুল্লাহ আল বাকী, অঞ্চল-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান, অঞ্চল-২ এর সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহমুদা আলী, অঞ্চল-১ এর স্বাস্থ্য পরিদর্শক হারুন পারমানিক,এছাড়াও বেশ কয়জন প্রকৌশী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার খবর পাওয়া গেছে। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল-১) মো: জুলকার নায়ন, তিনি অসুস্থ বোধ করায় করোনা পরীক্ষা করতে দিয়েছেন। এখনো রিপোর্ট পাননি তিনি।
আরো জানান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সদ্য বিদায়ী প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বর্তমান কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুনও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত ৫ অক্টোবর তিনি ডিএনসিসি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিয়েছেন এবং গত ৮ অক্টোবর আইজি প্রিজন্স এর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
সোমবার (১২ অক্টোবর) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন সাংবাদিকদের নিজেই করোনা আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই দুদিন অফিস করেছেন। শরীরটা একটু খারাপ থাকার কারণে করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন। সোমবার সকালে রিপোর্ট আসে করোনা পজেটিভ।
তিনি বর্তমানে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন আছেন। তার রোগমুক্তির জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। ডিএনসিসিতে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনকালে মাঠে ময়দানে সক্রিয় ভূমিকার রেখেছেন।
ডিএনসিসির জনসংযোগ বিভাগের মাধ্যমে মেয়র আতিকুল ইসলামের পরিবারসহ করোনায় আক্রান্ত সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্যদ্রুত রোগমুক্তির জন্য নগরবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে। # কাশেম