দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
রাজধানীর গুলশানে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ পার্কটি শনিবার আনুষ্ঠানিক উব্ধোধন করলেন মেয়র আতিক। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার, ভারতের রাষ্ট্রদূত রীভা গাঙ্গুলী দাস, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নাহিদ এজাহার, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, প্রকল্প পরিচালক ড. তারিক বিন ইউসুফ, স্থপতি ইকবাল হাবিব বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠান শেষে মেয়র আতিকুল ইসলাম, রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার এবং রাষ্ট্রদূত রীভা গাঙ্গুলী দাস একটি করে গাছের চারা রোপন করেন এবং পরে উপস্থিত সবাইকে নিয়ে পার্কটি ঘুরে দেখান।
এই পার্কটির সংক্ষিপ্ত তথ্যাবলী পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো। প্রকল্প ব্যয়ঃ ১৬ কোটি টাকা প্রায়; পার্কের আয়তনঃ ৯ একর, ডিজাইনারঃ ভিত্তি স্থপতিবৃন্দ; ঠিকাদারঃ পিএফ কর্পোরেশন, কাজ শুরুঃ ১৫/৩/২০১৮; কাজ সমাপ্তঃ ১৫/৩/২০২০ ইং তারিখে।
বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ পার্কটি ঢাকা শহরের গুলশান এলাকায় অবস্থিত দূতাবাস এলাকা সংলগ্ন একটি কমিউনিটি পার্ক। এটি ‘গুলশান ট্যাংক পার্ক’ নামেও পরিচিত।
গাছপালা সমৃদ্ধঃ প্রকৃতিগতভাবেই এ পার্কটি বেশ সমৃদ্ধ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১ হাজার ৭০০ বৃক্ষের সন্নিবেশে সজ্জিত।
পার্কের ডিজাইনে জনসম্পৃক্ততাঃ পার্কের ব্যবহারকারীগণ এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিগণের সাথে কয়েক দফা বৈঠকের পর জনসম্পৃক্ততা নিশ্চিত করেই বয়োজ্যেষ্ঠ মহিলা-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোর সকলের জন্যই বিভিন্ন বিনোদন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
হাঁটার পথ ও সাইকেল লেন: এ পার্কে ৫ ধরনের হাঁটার পথ রয়েছে। লাল ইটের হাঁটার পথ, কনক্রিট ব্লকের হাঁটার পথ, সবুজ ঘাস সমৃদ্ধ হাঁটার পথ, ডব্লিউ পি সি (উড প্লাস্টিক কম্পোজিট) প্ল্যাংকের পথ এবং ইলাসটো পেভের বাই সাইকেল লেনের পথ। প্রতিটি হাঁটার পথ নির্মাণে বৃক্ষরাজির সংরক্ষণ এবং প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন রাখাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
টয়লেট, গোসলখানা, জিমনেসিয়াম, নামাজের স্থান: পার্ক ব্যবহারকারীদের জন্য টয়লেট (মহিলা এবং পুরুষ), গোসলখানাসহ জিমনেসিয়াম, ওযূখানাসহ নামাযের স্থান, কেন্টিন ও ৬টি বসার কিয়স্ক রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু কর্ণার: পার্কটিতে বঙ্গবন্ধু কর্ণারসহ একটি লাইব্রেরী স্থাপন করা হয়েছে।
জলাধারঃ ৩টি পুকুরঘাট সুবিন্যস্ত করার পাশাপাশি, জলাধারের চারপাশে ৩টি দর্শন ডেক সমৃদ্ধ একটি হাঁটার পথ নির্মাণ করা হয়েছে।
মুক্তমঞ্চঃ জলাধারের উত্তর পশ্চিমের ঢালে নির্মিত একত্রে ৪০০ মানুষের বসার সুবিধা সম্বলিত ঘাসে ঢাকা সবুজ মুক্তমঞ্চ (এমপিথিয়েটার) নির্মিত হয়েছে।
মুক্তমঞ্চের সামনে জলাধারের উপর নির্মিত পারফরম্যান্স ডেক এবং জলাধার থেকে বেরিয়ে আসা কৃত্রিম পানির ফোয়ারার জলচ্ছ্বটা স্থাপন করা হয়েছে।
বাস্কেটবল গ্রাউন্ড ও ব্যাডমন্টন কোর্টঃ এছাড়া তরুণদের জন্য একটি আউটডোর বাস্কেটবল গ্রাউন্ড নির্মাণ করা হয়েছে, রয়েছে একটি ব্যাডমিন্টন কোর্টও।
জিমনেশিয়ামঃ ইনডোর ও আউটডোর ব্যায়ামাগার ছাড়া শিশুদের জন্য বিভিন্ন খেলার রাইড এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে (ক্রয় প্রক্রিয়াধীন)।
নিরাপত্তা ব্যবস্থাঃ পার্কটিকে সুন্দরভাবে ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে সিসিটিভি কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে থেকে পার্কের প্রতিটি কর্ণারে স্থাপিত সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে পার্কটি সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকতে পারে।
এই কন্ট্রোলরুমের পাশ দিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ৪ তলা উঠলেই উপর থেকে পুরো পার্কের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন দর্শনার্থীরা। এটি পার্কের ওয়াচ টাওয়ার।
রাতের বেলায়ও এ পার্ক ব্যবহারের সুবিধার্থে অত্যাধুনিক এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বিদ্যুৎবাতির ব্যবস্থা রয়েছে।
পার্কের অভ্যন্তরে কিছুদূর পরপরই পাওয়া যাবে ময়লা ফেলার বিন।
হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে গেলে কিছুদূর পর পর জলাধারমুখী বসার বেঞ্চও চোখে পড়বে। ব্যবহারকারীগণের পানীয় জলের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য পার্কের পূর্ব এবং পশ্চিম পাশে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থাও রয়েছে।
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য এবং নিজস্ব ইকোসিস্টেম অক্ষুন্ন রেখে সজ্জিত বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ পার্কটি ঢাকা শহরের গুলশান এলাকার ফুসফুস হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। # প্রেস বিজ্ঞপ্তি ।