দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
অবশেষে শুক্রবার (২৮ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এনএইচকে’র এক খবরে বলা হয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের পদত্যাগ করেছেন। জাপানের স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় পূর্বনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে জাপানের দীর্ঘসময়ের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, অসুস্থতার কারণে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরকার প্রধানের পদ ছেড়ে দিচ্ছেন।
তরুণ বয়সে আক্রান্ত হন আলসারেটিভ কলিটিসে, পেটের এই দীর্ঘমেয়াদী রোগে ২০০৭ সালে আকস্মিক প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। তারপর দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হন ২০১২ সালে, তারপর থেকে সাত বছর আট মাস, টানা ২ হাজার ৭৯৯ দিন ধরে দেশের সরকার প্রধান তিনি। সবচেয়ে বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী থাকার রেকর্ড ভেঙেছেন আগেই, যা ছিল অর্ধশতাব্দী আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইসাকো সাতোর দখলে।
এই সরকারের মেয়াদ ছিল ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে। কিন্তু অসুস্থতার কারণে সরকারের নীতি নির্ধারণে কোনও প্রকার সমস্যা হোক চাননি আবে। তাই কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললেন।
প্রধানমন্ত্রী শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে পুরোনো রোগ আবার খারাপ আকার ধারণ করেছে। এখন নতুন করে চিকিৎসা নিতে হবে। তাতে করে প্রশাসনের কাজ করায় বিঘ্ন হতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বও ঠিকভাবে সামাল না দেওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
দেশের সরকারি নীতি নির্ধারণে কোনও ধরনের ভুল করতে চান না বলে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা আবে জানালেন, ‘আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমার দায়িত্বে থেকে যাওয়া উচিত হবে না। অফিসে আমার থাকার মেয়াদ আরও এক বছর ছিল।
কিন্তু তার আগেই দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার জন্য জাপানের জনগণের কাছে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাচ্ছি। করোনাভাইরাসের এই দুর্যোগময় পরিস্থিতির মধ্যে অনেক নীতিই প্রয়োগ করার পথে ছিল। তা করতে পারলাম না। আমি দুঃখিত।’
শুক্রবার সকালে জাতীয় সংবাদমাধ্যম এনএইচকে’র বরাত দিয়ে জাপান টাইমস ও ব্লুমবার্গ টুইট করেছিল, ‘শিনজো আবে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন।’ আবেকে নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল গত ১৭ আগস্ট টোকিওর একটি হাসপাতালে দেখা যাওয়ার পর।
অবশ্য তার দলের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতেই হাসপাতালে যাওয়া। ওইবার সাড়ে ৭ ঘণ্টা হাসপাতালে থেকে বাড়ি ফেরেন শিনজো আবে। তবে আবে যে মানসিক অবসাদে ভুগছেন তা অস্বীকার করেননি তারা। এক সপ্তাহ না যেতে আবারও এই সোমবার আবেকে হাসপাতালে দেখা গেছে।
সরকারি সূত্র বলেছে, স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফলাফল জানতেই এবার সেখানে গেছেন প্রধানমন্ত্রী। শেষ পর্যন্ত তাকে নিয়ে পদত্যাগের গুঞ্জনই সত্যি হলো। # কাশেম