দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০১৯ সালের ১৮ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর উচ্চতর গণিতের উত্তরপত্র জালিয়াতির সাথে জড়িত বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর ব্যক্তিগত নথি ও পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বিবরণী তলব করা হয়েছে।
যাদের কাগজপত্র তলব করা হয়েছে, তারা হলেন শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন কুমার গাইন, সেকশন অফিসার শহিদুল ইসলাম, সাবেক সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ কে আজাদ ফারুক, উচ্চমান সহকারী সুজাতা স্বর্ণকার, বরখাস্ত অফিস সহকারী গোবিন্দ্র চন্দ পাল ও মনিরুল ইসলাম। এছাড়া, ডে-লেবার (বরখাস্ত) নিতাই ও শংকর।
গত ২৬ জুলাই দুদকের বরিশাল সমন্বিত জেলা কার্যালয় (সজেকা) থেকে এই সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে। সজেকার উপসহকারী পরিচালক রনজিৎ কুমার কর্মকার সই করা চিঠিতে আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে নথিপত্র জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. জুলফিকার আলী বলেন, ‘দুদকের বরিশাল অফিস থেকে এই বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। তবে, চিঠি পাঠানোর বিষয়টি আমার জানা নেই। তাই বিস্তারিত বলতে পারবো না।’
তবে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের অন্য এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘জালিয়াতির মূল অভিযোগের তদন্তভার সিআইডির কাছে। ২০১৯ সালের ২৬ আগস্ট শিক্ষাবোর্ডের তৎকালীন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর আনোয়ারুল আজীম বাদী হয়ে অফিস সহকারী গোবিন্দ চন্দ্র পাল ও ১৮ পরীক্ষার্থীসহ ১৯ জনকে আসামি করে বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। যা সিআইডি তদন্ত করছে। ’
দুদকের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সংস্থা হিসাবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি অনুসন্ধান বরিশাল দুদক অফিস থেকে করা হচ্ছে। মূলত তা জালিয়াতি সংশ্লিষ্টদের অবৈধ সম্পদের অভিযোগ। আমরা ওই অভিযোগের অনুসন্ধান করার পাশাপাশি জালিয়াতির বিষয়টিও খতিয়ে দেখছি।’
দুদক-সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ১৮জন পরীক্ষার্থীরা তাদের খাতায় কিছু না লিখেই জমা দেন। প্রত্যেক খাতায় একটি লাল কালির বিশেষ চিহ্ন ছিল। যার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী সময়ে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্র দেখে হুবহু খাতায় তুলে জমা দেন। জালিয়াতির বিষয় প্রমাণিত হওয়ায় শাস্তি হিসাবে ওই শিক্ষার্থীদের এইচএসসি পরীক্ষা বাতিলের পাশাপাশি পরবর্তী তিন বছরের জন্য বহিষ্কার করে শিক্ষা বোর্ড বরিশাল।
এদিকে জালিয়াতির ঘটনা তদন্তে ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বরিশাল আঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। শিক্ষা বোর্ডের ৫০ জনের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অভিভাবকদের বক্তব্য নিয়ে ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয় কমিটি।
যেখানে জালিয়াতির সঙ্গে চার কর্মচারী জড়িত থাকার কথাও উল্লেখ করা হয়। এই চার জন্য হলেন বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের রেকর্ড সাপ্লায়ার গোবিন্দ চন্দ্র পাল, অফিস সহায়ক মনির হোসেন, নিতাই ও শংকর চন্দ্র। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে তাদের বরখাস্ত করা হয়।
এসব বিষয়ে জানতে শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুসকে মোবাইলফোনে কল দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। #