আবুল কাশেম, দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিষ্টার শেখ ফজলে নুর তাপসকে ওপেন চ্যালেঞ্জ করে টিকে আছেন, এখনো বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী আ.হ. ম. আব্দুল্লাহ হারুন। অথচ বর্তমানে মেয়র ব্যারিষ্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের ডাইরেক্ট অ্যাকশনের মহাআতঙ্কে ডিএসসিসির অধিকাংশ বিভাগেই ‘ টপ টু বটম’ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ।
জানা যায়, মেয়রের নির্দেশে ২০ মে, পৃথক আদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী আ.হ. ম. আব্দুল্লাহ হারুনকে ওএসডি করে ডিএসসিসির প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। একই আদেশে ডিএসসিসির সহকারি প্রকৌশলী (পিএনডি) মো. মফিজুর রহমান খানকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল্ডের ব্যবস্থাপনার অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
তবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী আ.হ. ম. আব্দুল্লাহ হারুনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি এবং লোপাটের অভিযোগ রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ডিএসসিসির মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং দুদকের চেয়ারম্যনের দপ্তরে।মেয়র ব্যারিষ্টার শেখ ফজলে নুর তাপসের নির্দেশে ওএসডির আদেশকে আমলে না নিয়ে অথাৎ চ্যালেঞ্জ দিয়ে এখনো ডিএসসিসির নগরভবনে ১৩ তলায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের নিজের দপ্তরে বসে নিয়মিত দাপ্তরিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন সহকারি প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ হারুন। আর কৌশলে সকালের দিকে এক ফাকে নগরভবনে ৩ৃতীয় তলায় প্রধান প্রকৌলীর দপ্তরে হাজিরা দিয়ে যান।
ওএসডি হওয়া সহকারি প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ হারুন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আরো শক্ত অবস্থা তৈরির জন্য ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ ইমদাদুল হক, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডোর বদরুল আমীন এবং সচিব আকরামুজ্জামানের দপ্তরে নানা তদরির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা।
তবে এর আগেই ডিএসসিসির মেয়র দায়িত্ব গ্রহণের ১৭ মে, প্রথম দিন দুই কর্মকর্তাকে সরাসরি চাকরি থেকে অপসারণ করেন। মেয়র ২০ মে অঞ্চল-৩ এর কর কর্মকর্তা (টিও) সংযুক্ত নগর পরিকল্পনা বিভাগের আতাহার আলী খানকে চাকরি থেকে অপসারন করেন। বর্তমানে ডিএসসিসিতে একটা থমথমে ভাব বিরাজ করছে। অনেকেই চাকরি হানোর আতঙ্কে রয়েছেন।
নাম না প্রকাশের শর্তে সারাধরণ কর্মচারীরা জানান, নগর ভবনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করার জন্য প্রকৌশলীর হারুনের পক্ষে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সহকারি প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ হারুনই নাকি একমাত্র ব্যক্তি, যিনি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল্ডসহ পুরো কাজ পরিচালনায় দক্ষ, অভিজ্ঞ এবং কর্মঠ । তাকে ছাড়া নাকি ডিএসসিসির ব্যর্জ ব্যবস্থাপনা বিভাগ অচল হয়ে যাবে। এসব কাল্পনিক গল্প শুরু করেছেন। তার পক্ষে নানা গুনগান গেয়ে তাকে পুনরায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে পদায়নের জন্য আবেদন নিবেদন করা হচ্ছে।কারণ শুরুতে মেয়র শেখ ফজলেনুর তাপসকে প্রতিরোধ করতে না পারলে, সামনে আরো কঠিন বিপদ আছে। এই প্রকৌশলীর (হারুন) বিরুদ্ধে আনিত নানা অভিযোগ, লোপাট এবং দুর্নীতির বিষয়টি স্থায়ীভাবে চাপা দিতেই এইসব তদবির। তিনি সফল হলে বাকি দুর্নীতিবাজদের বিষয়টিও চাপা পড়ে যাবে এমন মন্তব্য করছেন অনেকে।
সাধারণ কর্মচারীরা আরো জানান , গত ৫ বছর ডিএসসিসিতে সাবেক মেয়র খোকনের সহযোগতায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার লুটপাটের সুযোগ নিয়ে ছিলেন সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লহ হারুন। কিন্তু শেষ পর্যায়ে গত ৭/৮ মাস পূর্ক থেকে তিনি সাবেক মেয়র খোকনকে চ্যালেঞ্জ শুরু করেন।
আর তারই ধারাবাহিকতায় এবার শুরুতেই বর্তমান মেয়র ব্যারিষ্টা শেখ ফজলে নুর তাপসকে চ্যালেঞ্জ করে নগর ভবনে ১৩ তলায় নিজ দপ্তরে বসে পুরোদমে অফিসিয়াল কাজ কর্ম চালিয়ে যাচ্ছন প্রকৌশলী হারুন ।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে, তার বিরুদ্ধে পদ্মাসেতু রেল প্রকল্পর ২৮ কোটি টাকার টেন্ডারের শুরু থেকেই নানা অনিয়ম, জালিয়াতি এবং লোপাটের । ওই প্রকল্প ১২ কোটি টাকার মাটিকেও বর্জ্য হিসেব উল্লখ করা হয়েছে। এই ১২ কোটি টাকার মাটি অপসারণ কাজে কোনো অর্থ ব্যয় না করেই পুরো টাকাগুলো নিজেরা ভাগাভাগির জন্যই তিনি নানা তদবিরের মাধ্যমে যেভাবেই হোউক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের দপ্তটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তিনি।
করোনা পরিস্থিেতেও গত ৩১ মে, দুপুরে ডিএসসিসির নগর ভবনের ১৩ তলায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ হারুনের নিজের দপ্তরে হাজির হয়ে সরাসরি তার সাথে এই প্রতিবেদক কথা বলেন। তিনি বলেন গত ২০ মে, কোনো কারণ ছাড়াই নতুন মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস তাকে ওএসডি করেছেন এবং প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে সংযুক্ত করেছেন।
তিনি আরো বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের এই দপ্তটি দীর্ঘদিন ধরে নিজের মতো করে সাজিয়েছেন। এখানে কাজ করতে গিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। আর এখন হুট করে তাকে সরিয়ে দেয়াটা ঠিক হয়েছে।
তিনি আরো আক্ষেপ করে বলেন, তার এই কর্মস্থলে ‘ সহকারি প্রকৌশলী (পিএনডি) মো. মফিজুর রহমান খানকে অতিরিক্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল্ডের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ডিএসসিসির মার্কেট নির্মাণ সেলেরও অতিরিক্ত দায়িত্ব রয়েছে মো. মফিজুর রহমান খানের।
মো. মফিজুর রহমান খান ৩টা দায়িত্ব পালন করবেন । আর আমাকে (হারুন) ওএসডি করে বসিয়ে রাখবেন। এটা কি করে হয়, এটা মেনে নেওয়া যায় না।
আবদ্দুল্লাহ হারুনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতি অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি (হারুন) বলেন, তদন্ত করে দেখুক। এর পর কর্তৃপক্ষ
বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিলে অবশ্যই মানব। কিন্তু হুট করে ওএসডি কি ভাবে মেনে নেওয়া যায়। কোনো কথা নেই বার্তা নেই হুট করে চাকরি থেকে অপসারণ এবং ওএসডি করা হলে দপ্তরের কাজ কিভাবে চলভে। ৩১মে দুপুরে তার সাথে কথা বলার সময় ওই দপ্তরের বিভিন্ন কাজ নিয়ে অপেক্ষা করতে ছিলেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা- কর্মচারী ছাড়াও বাইরের লোকজন। # কাশেম