দূরবূণ নিউজ প্রতিবেদক :
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ঢাকা শহরকে করোনা ভাইরাসের পাশাপাশি ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া মুক্ত রাখার অভিযান শুরু হয়েছে। নগরীতে রাখতে ১০টি ওয়াটার বাউজারের সাহায্যে প্রতিটি ওয়ার্ডের অলি-গলিতে তরল জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে।
বাসা বাড়িতে পরিত্রাক্ত পাত্রে ফুলের টবে জমানো পানি ৩ দিন পর পরিস্কারের অনুরোধ জানান। শমক নিধন কার্যক্রমও জোরালো ভাবে চলছে। সকালে লার্ভিসাইডিং এবং বিকেলে ফগিং কার্যক্রম চলছে।
মেয়র বলেন, নগরীর বিভিন্ন এলাকার প্রধান সড়ক, ফুটপাত, ফুটওভারব্রিজ, কোয়ারেন্টাইন্ড এলাকা, হাসপাতাল, প্রতিষ্ঠানের সামনে, উন্মুক্তস্থানে, প্রতিটি ওয়ার্ডের অলি-গলিতে হ্যান্ড স্প্রের মাধ্যমে তরল জীবাণুনাশক স্প্রে করা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ কয়েক শত স্থানে পথচারীদের জন্য হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছে।বুধবার (১৩ মে) দুপুর ১২-১৫টায় গুলশানস্থ নগর ভবনে মেয়রের মোঃ আতিকুল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণ কালে এসব কথা বলেন । ওই সময় প্যানেল মেয়র মোঃ জামাল মোস্তফা, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবদুল হাই, সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া ও বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ শেষে দুপুর ১২-৪৫টায় তিনি অনলাইন প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশগ্রহণ করেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিএনসিসির মেয়র বলেন, ঢাকা উত্তরের বাসিন্দাদের করোনা ভাইরাস পরীক্ষা আরো সহজ এবং হাতের নাগালে আনতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমতিক্রমে ডিএনসিসি এবং ব্র্যাক যৌথভাবে নগরীর ৮টি স্থানে করোনা স্যাম্পল কালেকশান বুথ এই সপ্তাহের মধ্যেই স্থাপন করতে যাচ্ছে। এছাড়াও ডিএনসিসির উদ্যোগে কোভিড-১৯ টেস্টিং ল্যাব স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। এরই মধ্যে সাময়িকভাবে মহাখালী ডিএনসিসি মার্কেট করোনা হাসপাতাল ও আইসোলেশান সেন্টার নির্মাণের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
মেয়র বলেন, দেশ এবং পৃথিবী আজ মহাসংকট কাল পার করছে। পুরো বিশ্ব করোনা ভাইরাসের আক্রমণে বিপদগ্রস্ত। বিশ্বের প্রতিটি বড় বড় শহরের মত আমাদের প্রিয় তিলোত্তমা নগরীও স্থবির হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যেই প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সকল ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন অসংখ্য মানুষ, আমি তাদের দ্রুত রোগমুক্তি কামনা করছি। সেই সাথে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
তিনি বলেন, মেয়র পদে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণ করার আগে থেকেই এই মহাদুর্যোগের সময়ে আমি নগরবাসীর পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। সিটি কর্পোরেশনের কর্মীদের পাশে থেকে তাদেরকে অনুপ্রেরণা যোগানোর মাধ্যমে এবং ডিএনসিসির সাথে সমন্বয় করে আমি নগরবাসীর জন্য সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। আমি বিশ্বাস করি আমার ক্ষুদ্র চেষ্টা এই অস্থির সময়ে অসংখ্য মানুষের জীবনে সুখবার্তা নিয়ে আসবে। এই দুর্যোগের সময়ে নগরবাসীর জীবনযাপন স্বাভাবিক রাখতে আপনাদের সাথে নিয়ে এই প্রচেষ্টা চলমান থাকবে।
ডিএনসিসির মেয়র বলেন, কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাসের দাপটে পুরো বিশ্ব এখন কম্পিত। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পৃথিবী। করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চিকিৎসা বিজ্ঞানও এখন পর্যন্ত আশার আলো দেখাতে পারেনি। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে একমাত্র উপায় হিসেবে সামাজিক দূরত্বসহ বেশকিছু নিয়ম মেনে চলার কথা বলছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। বিশ্বের অন্যান্য বড় শহরের মত করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এছাড়া করোনা দুর্যোগে মাঠে কাজ করা সংবাদকর্মীদের ও তাদের পরিবারের জন্য ডিএনসিসির মহাখালী কমিউনিটি সেন্টারে স্যাম্পল সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনা মোকাবেলায় নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে করোনার চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য ও পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। করোনা চিকিৎসায় জড়িত ডাক্তার, নার্স, এম্বুলেন্স চালক, পুলিশ, নিরাপত্তা কর্মীদের যেন বাড়িওয়ালারা হেনস্তা না করে সেজন্য আহবান জানানো হয়েছে। কেউ হেনস্তা করলে সেই বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার ঘোষণা দেন তিনি। # কাশেম