দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ও কমিশনার মো. জহুরুল হক কাজে যোগ দিয়েছেন।
বুধবার (১০ মার্চ) বেলা সোয়া ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এলে তাদেরকে কমিশন সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার অভ্যর্থনা জানান।
দুদকের পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার গণমাধ্যমকে বলেন, দুদকের নতুন চেয়ারম্যান ও কমিশনার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে যোগদান শেষে কাজে যোগদান করেছেন। দুদক চত্বরে নতুন চেয়ারম্যান ও কমিশনার একসঙ্গে প্রবেশ করেন। এ সময় চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ কালো রঙের গাড়িতে ও কমিশনার মো. জহুরুল হক একটি সাদা রঙের গাড়িতে আসেন।
দুপুর আড়াইটায় দুদকের নতুন চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এবং কমিশনার মো. জহুরুল হক একত্রে দুদক থেকে বেরিয়ে গেছেন। যাবার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
গত ৩ মার্চ রাষ্ট্রপতির আদেশে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ৫(১) ধারার বিধান অনুযায়ী এ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
১৯৮৩ সালে জনপ্রশাসনে যোগদান করে ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ। মোট ৩৫ বছর ধরে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন তিনি।
কৃষি মন্ত্রণালয় ছাড়াও তিনি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক ও ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও মাঠ প্রশাসনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ১৯৫৯ সালে কুমিল্লায় জন্ম গ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ সদ্য বিদায়ী দুদক চেয়ারম্যান পদে ইকবাল মাহমুদের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
দুদক কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া জহুরুল হক ১৯৫৫ সালের ৫ ডিসেম্বর জামালপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭১ সালে মাদারগঞ্জ উপজেলার পলিশা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৭৩ সালে জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগ থেকে ১৯৮০ সালে সম্মান ডিগ্রি এবং ১৯৮১ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
জহুরুল হক ১৯৮৩ সালে সহকারী জজ হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেন। কর্মজীবনে তিনি সিরাজগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ (সিনিয়র জেলা জজ) হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে যান।
তিনি ২০১৫ সালের ৩০ আগস্ট বিটিআরসির কমিশনার হিসেবে যোগ দেন। ২০১৮ সালের ১২ মে কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদের মেয়াদ শেষ হলে জহুরুল হক কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান। একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি একাধারে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও কমিশনার (লিগ্যাল ও লাইসেন্সিং) হিসেবে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
সর্বশেষ তিনি ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর জহুরুল হক অবসরে যান। তিনি দুদক কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
আইন অনুযায়ী, তিনজন কমিশনারের সমন্বয়ে দুদক গঠিত হয়। কমিশনারদের মেয়াদ থাকে পাঁচ বছর। তাদের মধ্য থেকে একজনকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়।/