দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার (পিকে হালদার) হালদারের সহযোগি হিসেবে অভিযুক্ত সাবেক সচিব এনআই খাননের বিদেশ যাত্রায় হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে দায়ের করা আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের চেম্বার আদালত এই আদেশ জারি করেন।
চেম্বার আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মেহেদি হাসান চৌধুরী।
দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান গণমাধ্যমকে বলেন, এর আগে হাইকোর্ট পিকে হালদারের মা লিলাবতী হালদারসহ ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।একইসঙ্গে ওই ২৫ জনকে প্রয়োজনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে বলেও আদেশ দেন আদালত।
গত ৫ জানুয়ারি বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
বিদেশ গমনে যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, তারা হলেন, প্রতি সপ্তাহে পিকে হালদারের সঙ্গে যোগাযোগকারী: ১. হারুনুর রশিদ ( ফার্স্ট ফাইন্যান্স), ২. উজ্জ্বল কুমার নন্দী, ৩. সামি হুদা, ৪. অমিতাভ অধিকারী, ৫. মিস অবন্তিকা বড়াল, ৬. মিস শামীমা ( ইন্টারন্যাশনাল লিজিং), ৭. মিস রুনাই ( ইন্টারন্যাশনাল লিজিং), ৮. আই খান ( ইন্টারন্যাশনাল লিজিং), ৯. সুকুমার মৃধা (ইনকাম ট্যাক্স আইনজীবী), ১০. মিস অনিন্দিতা মৃধা, ১১. তপন দে, ১২. স্বপন কুমার মিস্ত্রি, ১৩. অভিজিৎ চৌধুরী, ১৪. রাজিব সোম, ১৫. ইরফান উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী (ব্যাংক এশিয়া’র সাবেক এমডি), ১৬. অঞ্জন মোহন রায়, ১৭. নঙ্গ চৌ মং, ১৮. নিজামুল আহসান, ১৯. মানিক লাল সমাদ্দার, ২০. সোহেল সামস। এছাড়া পিকে হালদারকে বিভিন্নভাবে তথ্য দিয়ে সহযোগিতাকারী ১. মাহবুব মুসা, ২. একিও সিদ্দিকী, ৩. মোয়াজ্জেম হোসেন ৪, পিকে হালদারের মা লিলাবতী হালদার এবং ৫. বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে শুরকেও বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
পরে হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে এনআই খানের পক্ষে আপিল আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত আদেশ দিলেন। এ আদেশের ফলে তার বিদেশ গমনে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
গত ৩ জানুয়ারি পিকে হালদারের প্রতারণার শিকার সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামালের মেয়েসহ ভুক্তভোগী বিনিয়োগকারীরা রুল শুনানিতে পক্ষভুক্ত হন।
২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের একই বেঞ্চে এ সংক্রান্ত একটি আবেদন করেছিল আইএলএফএসএল। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত জানিয়েছিলেন, পিকে হালদার কবে, কখন, কীভাবে দেশে ফিরতে চান তা আইএলএফএসএল লিখিতভাবে জানালে সে বিষয়ে পরবর্তী আদেশ দেওয়া হবে।
পরবর্তীতে পিকে হালদারের দেশে ফেরার বিষয়ে ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর হাইকোর্টকে জানায়। পিকে হালদারের প্রতিষ্ঠান আইএলএফএসএল’র পক্ষ থেকে হাইকোর্টকে জানানো হয়, পরে ২৫ অক্টোবর দুবাই থেকে অ্যামিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকা আসার জন্য টিকিট কেটেছেন। বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টায় ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে।
তিনি বলেন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকেই ১৫শ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে। এছাড়াও সব মিলিয়ে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একের পর এক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসময় গোপনে কানাডায় পাড়ি জমান তিনি।/