সাংবাদিক ফারুক কাজীর চির বিদায় . প্রধানমন্ত্রী সহ সাংবাদিকদের শোক
আবুল কাশেম, দূরবীণ নিউজ:
সিনিয়র সাংবাদিক ফারুক কাজী সবাই শোকের সাগরে ভাসিয়ে, চিরদিনের জন্য না ফেরার দেশে চলে গেলেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আরবি: إِنَّا لِلَّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ) । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
শুক্রবার (৩ জুলাই) ভোরে রাজধানীতে এ্যালিফ্যান্ট রোডের নিজ বাসায় ফারুক কাজী ঘুমন্ত অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। এর আগে তিনি বেশ কিছুদিন ধরে পা এবং কোমরের ব্যথায় ভুগছিলেন। কিডনিতেও সমস্যা ছিল। ডাক্তারের পরামর্শে পেইন কিলার ঔষধ খেয়ে ৩ দিন ধরে ঘুমাচ্ছিলেন। আর এই ঘুমের মধ্যেই তিনি মারা যান বলে তাঁর মেয়ে টেলিফোনে জানান।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রপিরিষদের সদস্য, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ গভীর শোক জানিয়েছেন। তারা মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা ও তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
জানাযায়, সিনিয়র সাংবাদিক ফারুক কাজী প্রধানমত্রীর সহ প্রেস সেক্রেটারী ও দিল্লী দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টারও ছিলেন । তিনি ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের টানা ৮ বছরের সভাপতি ছিলেন । এছাড়াও ফারুখ কাজী কর্মজীবনে বহু বছর ইউএনবি, বিএসএস, অবজার্ভারসহ বেশ কিছু সংবাদ প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। আইন আদালত বিটে রিপোর্টিং করতে গিয়ে কত স্মৃতি রেখে গেছেন।
ছবিতে – বাংলাদেশ ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক সভাপতি ফারক কাজী , প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের পাশে খয়েরি কালারের জামা পড়িহিত এবং দুই পাশে ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের নেতৃবৃন্দকে দেখা যাচ্ছে ।
ফারক কাজী শুধু সাংবাদিক নয়, অনেক আইনজীবী ও কিন্তু আইনের শিক্ষকের মতো খোলামনে সবার সাথে মিশতেন। শুনতেন বেশি, বলতেন কম। প্রতিটি কথার ওজন ও গুরুত্ব ছিলো অনেক।
এদিকে প্রিয় ফারুক কাজী ভাইর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ, বিদেহী আত্নার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও শান্তি কামনা এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে সাংবাদিকরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার শুভাকাঙ্খিরা ফারুক কাজীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করছেন। একইসাথে তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জনাচ্ছেন। আমার শ্রদ্ধার ফারুক ভাই, আমাদের সাহসের বাতিঘর আর নেই। মহান আল্লাহ তাঁকে উত্তম পুরস্কার দান করুন, জান্নাত নসীব করুন।
ফারুক কাজী ছিলেন সাহসের বাতিঘর:
বহুল সমালোচিত ও বিতর্কিত ১/১১’র সরকার ২০০৭ সালে সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী ও দেশের শীর্ষ দুই নেত্রীকে গ্রেফতার করে কারাগাবন্দী করেছে। দেশের প্রায় সব দলের নেতারাই জেলে। এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে কোথাও টুঁশব্দও নেই। সর্বত্র নিরবতা। দুই নেত্রীর বিচারের জন্য সংসদ ভবনে বিশেষ আদালত বসানো হয়েছে। আয়োজন হয়েছিল ক্যামেরা ট্রায়ালের।
বিচার শুরুর দিন দেশি-বিদেশি শতশত সাংবাদিক জড়ো হলেন সংসদ ভবনের গেটে। তখনকার প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হলো, আদালতের ভেতরে সাংবাদিকদের কোনোভাবেই প্রবেশ করতে দিবে না। তুমুল বাকবিতন্ডা চলছে।
বাংলাদেশ ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি ছিলেন ফারক কাজী ভাই। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাজারো সদস্যের সামনে একটা হুংকার দিয়ে ওই সময় তিনি বলেছিলেন, আপনারা ভেতরে বিচার করেন। আমরা এখানেই বসে পড়লাম। তাঁর দেখাদেখি উপস্থিত শতশত সাংবাদিক কাগজ, কলম, ক্যামেরা, বুম মাটিতে রেখে মুখ ও হাতবেঁধে মাটিতে বসে পড়লাম।
মুহূর্তের মধ্যে আমাদের এ ছবি ও প্রতিবাদের খবর বিবিসি, সিএনএন, আল জাজিরাসহ আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সব গণমাধ্যমে প্রচার হতে থাকলো। ঘন্টা খানেকের মধ্যে প্রশাসন আপোষ করতে বাধ্য হলো। আমরা এজলাসে গিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে সক্ষম হলাম।# কাশেম