দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাতের ঘটনায় আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প করপোরেশন (বিসিআইসি) চেয়ারম্যানের কাছে সন্তোষজনক চেয়েছেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত একইসঙ্গে সার আত্মসাতের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার জবাব চেয়ে রুল জারি করেছেন। এছাড়া আদালত আগামী ৬০ দিনের মধ্যে ৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিল করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) বিচারপতি মো.নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
সূত্র মতে, ‘৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাৎ’ শিরোনামে জাতীয় দৈনিক প্রত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারিভাবে আমদানি করা ৭২ হাজার মেট্রিক টন রাসায়নিক সার বন্দর থেকে খালাসের পর গুদামে পৌঁছে না দিয়ে আত্মসাৎ করেছে পরিবহনের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোটন ট্রেডার্স। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৫৮২ কোটি টাকা। ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি বিসিআইসি। মেসার্স পোটন ট্রেডার্স সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। কামরুল আশরাফ খান সার ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) সভাপতি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, তিনিই মূলত দেশে সারের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন।
নরসিংদী-২ আসনে ২০১৪ সালের নির্বাচনে কামরুল আশরাফ খান সরকার দলীয় একজন সংসদ সদস্য। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। বর্তমানে নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য তার ভাই আনোয়ারুল আশরাফ খান, যিনি আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত।
আরও অভিযোগ রয়েছে, পোটন ট্রেডার্সের সার আত্মসাতের বিষয়টি ‘আমদানিকারক শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি প্রতিষ্ঠান রসায়ন শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) দুটি তদন্তেও বেরিয়ে এসেছে। সারগুলো খালাস হয়েছিল ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ১৫ মে’র মধ্যে । সার সরবরাহ না করার পর ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি বিসিআইসি। সর্বশেষ গত ২০ ডিসেম্বর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে বিসিআইসির পক্ষ থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়।
এদিকে সম্প্রতি শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন গণমাধ্যমকে বলেন, বিসিআইসির পাঠানো চিঠি তিনি এখনো পাননি। তবে সার গুদামে সরবরাহ না করার বিষয়টি জানার পরই মেসার্স পোটন ট্রেডার্সের বিষয়ে তদন্ত করতে বলা হয়। তদন্তে কারও বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পোটন ট্রেডার্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়কে দেওয়া বিসিআইসির চিঠিতে বলা হয়, পোটন ট্রেডার্স মৌসুম আসার আগে (২৯ আগস্টের মধ্যে) সব ইউরিয়া সার সরকারি গুদামে সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে সার সরবরাহ করেনি। কামরুল আশরাফ খানের সঙ্গে বিসিআইসির কয়েক দফা সরাসরি আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু সার সরবরাহ করেননি। # কাশেম