দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধি পাওয়ার তথ্য হলফনামায় প্রকাশ হলেও তাদের (প্রর্থীদের) ইমেজের কথা বিবেচনায় রেখে ভোটের আগে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, নির্বাচনের পরেও তো হলফনামা দেখে যাচাই বাছাই করে ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ আছে।
সোমবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে দুদক বিটের সংগঠন রিপোর্টার অ্যাগেইনেস্ট করাপশন (র্যাক) আয়োজিত ”এমজিআই-র্যাক বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড -২০২৩ ”এর পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে দুদক চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অনলাইন ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক এফ এম আবদুর রহমান মাসুম, প্রিন্ট মিডিয়া ক্যাটাগরিতে বাংলা ট্রিবিউনের বিশেষ প্রতিবেদক নুরুজ্জামান লাবু ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরিতে মাই টিভির সিনিয়র রিপোর্টার মাহবুব সৈকতের হাতে পুরস্কার তুলে দেন দুদক চেয়ারম্যান। ৩ জনকেই সম্মাননা ক্র্যাস্ট, সনদ এবং নগদ এক লাখ টাকা করে প্রদান করা হয়।
দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেনসহ কমিশন ও র্যাকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
হলফনামা প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্বাচন ৭ তারিখ অনুষ্ঠিত হবে। আর ৬ দিন আছে। নির্বাচনটা সম্পন্ন হোক। এখন অনেক তথ্য আছে, কোনো একজনের হয়তো দুই লাখ টাকা ছিল, এখন এক কোটি টাকা হয়ে গেছে। প্রায় ৫০ গুণ অর্থ সম্পদ বেড়েছে। একজন সংসদ সদস্য মাসে কত টাকা ভাতা, বিভিন্ন অ্যালাউন্স পান সেটা যদি যোগ করি এক কোটি টাকা হতেই পারে। এগুলো ধরে সঙ্গে সঙ্গে যদি অনুসন্ধান শুরু করি তার ইমেজটা কী হবে।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা অনুসন্ধান করে দেখলাম ঠিক আছে, কিন্তু মাঝখান দিয়ে তার ইমেজটা কী হবে অনুসন্ধান শুরু করলে। সম্পদ যদি বাড়ে এটা তামাদি হয়ে যাবে না। নির্বাচনটা হোক সত্য-মিথ্যা যা আছে, এটা প্রমাণ করার সুযোগ তো আছেই।’
তিনি বলেন, এমনভাবে রিপোর্ট করবেন যাতে দুর্নীতিটা বন্ধ হয়। সবার কাছে একটা অনুরোধ, আপনারা কোনো ফরমায়েশি প্রতিবেদন করবেন না। এতে সেই প্রতিবেদন বস্তুনিষ্ঠ হবে না। সংবাদের স্বকীয়তাও থাকে না।
অনুষ্ঠানে দুদকের কমিশনার আছিয়া খাতুন বলেন, আমরা সাংবাদিকদের কাছ থেকে ভালো ভালো রিপোর্ট ও রিপোর্টে অনুসন্ধান চাই। রিপোর্টে দুর্নীতির উন্মোচন করতে হবে। স্টোরি এমন হবে যাতে আমরা (দুদক) এগুলো নিয়ে কাজ করতে পারি। আপনাদের কাছে অনুরোধ, আপনারা প্রতিটি দুর্নীতির ঘটনার গভীরে প্রবেশ করে, ইনডেপথ রিসার্চ করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করবেন।
এ সময় দুদক কমিশনার মো. জহুরুল হক দুর্নীতি দমনে সাংবাদিকদের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, সাংবাদিক ও দুদক একে অপরের পরিপূরক। আমরা চাই আপনারা দুর্নীতি নিয়ে ভালো ভালো রিপোর্ট করবেন। আপনারা যখন বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য পাবেন, তথ্য নিয়ে অনুসন্ধান করবেন। অনুসন্ধান করে মুদ্রার দুইপিঠ তুলে ধরবেন, তাতেই আমরা লাভবান হবো।
উল্লেখ্য, ‘সাতক্ষীরায় স্বর্ণ ডাকাতিতে স্থানীয় পুলিশ’ শিরোনামে অনুসন্ধানী প্রতিবেনদের জন্য এই পুরস্কার পান নুরুজ্জামান লাবু। প্রতিবেদনটি ২০২৩ সালের ১০ এপ্রিল দৈনিক বাংলায় প্রকাশিত হয়। এ সময় তিনি বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক বাংলায় কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি বাংলা ট্রিবিউনে কর্মরত। এর আগে, ২০২১ সালে অনলাইন ক্যাটাগরিতে বর্ষসেরা পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। # একে