দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
অল্প খরচে দ্রæত সময়ের মধ্যে চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ভালমানের পণ্য আমদানি-রপ্তানির প্রতিশ্রæতি দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ‘ইকোম্যাক্স কার্গোর’ নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। তবে এপর্যন্ত ৩৫ জন ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের সুনিদিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া আরও অনেক ভুক্তভোগীদের কাছ থেকেও বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাতের আসছে পুলিশ প্রশাসনের কাছে।
বুধবার (২৫ মে) বেলা ১১টার দিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডি ঢাকা মেট্রোর অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রাথমিক তদন্তে সত্যতার ভিত্তিতে মঙ্গলবারদিবাগত রাতে প্রতারক চক্রের দুই সদস্য আরাফাত হোসাইন ও মো. নাজিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডির।
সিআইডির কর্মকর্তা ইমাম হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, প্রতারকরা লোকজনকে আমদানিযোগ্য পণ্যের মধ্যে ছিল পোশাক কারখানার সরঞ্জাম, কম্পিউটার যন্ত্রাংশ, মেডিকেল সরঞ্জাম, বাইক, কাপড় সিলিকাজেল, লোগো ইত্যাদি দ্রæত সময়ে মধ্যে চীন থেকে এনে দেওয়ার প্রতিশ্রæতি দিলেন। তিনি বলেন, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় প্রতারকদের হঠাৎ গজিয়ে উঠা ‘ইকোম্যাক্স’ নামের প্রতিষ্ঠানের চাকচিক্য দেখে বাইরে থেকে বোঝার কোনা উপায় নেই যে এটি ভুয়া। আমদানির চাহিদা মাফিক পণ্যের প্রতিটি চালানের ৫০ শতাংশ টাকা আগে নিয়েছে এ প্রতারক চক্রটি।
ইমাম হোসেন বলেন, তিন সদস্যের একটি প্রতারক চক্র ‘ইকোম্যাক্স’ নামের একটি আমদানি-রপ্তানির ব্যবসার নামের একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। চক্রটি যাত্রাবাড়ী এলাকায় অফিস ভাড়া করে দামি ফার্নিচার দিয়ে অফিস সাজিয়ে ব্যবসা করছিল। অল্প সময়ে কম খরচে চীন থেকে গ্রাহকের চাহিদা মতো পণ্য এনে দেওয়ার কথা বলে ৫০ ভাগ টাকা অগ্রিম নিত তারা।
সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে মালামাল পৌঁছে যাওয়ার কথা বলে আরও ২০ ভাগ টাকা নিত। চক্রটি মানুষের আস্থা অর্জনের জন্য চুক্তিপত্র করত। তাদের ভাড়া করা মার্কেটিং কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে যার যে ধরনের পণ্য দরকার, তা চীন থেকে আনার অফার দিতেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে সময়ক্ষেপণ করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে অফিস পরিবর্তন করে মোবাইল বন্ধ করে পালিয়ে যেতেন।
সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, এ চক্রের সদস্যরা এর আগে চীনে লেখাপড়া করেছেন। আরেক সদস্য চীন থেকে মেডিকেল যন্ত্রাংশ কেনার জন্য যাওয়া-আসা করতেন। চক্রের সদস্যরা এখন পর্যন্ত ৩৫ জন ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অন্যান্য আরো ভুক্তভোগীদের কাছ থেকেও বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে।
গ্রেফতারকৃত ‘ইকোম্যাক্স কার্গোর’ চেয়ারম্যান আরাফাত হোসাইন রাজধানীর ওয়ারী থানার ভজহরী স্ট্রিটের মো. আহসান উল্লাহর ছেলে। আর ‘ইকোম্যাক্স কার্গোর’ অর্থ পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন ঢাকার গেন্ডারিয়া থানার মুরাদপুর হাইস্কুল সড়কের ২৫ নম্বর বাড়ির আবদুল জব্বারের ছেলে। তাদের বিরুদ্ধে এক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী কর্তৃক যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা মামলায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন। #