দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
মঙ্গলবার ( ২৪ মার্চ ) বিকাল থেকে করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে নৌ পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকাল থেকে লঞ্চসহ সব ধরনের নৌ যান চলাচল করতে দেয়া হবে না।’
‘তবে পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ যথারীতি চলবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে,’ বলেন তিনি।
এর আগে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল ২০২০ পর্যন্ত সারাদেশে গণপরিবহন লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
মঙ্গলবার সকালে মন্ত্রণালয় হতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক ভিডিও বার্তায় এ কথা জানান।
তবে তিনি বলেন, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ঔষধ, জরুরি সেবা, জ্বালানি, পচনশীল পণ্য পরিবহন এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। পণ্যবাহী যানবাহনে কোনো যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।
এর আগে সারাদেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ট্রেন চলাচলও সীমিত করে সরকার। মঙ্গলবার থেকে সারাদেশের সকল মেইল এক্সপ্রেস ও কমিউটার ট্রেন বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক শামছুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে সকল ট্রেন বন্ধ করে দেয়া হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বজায় থাকবে।’
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল সারাদেশে ছুটি ঘোষণা করে সরকার। তবে এ সময়ে খোলা থাকবে হাসপাতাল ও জরুরি সেবা। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনকে সহায়তা করতে মঙ্গলবার থেকে সশস্ত্র বাহিনীও মাঠে থাকছে।
আগামী ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের সুপারমার্কেটগুলোসহ সব দোকান বন্ধ থাকবে। তবে কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকান এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান খোলা থাকবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সোমবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ৩৩ জন আক্রান্তের তথ্য জানিয়েছে সরকার। যাদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে এবং পাঁচজন সুস্থ হয়েছেন।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৫১৫ জনে।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, নভেল করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন বিশ্বের ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৯৬৫ জন। এদের মধ্যে বর্তমানে ২ লাখ ৬০ হাজার ৩৮১ জন চিকিৎসাধীন এবং ১২ হাজার ৬২ জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন।
এছাড়া করোনাভাইরাস আক্রান্ত ১ লাখ ১৮ হাজার ৫৮৪ জনের মধ্যে ১ লাখ ২ হাজার ৬৯ জন (৮৬ শতাংশ) সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং ১৬ হাজার ৫১৫ জন (১৪ শতাংশ) রোগী মারা গেছেন। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৯৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস। # সূত্র : ইউএনবি