দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
ঢাকা উত্তর সিটিতে ডোবা-নালা ইত্যাদি অপরিষ্কার পাওয়া গেলে আগামী ২০ অক্টোবর থেকে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশশ দিয়েছেন মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ইতোপূবে এডিস মশার হিংস্রতা থেকে নগরবাসীকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য চিরুনি অভিযানকালে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে জরিমানা আদায় সহ আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এবার আসন্ন শীত মৌসুমে নগরবাসীকে কিউলেক্স মশা থেকে সুরক্ষা দিতেই বাড়ির আশপাশে ডোবা, নালা, ড্রেন, খাল ও জলাময় অপরিস্কার পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জরিমানা আদায়সহ আইনী পদক্ষে গ্রহণ করা হবে।
বুধবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মিরপুরের দক্ষিণ বিশিলে গোদাখালী খাল পরিষ্কার কার্যক্রম এবং ওই খাল থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন ময়লা আর্বজনার স্তূপ পরিদর্শনকালে ডিএনসিসির মেয়র এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ডোবা, নালা ও খাল থেকে পরিস্কার করা আর্বজনা প্রদর্শনীতে দেখানো হয়, শতাধিক জাজিম, কয়েক ডজন সোফা, টেলিভিশনের খোলস, ভাঙ্গা ফ্রিজ, সুটকেস, বালিশ, ২০০ ট্রাক ডাবের খোসা পেয়েছি।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা নৌবাহিনীর কমডোর এম সাইদুর রহমান , উপ প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. মফিজুর রহমান ভূইয়া, সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান চৌধুরী ও সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. মহসিনসহ স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়েই বলেন, খালে, ডোবায় এবং ড্রেনে এসব কারা ফেলেছেন। এসবের কারণে জলাবদ্ধার পাশাপাশি মশার উৎপাত বাড়ছে। এই শহরকে ভালো বাসবো? আমি বারবার বলছি, একটু বৃষ্টি হলেই খাল ভরে যায় এবং ‘ওভারফ্লো’ করে, জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। অথচ আমাদের ড্রেনের পানি খালে এবং খাল থেকে পানি নদীতে যাওয়ার কথা। কিন্তু সেটা যাচ্ছে না কেনো। এজন্যই আমি আজ আপনাদের বলেছি আপনারা এই প্রদর্শনীতে ডাকা হয়েছে।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন কিছুদিন ধরে ডিএনসিসি এলাকার বিভিন্ন খাল ও লেক পরিষ্কার করা হয়েছে। এই খালগুলো থেকে আমরা কী কী পাচ্ছি, এখানে তার কিছু নমুনা এই প্রদর্শনীতে রেখেছি।
মেয়র বলেন, ডিএনসিসি বিভিন্ন সংস্থার মালিকানাধীন ১৬টি খাল ও লেক চলতি মাসের মধ্যে পরিষ্কার কাজ সম্পন্ন হবে। প্রতিদিন ৫১০ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী পরিষ্কার কাজে নিয়োজিত আছে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ইতোপূবে এডিস মশার হিংস্রতা থেকে নগরবাসীকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য চিরুনি অভিযান পরিচালনা কালে যেভাবে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে জরিমানা আদায় সহ আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এবার আসন্ন শীত মৌসুমে নগরবাসীকে কিউলেক্স মশা থেকে সুরক্ষা দিতে আগামী ২০ অক্টোবর থেকে ডিএনসিসি এলাকার খাল, ডোবা-নালা ইত্যাদি পরিদর্শনকালে একইভাবে জরিমানা আদায়সহ আইনী পদক্ষেপ শুরু হবে।
তিনি বলেন, যাদের খাল, ডোবা-নালা অপরিষ্কার অবস্থায় পাওয়া যাবে তাদেরকেই জরিমানা করা হবে। সরকারি, বেসরকারি কিংবা ব্যক্তি মালিকানাধীন যে কোন সংস্থাই হোক না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব। কারণ খাল কচুরিপানাপূর্ণ বা অপরিষ্কার থাকলে সেখানে মশা বংশবিস্তার করে।
তিনি বলেন, এখনো সময় আছে, অনুরোধ করবো, সকল সংস্থা, সরকারি-বেসরকারি এবং ব্যক্তি সবাই এগিয়ে আসুন, সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব নয়, সবাই মিলে এগিয়ে আসলে পরিবেশ ভাল থাকবে, সবাই মশার উৎপাত থেকে রক্ষা পাবেন।
মেয়র আরো বলেন, আমরা খাল পরিষ্কার করছি, কিন্তু খাল পরিষ্কার করার কথা আমাদের ছিল না। খাল পরিষ্কার করার কথা অন্য একটি সংস্থার। তারপরও আমরা, আমাদের কাউন্সিলররা মনে করেছি সবাই মিলে খাল পরিষ্কার করতে হবে। তাই আমি কোন দিকে না তাকিয়ে, আমাদের এলাকার খাল আমরা কারো জন্য বসে না থেকে নিজেরা পরিষ্কার করছি। আমি দুই হাত তুলে জনগণের কাছে বলছি, আপনারা খাল দখল করবেন না, খালের মধ্যে ময়লা ফেলবেন না। যুব সমাজকে অনুরোধ করবো, আপনারা সোচ্চার হোন, প্রত্যেকে যার যার এলাকার খালের দায়িত্ব নেন। স্বেচ্ছাসেবকরা এগিয়ে আসুন। # প্রেস বিজ্ঞপ্তি