দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ অমান্য করে ১২৩ কোটি টাকার সম্পত্তি মাত্র ১৫ কোটি টাকায় নিলামে বিক্রির ঘটনায় ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর এফ হোসাইন, কুষ্টিয়ার ডিসি মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, এসপি মো. খায়রুল আলম,কুষ্টিয়া সদর থানার ওসি মো. সাব্বিরুল আলম ও নিলামে সম্পত্তি ক্রয়কারী ব্যবসায়ী আব্দুল রশিদকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী ২১ আগস্টের মধ্যে তলবি নোটিশ প্রাপ্তদেরকে সশরীরে হাইকোর্টে হাজির হতে ১২৩ কোটি টাকার সম্পত্তি মাত্র ১৫ কোটি টাকায় বিক্রির বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। উচ্চ আদালত একইসঙ্গে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই সম্পত্তির আগের মালিক শফিকুল ইসলামকে দখল বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ও বিচারপতি একেএম রবিউল হুসাইনের সমন্বয়ে গঠিত বে এই আদেশ জারি করেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী।
গণমাধ্যমকে হাইকোর্টের এই আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী।
তিনি বলেন, গত ২৪ মার্চ ওই সম্পত্তি (প্রতিষ্ঠান) বিক্রির জন্য নিলামে তোলা হয়। ওই নিলামের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন প্রতিষ্ঠানসমূহের মালিক শফিকুল ইসলাম। হাইকোর্ট শুনানি গ্রহণ শেষে নিলামের সব কার্যক্রম স্থগিতাদেশ জারি করেন। এর ফলে শফিকুল ইসলামের মেসার্স বিশ্বাস ট্রেডার্স, ভিআইপি রাইস মিল ও ভিআইপি ফ্লাওয়ার মিলের মালিকানা বহাল থাকে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, গত ২ আগস্ট ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের মালিকানাধীন মেসার্স বিশ্বাস ট্র্রেডার্স, ভিআইপি রাইস মিল ও ভিআইপি ফ্লাওয়ার মিল নিলাম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। একইসঙ্গে এক মাসের মধ্যে ২০ কোটি টাকা ব্র্যাক ব্যাংককে দিতে বলা হয়। এছাড়া আরো ৬ কোটি টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়।
কিন্তু আদালতের এ আদেশ লঙ্ঘন করে গত ৫ আগস্ট ভোরে পুলিশের সহযোগিতায় ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের ১২৩ কোটি টাকার সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে কুষ্টিয়ার বিশিষ্ট চাল ব্যবসায়ী আব্দুল রশিদের মালিকানাধীন রশিদ এন্টারপ্রাইজের নামে। এ ঘটনায় নিলামের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়। আদালত অবমাননার আবেদনের শুনানি নিয়ে তাদেরকে তলব করা হয়।
তিনি আরও বলেন, কুষ্টিয়ার আইলচারায় অবস্থিত মেসার্স বিশ্বাস ট্রেডার্স অ্যান্ড ভিআইপি রাইস মিল ব্র্যাক ব্যাংক পোড়াদাহ শাখার কাছে ঋণ চাইলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জমির ভ্যালুয়েশন করে ৯২ কোটি টাকা। ব্র্যাক ব্যাংক পোড়াদাহ শাখা সব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ওই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে ৪৩ কোটি টাকা ঋণ দেয়।
ভিআইপি রাইস মিল সময়মতো ঋণের কিস্তি দিতে ব্যর্থ হলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অতি গোপনে অখ্যাত কাগজে নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেয়। এরপর ব্যবসায়ী নিলাম বিজ্ঞপ্তি স্থগিত চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন। হাইকোর্ট ওই নিলাম কার্যক্রম বন্ধার নির্দেশ দেন। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে নিলামে ওই সম্পত্তি বিক্রি করেছেন এবং ক্রেতারকে দখল বুঝিয়ে দিয়েছেন। এই অপরাধেই তাদেরকে ২১ আগস্ট তলব করেছেন হাইকোর্ট। #