দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
পুরান ঢাকার আলোচিত সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১৩ বছরের কারাদন্ড বহালের জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)।
আসামী হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বিচারিক আদালত ১৩ বছরের কারাদন্ডের রায় প্রদান করেন। কিন্তু হাইকোর্ট হাজী সেলিম আপিলের আপিল শুনানি নিয়ে ১৩ বছরের সাজা কমিয়ে ১০ বছর বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন।
মঙ্গলবার (১০ মে) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করেছে দুদক।গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
তিনি আরও জানান, হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি গত ১০ ফেব্রæয়ারি প্রকাশিত হয়। এ রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে আসামী হাজী সেলিমকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এ আত্মসমর্পণ করতে নির্দে দেন হাইকোর্ট। রায় প্রকাশের ১৪ দিন অতিবাহিত হলেও আসামী হাজী সেলিম বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি।
এই আপিলের বিষয়ে শুনানির জন্য চেম্বার জজ আদালতে উপস্থাপন করা হবে বলেও জানান দুদকের এ আইনজীবী।
দুদকের আইনজীবী বলেন, ২০২১ সালের ৯ মার্চ হাইকোর্ট আসামী হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া একটি ধারায় ১০ বছর কারাদন্ডাদেশ বহাল রাখেন এবং অপর একপি ধারায় ৩ বছরের দন্ড বাতিল ঘোষণা করেন।
অপরদিকে, গত ২৫ এপ্রিল হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ের নথি হাতে পান আসামী হাজী সেলিম। নথি পাওয়ার পরপরই হাজী সেলিম ঈদের পর যেকোনো দিন আত্মসমর্পণ করবেন বলে গণমাধ্যমকে জনান তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা।
এরমধ্যে হঠাৎ গণমাধ্যমে খবর আসে হাজী সেলিম ‘গাপনে দেশ ছেড়েছেন’। এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তবে দেশ ছাড়ার খবরে সৃষ্ট আলোচনা-সমালোচনা শেষ না হতেই হুট করে আবার দেশে চলে আসেন হাজী সেলিম। ফলে এ নিয়ে ফের আলোচনার সৃষ্টি হয়।
দুদকের মামলার অভিযোগে উল্লেখ, ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে লালবাগ থানায় মামলা করে দুদক। মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে ১৩ বছরের কারাদন্ড দেন বিচারিক বিশেস জজ আদালত। পাশাপাশি ২০ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়।
২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট তার সাজা বাতিল করেন। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে হাইকোর্টে ওই আপিল পুনরায় শুনানি করতে বলা হয়।
২০২০ সালের ১১ নভেম্বর হাইকোর্ট বিচারিক আদালতে থাকা মামলার যাবতীয় নথি (এলসিআর) তলব করেন। গত ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিলটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। ২০২১ সালের ৯ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতিমো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদন্ড বহাল রাখা হয়। #