দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট লেফটেন্যান্ট মো. ওয়াসিফ আহমেদকে মারধর ও তুলে নিয়ে হত্যার অভিযোগের মামলায় পুরান ঢাকার এমপি হাজী সেলিমের গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে এক দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দিয়েছেন ঢাকা সিএমএম আদালত।
সোমবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমানের আদালত এই আদেশ দেন। এর আগে আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডের নেয়ার জন্য আবেদন জানান। পরে ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে নৌবাহিনীর ওই কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় পুরান ঢাকায় হাজী সেলিমের চকবাজারের বাসায় অভিযান চালিয়েছে র্যাবের একটি দল। সোমবার দুপুর দুইটার পর থেকে চলা এ অভিযাননে রয়েছেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম এবং র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জানা যায়, সোমবার সকালে ধানমন্ডি থানায় নির্যাতিত নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমদ খানের লিখিত অভিযোগে হাজী সেলিমের ছেলে ও ডিএসসিসির ৩০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এরফান সেলিম, তার বডিগার্ড মোহাম্মদ জাহিদ, এ বি সিদ্দিক দিপু এবং গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের হয়। সে মামলায় এর আগে গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
একই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী সেলিমের ছেলে মোহাম্মদ এরফান সেলিমকে বর্তমানে র্যাবের হেফাজতে আছেন ।
ধানমন্ডি থানায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ মোটরসাইকেলযোগে যাচ্ছিলেন। এ সময় এরফানের গাড়িটি তাকে ধাক্কা মারে। এরপর তিনি সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ান এবং নিজের পরিচয় দেন। তখন গাড়ি থেকে আসামিরা একসঙ্গে বলতে থাকেন, ‘তোর নৌবাহিনী/সেনাবাহিনী বের করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ক্যাপ্টেন বের করতেছি। তোকে এখনই মেরে ফেলব’ বলে কিল-ঘুষি মারেন এবং আমার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।
‘তারা আমাকে মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যায়। পরে আমার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডি থানার ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
মামলায় মোট পাঁচটি ফৌজদারি অপরাধের ধারার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অপরাধগুলো হলো- দণ্ডবিধি ১৪৩ অনুযায়ী বেআইনি সমাবেশের সদস্য হয়ে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধমূলকভাবে বল প্রয়োগ করা, ৩৪১ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, ৩৩২ ধারা অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তার কাজে বাধাদানের উদ্দেশে আহত করা, ৩৫৩ ধারা অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তার ওপর বল প্রয়োগ করা এবং ৫০৬ ধারায় প্রাণনাশের হুমকি দেয়া।#