দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
চাঞ্চল্যকর হবিগঞ্জে গৌরব চৌধুরী হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে ফাঁসির ৪ আসামী হাইকোর্টে বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
হাইকোর্টে বেকসুর খালাস পাওয়া ৪ আসামী হলেন’ গৌর মোহন দাস, দিলীপ দাস, সমীর দাস ও তপু দাস। বর্তমানে এই আসামীর হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে কনডেম সেলে আছেন।
২০০১ সালের ১০ নভেম্বর হবিগঞ্জে বিলে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্য দিবালোকে প্রতিপক্ষের দেশীয় অস্রের স্থানীয় নাম ‘ ফিকলটি’ ভিকটিমের বুকে বিদ্ধহয়ে মারা যান। হত্যাকান্ডের টানা ২৩ বছরের মাথায় এসে এ হত্যা মালার আসামীরা খালাস পেলেন।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম ও বিচারপতি কে এমইমরুল কায়েসের সমন্বয়ে গঠিত ডের্থ রেফারেন্স বেঞ্চদীর্ঘ শুনানিকালে আসামী পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবীদের অকাট্য যুক্তি ও বক্তব্য আমলে নিয়ে বিচারিক আদালতের রায়ে ফাঁসির ওই ৪ আসামীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আইন ও বিধি মোতাবেক গৌরব চৌধুরী হত্যা মামলায় ভিকটিমের পক্ষ থেকে তার পরিবার কিংবা রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে।
তবে আপিল না করলে, হাইকোর্টের রায়ের কপি হবিগঞ্জ কারাগারে পৌঁছার পরই যে কোন সময় খালাস প্রাপ্ত এই ৪ আসামী কারাগার থেকে মুক্তি লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ গত নভেম্বর মাসের ২১ তারিখে হাইকোর্টের রায়ের পর এখনো উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন দায়ের করা হয়নি।
আসামী পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন মোলালা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি ৪ আসামীর মধ্যে’ গৌর মোহন দাস, সমীর দাস ও তপু দাসের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন। আর অপর আসামী দিলীপ দাসের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ কে এম ফজলুল হক।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১০ নভেম্বর হবিগঞ্জে বিলে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্য দিবালোকে প্রতিপক্ষের দেশীয় অস্রের স্থানীয় নাম ‘ ফিকলটি’ ভিকটিমের বুকে বিদ্ধহয়ে মারা যান। ওই দিন ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে হবিগঞ্জের আজমেরীগঞ্জ থানায়- গৌরমোহন দাস, দিলীপ দাস, সমীর দাস ও তপু দাস সহ ৩১জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ ২০০২ সালের ২১ এপ্রিল ২৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। হবিগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত ২০০২ সালের ১৯ অক্টোবর আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন। বিচারিক আদালত এ মামলায় ২১ জন সাক্ষির বক্তব্য গ্রহণ করেন । কিন্তু মামলার শুনানিতে কেটে যায় টানা ১৫ বছর।
২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর বিচারিক আদালতের রায়ে ; আসামী -গৌরমোহন দাস, দিলীপ দাস, সমীর দাস ও তপু দাসকেসর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদন্ড (ফাঁসি) এবং ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। এই জরিমানার টাকার আসামীদের স্থাবর- অস্থাবর সম্পদ বিক্রি করে আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালত একই মামলায় অপর আসামী গনেন দাস ও গৌরাজ দাসকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে জরিমান অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ডের রায় দেন। এছাড়া আরো অপর আসামী; লিল মোহন দাস, রামস্বরন দাস ও রামু দাসকে ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে অরো ৩ মাসের সশ্রম কারাদন্ড দেন। আর বাকী আসামীদের বেকুস খালাস দেন।
বিচারিক আদালতের রায়ের নথিপত্র হাইকোর্টে আসার পর পেপার বুক তৈরি করে গত সোমবার (২০ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম ও বিচারপতি কে এমইমরুল কায়েসের সমন্বয়ে গঠিত ডের্থ রেফারেন্স বেঞ্চধীর্ঘ শুনানি গ্রহণ করা হয়।পরদিন ২১ নভেম্বর রায় প্রদান করা হয়। হাইকোর্টের রায়ে টানা ২৩ বছরের মাথায় এসে এ হত্যামালার আসামীরা খালাস পেলেন। # কাশেম