দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেছেন, স্মার্ট সিটি গড়ার লক্ষ্যে ডিএনসিসি ও রবির মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে সমঝোতা স্মারক। এরপর নগরবাসীর কল্যাণে অন্যান্য টেলিকম কোম্পানিগুলোকেও একইভাবে এগিয়ে আসা উচিত।
আজ ৩ জুন (বৃহস্পতিবার) গুলশানের নগর ভবনে ডিএনসিসি ও রবির মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএনসিসির মেয়র মো: আতিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে ডিএনসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম এবং রবি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষর করেন।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ঢাকাকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্যাপক জনসমাগমপূর্ণ স্থানে ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারণ করে প্রাথমিকভাবে ১০০টি স্ট্রিটলাইট পোস্টে স্মার্ট নেটওয়ার্ক অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
তিনি প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন, যানবাহন মনিটরিংয়ের জন্য স্মার্ট সিটি সার্ভিলেন্স, স্মার্ট সিটি ইন্টারনেট অব থিংস, স্মার্ট এনভায়রনমেন্ট, স্মার্ট স্ট্রিটলাইট পোস্ট, স্মার্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শব্দ দূষণ মনিটরিং, স্মার্ট পার্কিং ব্যবস্থাপনাসহ ছাত্র-ছাত্রীদের অবস্থান নির্ণয়ের জন্য স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে রবির প্রতি আহবান জানান।
এছাড়াও অটোমেশনের মাধ্যমে নাগরিকরা যাতে ঘরে বসেই কর দিতে পারে সেক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে মোঃ আতিকুল ইসলাম রবির প্রতি আহবান জানান।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন ঢাকা মহানগরীর প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৪৯ হাজার লোক বসবাস করে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সহজ উপায়ে বিশাল জনগোষ্ঠীর অপরিকল্পিত এই নগরীর নাগরিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যেই ডিএনসিসির পক্ষ থেকে চালু করা হয়েছে “সবার ঢাকা” মোবাইল এপস।
তিনি বলেন “সবার ঢাকা” মোবাইল অ্যাপসটি ব্যবহার করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত যে কোন নাগরিক অতি সহজেই এলাকার রাস্তা, মশক, সড়ক বাতি, আবর্জনা, জলাবদ্ধতা, পাবলিক টয়লেট, নর্দমা ও অবৈধ স্থাপনা এই আটটি বিষয়ে সরাসরি তার মতামত কিংবা অভিযোগ অতি সহজেই ডিএনসিসির কাছে তুলে ধরতে পারেন।
অ্যাপসটির মাধ্যমে এ সংক্রান্ত অভিযোগ দাখিলের পর দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তারা উক্ত সমস্যার সমাধান পাচ্ছেন। এ পর্যন্ত সমাধানের হার প্রায় ৮৬ শতাংশ।
মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, ডিএনসিসির সবাই জবাবদিহিতার মধ্যে রয়েছে। সবাই মিলে সবার ঢাকা গড়তে হলে সকলকে নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ডিএনসিসি বিভিন্ন জায়গায় খাল উদ্ধার ও পরিস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে, জনগণের সহায়তায় তা অব্যাহত থাকবে।
মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, তিনি কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী বলেই পহেলা জুন ঢাকায় দীর্ঘ সময় ধরে রেকর্ড ৮৫ মিলিমিটার পরিমাণ বৃষ্টিপাত হলেও দ্রুততম সময়ের মধ্যেই নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
ডিএনসিসি মেয়র আরও বলেন, এডিস মশা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনীয়া প্রতিরোধে পহেলা জুন থেকে চিরুনী অভিযান পরিচালিত হচ্ছে, আগামী ১২ জুন পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।
রবি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, “নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শহরগুলোকে স্মার্ট সিটিতে রূপান্তরের বিকল্প নেই।
মাহতাব উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, স্মার্ট সিটি গড়ে তোলার উদ্যোগে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পেরে তারা গর্বিত। দেশজুড়ে ডিজিটাল অগ্রগতিতে নেয়া যে কোন তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে তারা প্রস্তুত রয়েছেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, স্থানীয় কাউন্সিলর মোঃ মফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি ।