দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
সম্পদের হিসাব দাখিল না করার অভিযোগের মামলায় স্বাস্থ্য খাতের ঠিকাদার মোতাজজেরুল ইসলাম মিঠুকে অব্যাহতির আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে জারি করা রুলের বিষয়ে শুনানি হয়েছে। শুনানিতে মোতাজজেরুল ইসলাম মিঠুর বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন তলব করেছেন হাইকোর্ট।
সেই সঙ্গে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তার (আইও) অব্যাহতি দিয়ে করা প্রতিবেদন (নথিপত্র) তলব করেছেন আদালত। পাশাপাশি আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে দুদককে এসব নথি জমা দিতে বলা হয়েছে। ওইদিন এটি শুনানির জন্যও রেখেছেন আদালত।
সোমবার (১৩মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বে এ নির্দেশনা দেন। দুদকের সিনিয়র আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।
আদালতে এদিন রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এবিএম সিদ্দিকুর রহমান খান ও চ ল কুমার বিশ্বাস। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
এর আগে সম্পদের হিসাব দাখিল না করার অভিযোগের মামলায় স্বাস্থ্য খাতের ঠিকাদার মোতাজজেরুল ইসলাম মিঠুকে অব্যাহতির আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে দুদকসহ সংশ্লিস্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বে এ রুল জারি করেন।
মিঠুকে অব্যাহতির আদেশ চ্যালেঞ্জ করে ঢাকার বনশ্রীর বাসিন্দা মো. মনিরুজ্জামানের করা এক রিট আবেদনে এ আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আদালতে ওইদিন রিট আবেদনকারী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার এবিএম সিদ্দিকুর রহমান খান ও চ ল কুমার বিশ্বাস। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
২০১২ সালে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত নিজ নামে/বেনামে প্রায় ৫০ কোটি ১৫ লাখ ৫১ হাজার ২৩৪ টাকার হিসাব চেয়ে ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর নোটিশ দেয়। নোটিশে সাতদিনের মধ্যে সম্পদের হিসাব দিতে বলা হয়। তারপর নির্ধারিত সময়ে মিঠু হিসাব বিবরণী দাখিল না করায় তার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১০ মে রাজধানীর বনানী থানায় মামলা করে দুদক। পরে দুদকে সম্পদের হিসাব দাখিল করেন মিঠু। কিন্তু তদন্ত শেষে মিঠুকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে দুদক। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৭ এপ্রিল মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মিঠুকে অব্যাহতির আদেশ দেন। ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে ও অভিযোগের ওপর পুনরায় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর রিট আবেদন করেন মো. মনিরুজ্জামান। তারই ধারাবাহিকতায় রুল জারি করেন উচ্চ আদালত।
রংপুরের গঙ্গাচড়ার মহীপুরে তিস্তা নদীর পারে মিঠুর বাড়ি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি স্বাস্থ্য খাতের ঠিকাদারিতে যুক্ত ছিলেন। ঠিকাদারি করে হয়েছেন অনেক ভূসম্পত্তির মালিক। করোনা মহামারিতে স্বাস্থ্য খাতের দুর্বলতার প্রকট চিত্র বেরিয়ে আসে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) সাবেক এক পরিচালক সরকারকে চিঠি দিয়ে বলেন, স্বাস্থ্য খাতের কেনাকাটায় অপ্রতিরোধ্য দুর্নীতির কারণ ‘মিঠুচক্র’। এর পরই স্বাস্থ্য খাতের নানা অনিয়মের ঘটনা অনুসন্ধানে নামে দুদক। বিষয়টি টের পেয়ে বিদেশে পাড়ি জমান মিঠু। # কাশেম