বিশেষ প্রতিনিধি, দূরবীণ নিউজ :
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক ইতিহাস খ্যাত চার খলিফার অন্যতম, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম পরিকল্পক-রূপকার, বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান ও প্রাক্তন মন্ত্রী শাজাহান সিরাজ এর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আগামী কাল ১৪ জুলাই (বুধবার)। দীর্ঘ দিন ক্যান্সারে ভুগে গত বছরের এই দিনে ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে (সাবেক অ্যাপোলো) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
শাজাহান সিরাজের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শাজাহান সিরাজ ফাউন্ডেশন, শাজাহান সিরাজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের পক্ষ থেকে সকালে ঢাকার বনানী কবরস্থানে মরহুমের কবর জিয়ারত এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। ঢাকা ও টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে কোরানখানি, দুঃস্থ শিশুদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ, কালিহাতীর মসজিদ ও মন্দিরগুলোতে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
এছাড়া শাজাহান সিরাজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের পক্ষ থেকে মরহুমের জীবন ও কর্মের উপর সকাল ১১টায় ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। কালিহাতী শাজাহান সিরাজ কলেজের পক্ষ থেকেও একটি ভার্চুয়াল আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
শাজাহান সিরাজ ১৯৪৩ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে শাজাহান সিরাজ ছাত্র-রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। সেই সময় তিনি টাঙ্গাইলের করটিয়া সা’দত কলেজের ছাত্র ছিলেন। ১৯৬৪-৬৫ এবং ১৯৬৬-৬৭ দুই মেয়াদে তিনি দুইবার করটিয়া সা’দাত কলেজের ছাত্রসংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
একজন সক্রিয় ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালে শাজাহান সিরাজ স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াস এ যোগ দেন। ১৯৭০ এর ৬জুন গভীর রাতে শাজাহান সিরাজ এর ইকবাল হলের কক্ষে নির্মিত হয় ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রথম পতাকা।
১৯৭১ সালের ৩ মার্চ পল্টনময়দানে বিশাল এক ছাত্রজন সভায় বঙ্গবন্ধুর সামনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেছিলেন শাজাহান সিরাজ। পরে যুদ্ধ শুরু হলে তিনি বাংলাদেশ লিবারেশনফোর্স’ (বিএলএফ) বা মুজিববাহিনীর কমান্ডার হিসেবেও দায়িত্বপালন করেন। শাজাহান সিরাজ ১৯৭০-৭২ মেয়াদে অবিভক্ত ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। ১৯৭২ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠন করেন।
তিনি জাতীয় সংসদের টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতী আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।শাজাহান সিরাজ ১৯৯৪ সালে বিএনপিতে যোগ দেন। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকালে তিনি পলিথিন নিষিদ্ধকরণ, টু স্ট্রোকইঞ্জিনবন্ধ, ইটেরভাটার দূষণ রোধের মাধ্যমে পরিবেশ আন্দোলন নতুন প্রাণসঞ্চার করেন। দেশবাসীর কাছে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এই সংগঠকের বিদেহী আত্নার মাগফেরাত কামনা করেছেন তার ঘনিষ্ঠ জনেরা।
এডিজেড/একে/ দূরবীণ নিউজ।