দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
‘বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের (স্থলবন্দরের) দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন’ নৌ-পরিবহন মন্ত্রণলয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীকে হস্তান্তর করেছে দুদক।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুদকের কমিশনার ড. মোঃ মোজাম্মেল হক খান সচিবালয়ে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণলয়ের প্রতিমন্ত্রীকে দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক টিমের তৈরি প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করেছেন।
দুকের প্রতিবেদনে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কাছে কিছু সুপারিশ রেখেছেন। এরমধ্যে রয়েছে ‘ মালামাল হ্যান্ডলিংয়ে গতিশীলতা বৃদ্ধি ও স্বচ্ছতা আনয়নে পর্যায়ক্রমে সকল স্থলবন্দরে অটোমেশন সিস্টেম চালু করা যেতে পারে।
শুল্ক আদায়ে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা যেতে পারে। স্থলবন্দরসমূহে পর্যাপ্ত গুদামজাতকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে’।
পরে দুদকের কমিশনার ড. মোঃ মোজোম্মেল হক খান সাংবাদিকদের বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন ২০১৭ সালে দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর বা প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান আইন, বিধি-বিধানের পদ্ধতিগত ত্রুটি, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাব এবং জনবল সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রতিবেদন তৈরি করে আসছে।
তিনি বলেন, দুর্নীতির ক্ষেত্র ও উৎস চিহ্নিত করণ এবং ওইসব উৎসসমূহ বন্ধে বা প্রতিরোধে বাস্তবতার নিরিখে সুপারিশমালার ভিত্তিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়,অধিদপ্তর বা প্রতিষ্ঠানের জন্য পৃথক পৃথক ২৫ টি প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করেছে দুদক ।
ইতোমধ্যেই ১৫টি মন্ত্রণালয়ে এ জাতীয় রিপোর্ট প্রেরণ করা হয়েছে। আজকের এই রিপোর্টটি ১৬ তম প্রতিবেদন।
তিনি আরো বলেন, এসব রিপোর্ট কোনো বিশাল গবেষণা করে প্রণয়ন করা হয়নি, এটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রণীত প্রতিবেদন। দুদকের কর্মকর্তাদের পেশাগত অভিজ্ঞতা, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনা , গণমাধ্যমের প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এটি প্রণয়ন করা হয়েছে ।
তিনি বলেন, এই প্রতিবেদনে দুর্নীতির সম্ভাব্য ১৪টি উৎস চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তা নিরসণে ২৮টি সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।
দুদক কমিশনার আরো বলেন, প্রতিবেদন দিয়ে কমিশন বসে থাকবে না। বরং তা মনিটরিংও করবে। নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দুদকের এই প্রতিবেদনটি মূল্যবান দলিল হিসেবে সাদরে গ্রহণ করছি। আমরা এ প্রতিবেদন বিস্তারিত পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নিব।
দুদকের প্রতিবেদনের সার সংক্ষেপ:
দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে দুদকের গঠিত ‘বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের (স্থলবন্দরসমূহ) দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক টিমের অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত সুপারিশমালা।
দুর্নীতির উৎস:
অধিকাংশ স্থলবন্দরের বিদ্যমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা অপ্রতুল। অপ্রতুল নিরাপত্তা ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে বন্দর ও কাস্টমসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহযোগিতায় প্রায়শই বিনা শুল্কে আমদানিকৃত মালামাল বের করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।
স্থলবন্দরসমূহের কেনাকাটায় সর্বদা সরকারি ক্রয় আইন ও বিধির যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ নানাভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে থাকেন এবং ক্ষেত্র বিশেষে জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে থাকেন, যার ফলে দুর্নীতি ও আত্মসাতের মতো নানা অপরাধ সংঘটিত হয়।
আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে লোকবল নিয়োগ ও বেতনাদি প্রদানের ক্ষেত্রে যথাযথ তদারকি ও স্বচ্ছতা না থাকায় কর্মে উপস্থিত ও অনুপস্থিত সকল শ্রমিকের নামে বিল উত্তোলন করার অভিযোগ রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে একই স্টেশনে কর্মরত থাকায় বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে বন্দরকেন্দ্রিক সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীগণের এক ধরনের সখ্যতা গড়ে ওঠার অভিযোগ পাওয়া যায়, যার ফলে কর্তৃপক্ষের পক্ষে বন্দরকেন্দ্রিক দুর্নীতিমূলক কর্মকান্ড প্রতিরোধ করা অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে।
মালামাল হ্যান্ডলিংয়ের জন্য ঠিকাদার নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বক্ষেত্রে সরকারি ক্রয় আইন ও বিধিমালার যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় কাজ পাওয়ার অযোগ্য ঠিকাদারগণ দুর্নীতিমূলক কর্মকান্ডের আশ্রয় নিয়ে কার্য সম্পাদনের চেষ্টা করে থাকে।
কাস্টমস কর্মকর্তাদের দ্রুত পণ্য ছাড়করণের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করা মুখ্য উদ্দেশ্য হলেও পণ্য ছাড়করণের ক্ষেত্রে দেশের ট্রেড পলিসিতে বর্ণিত উচ্চ ট্যারিফ-নিম্ম ট্যারিফ, কোটা সিস্টেম, বিভিন্ন প্রণোদনা, ফ্রি-ইমপোর্ট, আমদানি নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকাসহ পণ্য আমদানি-রপ্তানির অন্যান্য ডকুমেন্টস সঠিকভাবে এবং নির্ধারিত সময়ে যথাযথ যাচাই না করে পণ্য ছাড়করণের মাধ্যমে দুর্নীতির পথ প্রশস্ত হয়।
বন্দরসমূহ গেটকিপারের ভূমিকায় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। আর বন্দরের কাস্টমস বিভাগকে বলা হয় গেটকিপার অব দ্য ন্যাশন।
কাস্টমস বিভাগকেই দেশের বাণিজ্য নীতি বাস্তবায়ন, রপ্তানি উন্নয়ন, নিষিদ্ধ এবং ক্ষতিকর পণ্যের ছাড় করতে না দেওয়াসহ পণ্য ছাড়করণে মুখ্য দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সিএন্ডএফ এজেন্টদের মধ্যে পারস্পরিক সমন্বয়ের অভাবেও কোনো কোনো সময় দুর্নীতির উদ্ভব ঘটে।
আমদানিকারক ও কাস্টমস বিভাগসূত্রে প্রায়শই বন্দরের শেড বা গুদাম হতে মালামাল চুরির অভিযোগ পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে বন্দরের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক এ সকল চুরির ঘটনা ঘটিয়ে থাকে মর্মে জনশ্রুতি রয়েছে ।
স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন বড় কাজকে ছোট ছোট গ্রæপে বিভক্ত কোটেশনের মাধ্যমে কার্য সম্পাদনের অভিযোগ রয়েছে। এতে প্রতিযোগিতামূলক দরের পরিবর্তে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে কার্যাদেশ প্রদানের প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে।
স্থলবন্দরসমূহে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ, বদলি ও পদায়ন এবং বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য কর্মকর্তা নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রায়ই আ লিকতা/এলাকাপ্রীতি ও স্বজনপ্রীতির আশ্রয় গ্রহণ করত পছন্দসই ব্যক্তিবর্গকে অনৈতিক সুবিধা প্রদানের অভিযোগ রয়েছে।
এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন বা সিবিএ’র পদাধিকারী কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে কমিশন বাণিজ্য পরিচালনা ও চোরাই সিন্ডিকেটের সাথে আতাঁত করে অযোগ্য ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিয়ে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে।
স্থলবন্দরসমূহের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ঘুষ দাবি, হয়রানী,পেশাদারিত্বের অভাব এবং বন্দরের অভ্যন্তরে নানা অসামাজিক কর্মকান্ড পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন স্থলবন্দরের অফিস ভবন, শেড, ইয়ার্ড ও ওয়েব্রিজ(ডবরমযনৎরফমব) স্কেলে বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ স্থানীয়ভাবে ‘টেন্ডুল’ নামীয় ভাড়া করা বহিরাগত লোকদের দিয়ে দাপ্তরিক কাজ করিয়ে থাকেন যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং এ সকল টেন্ডুলদের মাধ্যমে অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ সিএন্ডএফ এজেন্ট ও আমদানিকারকগণের নিকট হতে ঘুষ গ্রহণ করে থাকেন।
একই ব্যক্তিকে বারংবার বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালনা বোর্ডের খন্ডকালীন সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেয়ার সুযোগ/অভিযোগ রয়েছে। এতে দুর্নীতি, ও স্বজনপ্রীতিসহ নানাবিধ অনিয়ম সংঘটিত হওয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়।
দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদকের সুপারিশমালা:
মালামাল হ্যান্ডলিংয়ে গতিশীলতা বৃদ্ধি ও স্বচ্ছতা আনয়নে পর্যায়ক্রমে সকল স্থলবন্দরে অটোমেশন সিস্টেম চালু করা যেতে পারে।
কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে এক বা একাধিক যৌথ ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা যেতে পারে। সুনির্দিষ্ট কর্ম পরিধির আওতায় এসব টিম নিয়মিত কার্যক্রম মনিটরিং করবে এবং ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে রিপোর্ট করবে।
কাস্টমস গোয়েন্দাসহ অন্যান্য সংস্থার সহায়তায় গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে বিভিন্ন প্রশাসনিক,আইনী এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দুর্নীতি কমিয়ে আনা :
সমন্বয়, মনিটরিং, সুপারভিশন ও নিয়মিত মূল্যায়নের মাধ্যমে বন্দরের সকল কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যেতে পারে।
স্থলবন্দরসমূহে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের কাজে বন্দরের নিজস্ব ইক্যুইপমেন্টরে (ক্রেন,ফর্কলিফ্ট) সংস্থান করা যেতে পারে।
বন্দর মাশুল ও শুল্ক ফাঁকি রোধে বন্দরের ওয়েব্রিজ (ডবরমযনৎরফমব) স্কেলে আমদানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাক ও খালি ট্রাকের ওজন নিশ্চিতকরণ করা যেতে পারে।
সার্বিক নিরাপত্তাসহ অপারেশনাল কার্যক্রম (আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালসহ) মনিটরিং ও তদারকির জন্য পৃথক মনিটরিং সেল গঠন করা যেতে পারে।
বহুল আলোচিত বন্দরের চোরাই চক্রকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সেইসাথে বন্দরসমূহের যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এ চক্রকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে দায়-দায়িত্ব নিরূপণপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
স্থলবন্দরসমূহে কর্মরত কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অবহেলা কিংবা দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেলে তা তাৎক্ষণিকভাবে বিচারিক প্রক্রিয়ার আওতায় আনা জরুরি। এজন্য কাস্টম ইন্টেলিজেন্স সেলের মত আলাদা একটি সার্ভিল্যান্স ইউনিট প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা যেতে পারে।
স্থলবন্দরসমূহের সংযোগকারী সড়ক পথসমূহকে (রেল ও সড়ক উভয়ই) ট্রাফিক যানজটমুক্ত রাখা যেতে পারে, যাতে আমদানি-রপ্তানিকৃত পচনশীল দ্রব্যাদি/মালামাল পথিমধ্যে পচনের শিকার না হয়।
গুদামজাতকরণের ক্ষেত্রে মালামাল হ্যান্ডলিংয়ে পর্যাপ্ত নজরদারির ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ও কর্ম সম্পাদনের জন্য স্থলবন্দরসমূহে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা ও সাবধানতা অবলম্বন করা যেতে পারে।
যাতে কোন যোগ্য ঠিকাদার কার্যাদেশ প্রাপ্তি হতে বি ত না হন,আবার কোন প্রতিষ্ঠান কেবল এলাকা ও স্বজনপ্রীতির ভিত্তিতে বছরের পর বছর কার্যাদেশ প্রাপ্ত হয়ে সিন্ডিকেশনের দোষে দুষ্ট না হন।
বিভিন্ন স্থলবন্দরের উন্নয়নমূলক কাজের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের সিন্ডিকেট ভাঙ্গার স্বার্থে এবং বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উন্নয়নমূলক সকল কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতকল্পে ওপেন টেন্ডার প্রক্রিয়া ব-এচ এর মাধ্যমে সম্পাদন নিশ্চিত করা যেতে পারে।
যে সকল স্থলবন্দরসমূহ হতে শুল্ক কম পরিমাণে আহরিত হচ্ছে সে সকল স্থলবন্দরসমূহ চিহ্নিত করে এর পেছনে যে সকল কারণ রয়েছে তা নির্ধারণপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
শুল্ক আদায়ে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা:
আমদানিকৃত পণ্যের পরীক্ষণের সময় কাস্টমস কর্মকতাদের সাথে বন্দরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার উপস্থিতি নিশ্চিত করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ আইন,২০০১ এর ২১ ধারা অনুযায়ী বিধি প্রণয়ন ও ২২ ধারা অনুযায়ী প্রবিধান তৈরীর নির্দেশনা/সুযোগ থাকলেও অদ্যাবধি কোন বিধি বা প্রবিধান প্রণয়ন করা হয়নি।
যা উক্ত প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির গ্রে-এরিয়া সৃষ্টি করছে এবং দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ এ সুযোগটি গ্রহণ করছে। এজন্য জরুরি ভিত্তিতে এ সকল বিধি বা প্রবিধান প্রণয়ন করা যেতে পারে।
পর্যাপ্ত জনবলের ব্যবস্থা না থাকলে দুর্নীতি রোধ ও পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চলমান রাখা সম্ভব নয় বিধায় বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অনুক‚লে জনবল ও বাজেট দুটোই পর্যাপ্ত ও যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা যেতে পারে।
বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঠিকাদার, আনসার, সিকিউরিটি, সিএন্ডএফ এজেন্টসহ যাদের বিরুদ্ধে উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে,তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ পৃথকভাবে রেজিস্টারভুক্ত করে বিভাগীয় তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উৎসাহিত করার জন্য ন্যাশনাল ইন্টেগ্রিটি স্ট্র্যাটেজি (এনআইএস) এ বর্ণিত সংশ্লিষ্ট স্ট্র্যাটেজির বাস্তবায়ন করা যেতে পারে অর্থাৎ বন্দরের যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ সুনামের সাথে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করে যাচ্ছেন তাদের অবদান মূল্যায়নপূর্বক স্বীকৃতি প্রদান করা যেতে পারে, যাতে তারা ভবিষ্যতেও এ ধরনের জনসেবা প্রদানে উৎসাহিত হন।
একইসাথে নবীন কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এ আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সর্বোত্তমভাবে জনসেবা প্রদানে সচেষ্ট হন।
স্থলবন্দরসমূহে সিএন্ডএফ এজেন্টসমূহের কার্যক্রম নজরদারি জোরদার করা প্রয়োজন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর তাদের প্রভাব হ্রাস করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
জরুরি ভিত্তিতে বিএসবিকে-এর আওতাভুক্ত স্থলবন্দরসমূহের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
স্থলবন্দরসমূহে পর্যাপ্ত গুদামজাতকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা:
গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দরসমূহের কাছাকাছি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো কিংবা বিএসটিআই-এর মত বৈদেশিক বাণিজ্য সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের আ লিক কার্যালয়সমূহ স্থাপন করা যেতে পারে,যেন রপ্তানিকারকগণ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য সরকারি সেবা সুলভে ও সহজে পেতে পারে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে একজন ম্যাজিস্ট্রেট-এর নেতৃত্বে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা যেতে পারে।
স্থলবন্দরসমূহে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য প্রয়োজনীয় আবাসন, যানবাহন ও চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।
বেনাপোলসহ সকল স্থলবন্দরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা এবং বন্দরে নিজস্ব জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।
স্থলবন্দরসমূহে আধুনিকমানের ফায়ার হাইড্রেন্ট সিস্টেম স্থাপন এবং ফায়ার শাখায় দক্ষ জনবল বৃদ্ধি করা যেতে পারে। # কাশেম