দূরবীণ নিউজ ডেস্ক:
সৌদি আরব শর্তসাপেক্ষে ইরানের সংলাপের প্রস্তাবে আলোচনায় রাজি আছে বলে জানিয়েছে। গত ২২ জানুয়ারি বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান এ কথা জানান। তিনি বলেন, সৌদি আরব আলোচনার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু সেটা নির্ভর করছে ইরানের ওপর। খবর রয়র্টাসের ।
মধ্যপ্রাচ্যের দুই পরাশক্তি সৌদি আরব ও ইরান। ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিভেদের কারণে প্রায়ই মুখোমুখি অবস্থানে থাকে দেশ দু’টি। সিরিয়া থেকে শুরু করে ইয়েমেন পর্যন্ত ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
সম্প্রতি ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এতে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর এ দুই দেশের শত্রুতা এখন ভয়ানক রূপ নিয়েছে। কেউ কারো ছায়া পর্যন্ত দেখতে চায় না।
এ ছাড়া ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে তেহরানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছেদ করেছে রিয়াদ। আর এর মধ্যেই ইরানের পক্ষ থেকে এমন আমন্ত্রণ পেল রিয়াদ।
বুধবার উত্তেজনা নিরসনে সৌদি আরবকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানায় ইরান। দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির চিফ অব স্টাফ মাহমুদ ভায়েজি বলেন, ‘ইরান ও তার প্রতিবেশী সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক তেহরান আর ওয়াশিংটনের সম্পর্কের মতো হওয়া উচিত নয়।
নিজেদের সমস্যা সমাধানে রিয়াদ ও তেহরানের যৌথভাবে কাজ করা উচিত।’ সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘যেকোনো আলোচনার আগে ইরানকে আসলে তাদের আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তার বন্ধ করতে হবে। তবেই আমরা আলোচনায় বসব।’
এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, চুক্তির মধ্য থেকে হোক কিংবা চুক্তির বাইরে ইরান কখনোই পরমাণু অস্ত্র বানাতে চাইবে না। ২০১৫ সালে বিশ্বের ছয় দেশের সাথে সই করা পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘনে যুক্তরাষ্ট্রের ভুলের পথে না হাঁটতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি বুধবার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ইরানি প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা অতীতেও পরমাণু অস্ত্র চাইনি, ভবিষ্যতেও সেই আকাক্সক্ষা নেই। চুক্তির শর্তের প্রতি তার দেশের অঙ্গীকারের কথা ব্যক্ত করে রুহানি হুঁশিয়ারি দেন, জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশনের (জেসিপিওএ) যেকোনো লঙ্ঘন মারাত্মক পরিণতি নিয়ে আসবে।
‘আমিও ইউরোপীয় শক্তিগুলোকে বলছি, আমরা জেসিপিওএর মধ্যে রয়েছি। আমরা শর্ত থেকে সরে আসিনি। আমরা এই চুক্তি শেষ করে দিতে চাই না। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তিনি বলেন, যদি আপনারা সরে যান, যদি চুক্তি না রাখেন; তবে সব পরিণতির জন্য আপনারা দায়ী থাকবেন। আমাদের কোনো দায় থাকবে না।
যদিও বুধবার ইরানের প্রভাবশালী কর্মকর্তা মাহমুদ ওয়াজি হুঁশিয়ারি করে বলেন, ইরানের হাতে থাকা বিভিন্ন বিকল্পের মধ্যে একটি হচ্ছে চুক্তি থেকে সরে যাওয়া।
এমন এক সময় এ হুমকি এসেছে, যখন ইরানের চুক্তি লঙ্ঘনের বিষয়টি জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে নিয়ে যাওয়ার আভাস দিয়েছে ইউরোপীয় দেশগুলো। এতে দেশটির বিরুদ্ধে জাতিসঙ্ঘের নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহাল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। #