দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শারমিন আক্তার শিলা নামে এক নারীর সিজারের সন্তান প্রসব, এরতার পেটে গজ রেখে সেলাইয়ের ঘটনায় মৃত্যুর পথযাত্রী ওই রোগীকে ১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে।
রিটে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ও তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া ভিকটিমের পরিবারের খরচ নির্বাহের জন্য তাৎক্ষণিক ১০ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ জুন) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জীবননেছা মুক্তা জনস্বার্থে রিট আবেদনটি দায়ের করেন।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেে এ রিট আবেদনটি দায়ের করা হয়েছে। রিটে বিবাদী করা হয়েছে স্বাস্থ্য সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, বরিশাল মেডিকেলের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের।
রিট কারী গণমাধ্যমকে জানান, গত ১৬ এপ্রিল রাতে ঝালকাঠীর নলছিটি উপজেলার বাসিন্দা জিয়াউল হাসানের স্ত্রী শারমিন আক্তার শিলা সিজারের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু অস্ত্রোপচার এবং সেলাইয়ের পর থেকে রোগীর পেটে ব্যাথা অনুভব করছিলেন। এ জন্য সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয় ওই রোগীকে। তবে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার অল্প দিনের মধ্যে রোগীর পেটে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হয়। ফুলে যায় তার পেট। পরে গত ২১ মে রোগীর পেট ফুটো হয়ে পুজ বের হতে থাকে। তাৎক্ষণিকভাকে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন গত ২ মে পুনরায় অপারেশন করা হয়।
ওই সময় রোগী শারমিনের বাবা আব্দুর রব সিকদার বলেন, সরকারি হাসপাতালে মেয়ে এনে ভর্তি করিয়েছি সুচিকিৎসা পাওয়ার জন্য। কিন্তু সেখানে ভুল চিকিৎসায় আমার মেয়ে মরতে বসেছে। এভাবে হলে মানুষ যাবে কোথায়? আমি অপচিকিৎসার সঙ্গে জড়িত ডাক্তারের বিচার চাই এই।
তিনি বলেন, ডাক্তারার আশ্বস্ত করেছিলেন রোগীর নাড়ি প্যাঁচ পড়েছে। তবে ওষুধ খেলে ঠিক হয়ে যাবে। তারা নতুন করে ওষুধ দেন। কিন্তু রোগী আর সুস্থ হয় না। এক পর্যায়ে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে একটি বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা করালে সেখানের চিকিৎসক জানান পেটে গজ রয়েছে দ্রæত চিকিৎসা নিতে হবে। শেষে হাসপাতালে পুনরায় ভর্তি করালে ২২ মে সকালে অপারেশন করা হয়।
পুনরায় অস্ত্রোপচার করে গজ বের করা শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. নাজিমুল হক তখন বলেন, দীর্ঘদিন গজ থাকায় পেটের ভেতরে পচন ধরে নাড়ি ফুটো হয়েছে। অপারেশন করা হয়েছে। তার সার্বিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে ওই হাসপাতাল পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, সার্জারি বিভাগের প্রধান এবং মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. নাজিমুল হককে প্রধান করে ৩০ মে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে গাইনী বিভাগের প্রধান ডা. খুরশীদ জাহান ও শেবাচিম হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মনিরুজ্জামান শাহীনকে সদস্য করা হয়েছে। এই কমিটি আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেবে। পরবর্তীতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এখনো কমিটির তদন্ত রিপোর্ট প্রখাম করা হয়নি। #