দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
৩৯ বছর বয়সী আরও এক বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সিঙ্গাপুরে । ওই বাংলাদেশি শ্রমিক ছাড়া করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে সিংগাপুর দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এ নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে দুই বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। তাঁরা দুজনেই একই জায়গায় কাজ করতে যেতেন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে ৪৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন।
এদিকে কোয়ারেন্টাইন করা লোকজনের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে আইইডিসিআর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটে রাখা ১১ জন এবং আশাকোনা কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রে উহান ফেরত ৩০১ যাত্রী সুস্থ আছেন।
গত ২১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মোট ১ লাখ ৪ হাজার ৮৮১ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় স্ক্রিনিং করা হয়েছে ১৪ হাজার ২৯৪ জনকে।
সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম বাংলাদেশির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি বলে সেখানকার একাধিক কূটনীতিক সূত্র এই প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছে।
মঙ্গলবার রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অসুস্থ ওই বাংলাদেশিকে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজ বা এনসিআইডির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম বাংলাদেশির মতো দ্বিতীয়জনেরও চীন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নেই। ফেব্রুয়ারির ৬ তারিখ করোনা ভাইরাসের উপসর্গ পাওয়ার পর তিনি পরদিন অর্থাৎ ৭ ফেব্রুয়ারি একটি সাধারণ ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে যান।
১০ ফেব্রুয়ারি তিনি এনসিআইডিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে যান। সেখানে তাঁর করোনা ভাইরাসে সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এ মুহূর্তে তিনি সিঙ্গাপুরের বিশেষায়িত হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে আছেন।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দ্বিতীয় বাংলাদেশি সেখানকার বীরাস্বামী এলাকায় থাকেন এবং সেলেটার অ্যারোস্পেস হাইটসে কাজ করতেন। ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথমজনও কাজ করতেন সেলেটার অ্যারোস্পেস হাইটসে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগের কারণে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কাকি বুকিত এলাকার ১৯ জনকে কোয়ারেন্টাইন করে। তাঁদের মধ্যে ১০ জন বাংলাদেশের নাগরিক।
১৭ চীনা নাবিকের ভিসা বিশেষ ব্যবস্থায়:
বঙ্গোপসাগরের বহির্নোঙরে অবস্থান করা চীনের ১৭ নাবিককে বিশেষ ব্যবস্থায় আগমনী ভিসা দিয়ে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি সরকারের বিশেষ বিবেচনায় রয়েছে।
৪ ফেব্রুয়ারি থেকে চীনের ওই ১৭ নাগরিক বহির্নোঙরে অবস্থান করছেন। চীনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে জাহাজটিকে নোঙর করতে দেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া ওই ১৭ নাবিকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।
এ নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানান, ওই ১৭ নাবিক চীনের কোন এলাকা থেকে কবে যাত্রা করেছেন, সেটি দেখা হবে। এর মধ্যে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনের সময়সীমা পার হয়ে গেলে তাঁদের অন অ্যারাইভাল ভিসা দেওয়া হবে। যদিও করোনাভাইরাসের কারণে এ মুহূর্তে চীনের নাগরিকদের ওই শ্রেণিতে ভিসা দেওয়া স্থগিত রয়েছে।
আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা মঙ্গলবার জানিয়েছেন এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি। সন্দেহভাজন একজন রোগীকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও মূল্যায়ন চলছে।
নিয়মিত ব্রিফিংয়ের অংশ হিসেবে আজ রাজধানীর রোগতত্ত্ব, রোগনির্ণয় ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) মিলনায়তনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। #