দেশের বিভিন্ন এলাকায় বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। তিন জেলায় বজ্রপাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৬ মে) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতে শরীয়তপুরের দুই উপজেলায় দুইজন, সিলেটের কানাইঘাটে একজন ও নেত্রকোণার আটপাড়ায় একজনের মৃত্যু হয়।
শরীয়তপুরের জাজিরা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়।
মৃতরা হলেন- জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের পাইনপাড়া এলাকার আলতু মাঝির মেয়ে আমেনা বেগম (২৬) ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার চরসেনসাস ইউনিয়নের বেড়াচাক্কি গ্রামের নেছার উদ্দিন মাঝির স্ত্রী কুলসুম বেগম (৩৮)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃষ্টির মধ্যে মায়ের খোঁজ করতে গিয়েছিলেন আমেনা বেগম। ফসলি মাঠের মধ্য দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মাকে খুঁজছিলেন তিনি। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতের আঘাতে মারা যান আমেনা বেগম। স্থানীয় জাহাঙ্গীরের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল আমেনা বেগমের। তার দুই বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শরীফুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বজ্রপাতে এক নারীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা এসে প্রতিবেদন দিলে বিস্তারিত বলা যাবে।
অন্যদিকে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার চরসেনসাস ইউনিয়নের বেড়াচাক্কি গ্রামে সয়াবিন ক্ষেতে কাজ করছিলেন নেছার উদ্দিন মাঝি। দুপুরে তার স্ত্রী কুলসুম বেগম স্বামীর জন্য দুপুরের খাবার হিসেবে ভাত নিয়ে গিয়েছিলেন সয়াবিন ক্ষেতে। এ সময় হঠাৎ করেই ঝড়সহ বজ্রপাত শুরু হলে বজ্রপাতের আঘাতে কুলসুম বেগম মারা যান।
চরসেনসাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএম আনোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুপুরে বজ্রপাতের আঘাতে কুলসুম বেগম নামে এক কৃষাণীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আমি মর্মাহত। এই সময়ে সারাদেশে ঝড়-বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হয়েছে। সকলের সতর্ক থাকা উচিত।
সিলেট:
সিলেটের কানাইঘাটে মাঠে গরু চরাতে গিয়ে বজ্রপাতে মাহতাব উদ্দিন মাতাই (৪৫) নামে এক ওমান প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকালে উপজেলার দীঘিরপার ৩নং পূর্ব ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
মাহতাব উদ্দিন মাতাই উপজেলার দর্পনগর পশ্চিম করচটি গ্রামের রফিকুল হকের ছেলে। তিনি ওমান প্রবাসী ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কানাইঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার। তিনি বলেন, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাহতাব উদ্দিন সুরমা নদী তীরবর্তী মাঠে গরু চরাতে যান। এ সময় বজ্রপাত হলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নেত্রকোণা :
নেত্রকোণার আটপাড়ায় বোরো জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মো. দিলওয়ার মিয়া (৩৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার স্বরমুশিয়া হাওরে এ ঘটনা ঘটে। দিলওয়ার মিয়া উপজেলার স্বরমুশিয়া গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে।
আটপাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাওহিদুর রহমান বলেন, সোমবার সকালে বাড়ি থেকে দিলওয়ার নিজের জমির ধান কাটতে হাওরে যান। এ সময় বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম সাজ্জাদুল হাসান বলেন, নিহত কৃষকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।