দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন সোমবার (৩০ নভেম্বর)। রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় এরং জেলা শহরে আয় কর অফিসগুলো প্রচন্ড ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান আবু হেনা মো: রহমাতুল মুনিম বলেছেন সময় বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, নির্ধারিত সময়ে রিটার্ন জমা না দেয়ার যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারলে তার জরিমানা মওকুফ করা হবে। কমিশনারের কাছে যদি কারণ যৌক্তিক মনে না হয়, তবে তাকে জরিমানা দিতে হবে।
তিনি বলেন, রিটার্ন দাখিল বাড়লেও আয়কর কমেছে ১৯৩ কোটি টাকা। এবারের আয়কর দিবসের প্রতিপাদ্য ঠিক হয়েছে- উন্নত সেবার মাধ্যমে আয়করের আওতা বৃদ্ধি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সম্মেলন কক্ষে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান এই কথাগুলো বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, এনবিআর সদস্য মো: আলমগীর হোসেন, অপূর্ব কান্তি দাশ, হাফিজ মোর্শেদ।
আবু হেনা মো: রহমাতুল মুনিম বলেন, চেষ্টা সত্ত্বেও আয়করের ক্ষেত্র আমরা বাড়াতে পারিনি। আমাদের আয়কর বিভাগের প্রচেষ্টার পাশাপাশি জনগণের ভেতরেও সচেতনতা প্রয়োজন।
২৬ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন দাখিলের পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ওই দিন পর্যন্ত হিসাব ধরলে রিটার্ন জমার পরিমাণ বেড়েছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৩ হাজার ১৯৯টি। তবে একই সময়ে আয়কর কমেছে ১৯৩ কোটি টাকা।
গত বছর একই সময়ে ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৬২৬টি আয়কর রিটার্ন জমা পড়েছিল। আর কর বাবদ সরকারের খাতায় জমা পড়েছিল দুই হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। সেখানে এবার ওই তারিখ পর্যন্ত ১৩ লাখ ২০ হাজার ৮২৫ জন তাদের রিটার্ন দাখিল করেছেন। তাতে আয়কর হিসেবে সরকার পেয়েছে দুই হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা। বর্তমানে দেশে ৪৬ লাখ নাগরিকের কর শনাক্তকারী নম্বর (টিআইএন) রয়েছে। তাদের অর্ধেকও নিয়মিত রিটার্ন জমা দেন না।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ২০০৮ সাল থেকে জাতীয় আয়কর দিবস পালন করা হচ্ছে, ২০১০ সাল থেকে আয়কর মেলা করা হচ্ছে। এবার করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে কেন্দ্রীয়ভাবে আয়কর মেলা হয়নি। তবে আমরা প্রতিটি জোনে এবং সার্কেলে মেলার আবহ তৈরি করতে চেয়েছি। কর অঞ্চলে মেলার চেয়ে কম সুযোগ-সুবিধা থাকলেও এসব জোন ও সার্কেলে রিটার্ন দিতে করদাতাদের তেমন কোনো অভিযোগ ছিল না বলে জানান আবু হেনা মো: রহমাতুল মুনিম।
তিনি বলেন, আমরা এবার ব্যাংক সার্ভিসটা দিতে পারিনি। তবে সেটার জন্য করদাতাদের কোনো অভিযোগ ছিল না। এবার সরকার ই-চালান (ইলেকট্রনিক চালান) চালু করেছে। যার মাধ্যমে ব্যাংকেও করাদাতাদের যেতে হবে না। মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেই সবকিছু করতে পারবেন।
তিনি বলেন, জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সচেতনতার বিষয়টি মাথায় রেখে আয়কর দিবসের আয়োজন করা হয়েছে। সাজসজ্জা ও অন্যান্য বিষয় এবার পরিহার করা হয়েছে। প্রতি বছর যে র্যালি হয়, সেটাও হবে না। তবে ছোট পরিসরে আলোচনা অনুষ্ঠান হবে এবং বাকি আনুষ্ঠানিকতা অনলাইনের মাধ্যমে হবে বলে জানান তিনি।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের করসেবা যত স্বচ্ছ ও আধুনিক হবে, করদাতাদের কর দেয়া তত সহজ হবে। সেই সাথে করের আওতা বৃদ্ধি পাবে, ট্যাক্স নেট বৃদ্ধি পাবে।#