দূরবীণ নিউজ নিউজ:
পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে, খালে বা লেকে দেওয়া বন্ধ করতে আজ থেকে অভিযান শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। অভিযানের অংশ হিসেবে গুলশান-২ এ ডিএনসিসির মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম নিজে উপস্থিত থেকে সারফেস ড্রেন থেকে দুটি বাড়ির পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে গুলশান ২ এর ১০৪ ও ১১২ নম্বর রোডের দুটি বাড়ির সামনে ড্রেনে কলাগাছ দিয়ে সারফেস ড্রেন থেকে পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এসময় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মেয়র বলেন, ‘পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে, খালে বা লেকে দেওয়া বন্ধ করতে আজ থেকে আমরা এই অভিযান শুরু করেছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। ইতোমধ্যে আমরা এই তালিকা প্রণয়ন করে ফেলেছি। সারফেস ড্রেনে ও খালে পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ পেলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। কোনভানেই ব্ল্যাক ওয়াটার সিটি কর্পোরেশনের ড্রেনে, খালে, লেকে ঢুকতে পারবে না।’
মেয়র আরও বলেন, ‘কোনভাবেই পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে দেয়া যাবে না। এই বিষয়ে আমরা অনেক আগে থেকেই বার বার সচেতন করে আসছি। গণবিজ্ঞপ্তিও দিয়েছি। সোসাইটির প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা করে আমরা জানিয়েছি যেন পয়ঃবর্জ্যের লাইন সারফেস ড্রেনে না দেয়া হয়। বার বার বলার পরেও কেউ কর্ণপাত করছে না।’
এসময় তিনি বলেন, ‘আমরা গুলশান, বনানী, বাড়িধারা ও নিকেতন এলাকায় সরেজমিনে সার্ভে করেছি। সার্ভেতে পেয়েছি প্রায় ৮৫ শতাংশ বাড়িতেই পয়ঃবর্জ্যের লাইন সারফেস ড্রেনে দিয়ে রেখেছে। এমনকি অনেকে চোরাই পথে সারফেস ড্রেনে পয়ঃবর্জ্যের লাইন দিয়েছে। অভিজাত এলাকায়ই এতো সমস্যা এটি এলার্মিং। এতে খাল ও লেকের পানি দূষিত হচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। আমি কলাগাছ দিয়ে ড্রেনের সংযোগ বন্ধ করে দিচ্ছি। ফলে ময়লা ব্যাক ফ্লো করবে। এখন বাড়ির মালিকরা সচেতন হতে বাধ্য। শহরকে বাঁচাতে বাধ্য হয়ে এসব সংযোগ বন্ধ করেছি। ওয়াসা পানির দ্বিগুণ সুয়ারেজ বিল নিলেও কাঙ্খিত সেবা দিতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গুলশান, বনানী, বাড়িধারা ও নিকেতন এলাকায় ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা, বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ড. মুজিবুর রহমান, ঢাকা ওয়াসার প্রতিনিধি, ITN BUET এর প্রতিনিধি, হাউজিং সোসাইটির প্রতিনিধি এবং UNICEF এর প্রতিনিধির সমন্বয়ে Sanitation Compliance Committee জরিপ কাজটির তত্ত্বাবধান করেন। চারটি এলাকার ৩ হাজার ৮৩০টি বাড়িতে জরিপ করা হয়। এই বাড়িগুলোর মধ্যে ৩ হাজার ২৬৫টি বাড়ির পয়ঃবর্জ্য সরাসরি সারফেস ড্রেন ও লেকে পরেছে। মাত্র ৪১টি বাড়িতে পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ সঠিকভাবে দেয়া আছে এবং ৫২৪টি বাড়িতে আংশিকভাবে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে।’
পয়ঃবর্জ্যের কারণে লেকগুলোর পানি দূষিত হয়ে গেছে উল্লেখ করে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘লেকে মাছ চাষ করা যাচ্ছে না। মশা নিধনে ন্যাচারাল সলিউশন সম্ভব হচ্ছে না মাছ চাষ করতে না পারার কারণে। গুলশান সোসাইটির নব নির্বাচিত কমিটি আমার কাছে এসেছে, তারা সময় চেয়েছিল ৩ মাস। আমি তাদের ৬ মাস সময় দিয়েছি। কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা ড্রেন ও খাল আর দূষিত হতে দিব না।’
উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরে নিজ বাড়িতে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসিয়েছেন বলে জানান ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।
অভিযানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহঃ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম এবং স্থানীয় কাউন্সিলরবৃন্দ। # কাশেম